শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

অর্থনৈতিক সংস্কার

দুর্নীতি পাচার বন্ধ হোক

করোনা মহামারিতে বড় ধাক্কা খায় বৈশ্বিক অর্থনীতি। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের প্রভাব। টাকার মানে ধস। হু হু করে বাড়তে থাকে নিত্যপণ্যের দাম। সাধারণ মানুষের ত্রাহিমধুসূদন অবস্থা। এমন নাজুক পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছিল নতুন অর্থবছর। কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে গেছে আর্থিক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি, নিয়ন্ত্রণহীন লুটপাট, দখলের দস্যুতা, লাখ লাখ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ ও পাচার। জাতীয় অর্থনীতির মেরুদন্ড ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তচক্রের দুর্বিনীত দৌরাত্ম্য। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অর্জিত দ্বিতীয় স্বাধীনতা নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি করায় সংস্কারের কাজ চলছে সব ক্ষেত্রে। অর্থনৈতিক খাত সংস্কারেও নেওয়া হয়েছে সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপ। তার পূর্ণ রূপরেখা তৈরি হচ্ছে। অর্থনীতি পুনর্গঠনে করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেবে শ্বেতপত্র প্রকাশ কমিটি। বিগত সময়ে দেশের আর্থিক খাতে কী পরিমাণ লুটপাট হয়েছে, কত টাকা পাচার হয়েছে, কারা করেছে ও সহায়তা দিয়েছে এবং কারা এসব প্রতিরোধে নিষ্ক্রিয় থেকেছেন বা ব্যর্থ হয়েছেন- সব বিশ্লেষণ ও চিহ্নিত করা হবে। একইভাবে ব্যাংক খাতে দখল, দস্যুতা, লুটপাটে অর্থ লোপাটের হোতাদের সঙ্গে সাহায্যকারীদেরও ধরা হবে। বাদ যাবেন না অবসরে যাওয়া কর্মকর্তারাও। রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, ব্যাংকার- অনিয়মে জড়িত সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। যারা অসৎ পন্থায় অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন, কালো টাকার মালিক হয়েছেন, তা জব্দ করে জনকল্যাণে লাগাতে হবে। আর্থিক খাতে চুরি-পাচার, দখল-দুর্বৃত্তায়নে এমন শাস্তি নির্ধারণ এবং প্রতিরোধ নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে- যেন ভবিষ্যতে কেউ আর এ পথে হাঁটার সাহস না পায়; সে সুযোগও না থাকে। তার জন্য লাগসই কর্মকৌশল নির্ধারণ করে যথাযথ পদক্ষেপ প্রয়োজন। এ কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। ব্যাংকিং কমিশন গঠিত হচ্ছে। অতীতে রিজার্ভ চুরির বিষয়টি সামনে রেখে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঢেলে সাজানো হবে। পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা প্রক্রিয়াধীন। কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে পাচারকারী ও লুটেরাসহ আর্থিক খাতের সব দুর্বৃত্তকে। এসব পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। আশা করি, জাতীয় অর্থনীতি সহসাই সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি ফিরে পাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর