শিরোনাম
বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

সম্পত্তির হিসাব

দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে

সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিল বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এতকাল বিধান ছিল শুধু কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। কিন্তু বিগত সরকারের উন্নয়নের জোয়ারে শুধু কর্মকর্তাদের বৃহৎ অংশ শুধু নয়, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, পিয়ন-ড্রাইভারদেরও কারো কারোর শত শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতনভাতা সুযোগ-সুবিধা জোগায় যে দেশবাসী তাদের সেবা দেওয়ার বদলে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরানো প্রতিটি সরকারি দপ্তরের ঐতিহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে মানুষ তাদের সেরা পেতে উৎকোচ দিতে বাধ্য হতো। বলা হয়ে থাকে সরকারি কর্মচারী হওয়া মানেই আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়া। সপ্তাহে দুই দিন ছুটি, ডিউটি টাইমের অর্ধেক অথবা তার বেশি সময় অনুপস্থিত থাকার মহা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা নামের সৌভাগ্যবানরা। এতকাল কর্মকর্তাদের সম্পত্তির হিসাব দেওয়ার পদ্ধতি থাকলেও তা ছিল দেশবাসীর সঙ্গে মহাতামাশা। তার সুস্পষ্ট প্রমাণ বেনজীর, আসাদুজ্জামান, মতিউর গয়রহদের সম্পদের পাহাড় সম্পর্কিত তথ্যের একাংশ ফাঁস হওয়ার ঘটনা। স্বীকার করতেই হবে, ঘুষ-দুর্নীতির অপকর্মে জড়িত বরাহসন্তানদের সংখ্যা ক্ষুদ্র নয়, বিশাল। পৌনে ১৬ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসানের পর সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতিপ্রবণ অংশের মনে ভয় ঢুকলেও তারা বিশেষ একটি প্রাণীর মতো বিষ্ঠা খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করেছেন তা ভাবার অবকাশ নেই। সরকারি কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিলের পদ্ধতি প্রণয়নে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সচিব থেকে পিয়ন পর্যন্ত সবার সম্পদের হিসাব দেওয়া বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি অর্জিত সম্পদের দাম যাতে শায়েস্তা খানের আমলের হিসাবে ধরা না হয় তা দেখতে হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্ত্রী, স্বামী সন্তান ভাইদের নামে বেনামিতে সম্পদ গড়ার ঐতিহ্যেও আঘাত হানতে হবে। দুর্নীতি দমনে বিভিন্ন পেশার সৎ মানুষদের নিয়ে বিশেষ তদন্ত কমিশন গড়ার সম্ভাব্যতাও বিবেচনা করা যেতে পারে। যারা ঘুষ দুর্নীতির কোনো অভিযোগ উঠলেও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে যেতে পারেন।

সর্বশেষ খবর