মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

কলকারখানায় অস্থিরতা

নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের ধরুন

স্বাধীনতার সময় বাংলাদেশ ছিল পৃথিবীর সবচেয়ে দরিদ্র দেশ। কালের বিবর্তনে এ দেশের মানুষ সে হীনমন্যতা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা পাড়ের পরিশ্রমী মানুষ দেশকে এগিয়ে নিতে পেরেছে অগ্রগতির পথে। বিশেষ করে নব্বইয়ের গণ অভ্যুত্থানের পর দেশে শিল্পায়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ সৃষ্টি হয় বাজার অর্থনীতির পথে চলার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মধ্য দিয়ে। তারপর ব্যাপকভাবে বিকাশ ঘটেছে পোশাকশিল্পের, গড়ে উঠেছে বিভিন্ন কলকারখানা। দেশের কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় উৎস হয়ে উঠেছে বেসরকারি খাত। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে রাখছে ভূমিকা। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে মহাবিপ্লব সফল হওয়ায় দেশের মানুষ স্বৈরতন্ত্রের জাঁতাকল থেকে মুক্ত হয়েছে। তবে পতিত শাসক চক্রের এজেন্টরা দেশবাসীর সে মহান বিজয়কে নস্যাৎ করতে পোশাকশিল্পসহ সব কলকারখানায় অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে এমন অভিযোগও প্রবল। মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এমসিসিআইর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শ্রমিক অসন্তোষসহ নানা কারণে গত এক মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে শতাধিক শিল্পকারখানায় ভাঙচুর ও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ২ শতাধিক কারখানায় উৎপাদন ও বিপণন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর নারায়ণগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নানা দাবিদাওয়া নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে অশুভ মহল। তাতে শতাধিক শিল্পকারখানায় ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কারখানার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ  বিভিন্ন মহলের সহায়তা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। শিল্প কলকারখানার মালিকদের প্রত্যাশা, সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় আনবে। দেশের গার্মেন্ট খাতে উত্তেজনা সৃষ্টির হোতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে শান্তি-শৃঙ্খলার পাশাপাশি অর্থনীতি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেবে। শিল্প ক্ষেত্রে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের পরিচয় যাই হোক তাদের দেখতে হবে জাতীয় শত্রু হিসেবে।

সর্বশেষ খবর