বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২৪ ০০:০০ টা

বদলে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়

মর্যাদা ফেরানোরও পদক্ষেপ নিন

বদলে যাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। এ মুহূর্তে এরচেয়ে সুখবর আর কিছু নেই। জুলাই বিপ্লবে স্বৈরাচার পতনের পর পদত্যাগের হিড়িক পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। উপাচার্যসহ কর্মকর্তাদের পদত্যাগে অচল হয়ে পড়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম। প্রশ্ন হচ্ছে- দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের সম্মানীত শীর্ষ পদধারী যদি নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষাবিদ হন, তার পদত্যাগের প্রশ্ন উঠবে কেন? দলীয় লেজুড়বৃত্তির যোগ্যতায় তারা পদ বাগিয়েছিলেন এবং সে অর্জন রক্ষায় তটস্থ থাকতেন। তাদের হাতে পড়ে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও মর্যাদা হারিয়েছে। বিশ্বের সেরা সহস্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে দেশের একটারও জায়গা হয় না। এর জন্য দায়ী নিয়োগ-দুর্বৃত্তায়ন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থাও একই। দলবাজির অভিন্ন অনাচার প্রতিষ্ঠানগুলোর মর্যাদার মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে। পর্যায়ক্রমে বেরিয়ে পড়বে অর্থনৈতিক অনিয়ম, দুর্নীতির পাহাড়-সমান খতিয়ান। সে জন্যই পদত্যাগ করে পালাতে হচ্ছে উপাচার্যসহ পার্ষদদের। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনিক পদে নতুন নিয়োগ শুরু হয়েছে। উপাচার্য পদে আসছেন নতুন নতুন মুখ। ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণ অভ্যুত্থানে অর্জিত সরকারকে এক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। বর্জ্যরে বদলে বর্জ্য প্রতিস্থাপন করলে- সুফল মিলবে না। মতলববাজরা এখন পদ-পদবি বাগাতে ‘দেশে বিপ্লব হয়ে গেছে’ স্লোগান তুলে জনে জনে মোসাহেবিতে ব্যস্ত। এদের ‘হইতে সাবধান’। জনগণের টাকায় পরিচালিত দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সৎ, আদর্শবাদী, গবেষক, নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষাবিদদের নিযুক্ত করতে হবে। যাদের আদর্শিক অনুপ্রেরণায় শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি হবে। শিক্ষকদের সম্মান এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। হারানো মর্যাদা ফিরে পাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এই চর্চাটা এখনই শুরু করতে হবে এবং এ ধারা যেন ভবিষ্যতেও বিঘ্নিত না হয়, তারও পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করে যেতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের চলতি কর্মযজ্ঞে চিরুনি অভিযান চালাতে হবে শিক্ষাঙ্গনেও। আগাছা উপড়ে ফেলতে হবে। শুধু রং বদল বা মুখ বদল নয়, শিক্ষককে শিক্ষকই হতে হবে, দলবাজ-চাটুকর নয়। শিক্ষাঙ্গনে এমন নতুন নেতৃত্বই চায় জাতি।

সর্বশেষ খবর