সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা

সৃষ্টি হোক প্রত্যাশিত কর্মপরিবেশ

জনগণের সরকার হবে জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য- এই হচ্ছে গণতন্ত্রের মৌলিক পরিচয়। এ বৈশিষ্ট্য যদি রক্ষিত হয়, সে গণতন্ত্র কখনো বিনষ্ট হবে না। উনবিংশ শতাব্দীতে এ অমর মন্তব্য করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন। এর পাশাপাশি বহুল উচ্চারিত আরেকটি শব্দবন্ধ হচ্ছে- সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। আইন, নির্বাহী ও বিচার বিভাগের পরই এর অলিখিত কিন্তু সর্বজনগ্রাহ্য মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান। রাষ্ট্রের অন্য তিন স্তম্ভকে ন্যায় ও সত্যের পথ দেখাতে গণমাধ্যমের দায়িত্ব অশেষ। সমাজের ভালোমন্দের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরাই এর কাজ। কাজটি কঠিন- কারণ সত্য প্রায়শই অপ্রিয়। ফলে নানা দমনপীড়ন, বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে কাজ করতে হয় গণমাধ্যমকর্মীদের। রোষানলে পড়তে হয় অপরাধ চক্রসহ অন্যায় সুবিধাভোগী ও দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি, প্রশাসনের। প্রভাবশালী মহলের চাপ, হামলা-মামলা, রাজনৈতিক হুমকি-ধমকিতে স্বাধীন সাংবাদিকতা বাধাগ্রস্ত হওয়া চিরকালের বাস্তবতা। যুগ যুগ ধরে এসব রক্তচক্ষুবিদ্ধ হয়েই বয়ে চলেছে সংবাদমাধ্যমের অদম্য কর্মউদযাপন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। রাষ্ট্রে সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা মুখ্য। গণমাধ্যম যেন দৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে, নির্বিঘ্নে, নিরাপদে কাজ করতে পারে- তার পরিবেশ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। এসব বিষয়ই আলোচিত হয়েছে সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভায়। অন্তর্বর্তী সরকারের দুজন উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীও তাতে উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী জুলাই বিপ্লবে সংবাদপত্রের ভূমিকা প্রশংসিত হয়। গুরুত্ব পায় সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধ রচনায় সংবাদমাধ্যমের অবদান। বর্তমান রাষ্ট্র সংস্কার প্রক্রিয়ায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা যে কতটা জরুরি তা স্পষ্ট হয় অংশীজনদের আলোচনায়। বলা হয়, সংবাদমাধ্যমকে মুক্তমনে নিরাপদে কাজ করতে দিতে হবে। সংবাদপত্র ও সংবাদকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক সব মিথ্যা মামলা বাতিল করে সংস্কার ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণমাধ্যমকে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত করতে হবে। তাৎপর্যপূর্ণ এসব আলোচনা ও উপলব্ধি সংবাদমাধ্যমে প্রত্যাশিত কর্মপরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

সর্বশেষ খবর