বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

সংঘাত নয় সমঝোতা

কলকারখানার সুরক্ষা নিশ্চিত করুন

কথায় কথায় কলকারখানা ভাঙচুর জাতীয় উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সরকারের জন্যও তা মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। মিছিল-সমাবেশ নিঃসন্দেহে গণতান্ত্রিক অধিকার। অন্তর্বর্তী সরকার এ অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যে কারণে নাগরিকদের সভা-সমাবেশ ও দাবি জানানোর অধিকারকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়নি কোনোভাবেই। কিন্তু সংবিধানসম্মত অধিকার প্রয়োগের নামে যারা কথায় কথায় রাজপথ অবরোধ করছেন, কলকারখানা ভাঙচুর করছেন, তারা ছাত্র-জনতার অর্জিত মহান বিজয়কে নস্যাৎ করার পুতুল নাচের নর্তক-নর্তকী হিসেবে ব্যবহার হচ্ছেন কি না প্রশ্ন উঠেছে। রাজধানী ঢাকা যানজটের নগরী হিসেবে অভিহিত হচ্ছে অন্তত চার দশক ধরে। কথায় কথায় সড়ক অবরোধ এবং বিক্ষোভ মিছিলের কারণে যানজটে অচলাবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে প্রায়ই নগরজুড়ে। ক্ষুণ্ণ হচ্ছে লাখ লাখ মানুষের নির্বিঘ্নে পথ চলার অধিকার। ৫ আগস্টের পর দাবি-দাওয়ার জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে পোশাকশিল্পসহ সব ধরনের কলকারখানায়। স্বীকার করতেই হবে মূল্যস্ফীতির জাঁতাকলে অতিষ্ঠ মানুষ চায় তাদের জীবন-জীবিকায় কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসুক। এ বিষয়ে কর্মজীবীদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠান মালিকদের দরকষাকষি এবং আলাপ-আলোচনা প্রাসঙ্গিক এবং যৌক্তিক হলেও কোনোভাবেই শিল্পোৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন পরিস্থিতি কাম্য হতে পারে না। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির যে কোনো পাঁয়তারাও অগ্রহণযোগ্য। আশার কথা শিল্প ক্ষেত্রের অস্থিরতা দূরীকরণে সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভাঙচুর নৈরাজ্য বন্ধে নেওয়া হয়েছে প্রহরা ব্যবস্থা। পাশাপাশি অসন্তোষের ইতি ঘটাতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে বসতে মালিক পক্ষকে উৎসাহিত করা হয়েছে। গত সোমবার ৬ ঘণ্টার বৈঠকে আশুলিয়া এলাকার সব কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমরা আশা করব গণতন্ত্র বিনির্মাণের পথে জাতিকে এগিয়ে নিতে সর্বক্ষেত্রের অব্যবস্থার অবসান ঘটা দরকার। এজন্য যে সংস্কার চলছে তা আরও জোরদার করতে হবে। জাতিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে তা এগিয়ে নিতে সর্বক্ষেত্রে ঘটাতে হবে শুদ্ধতার প্রতিফলন। শ্রমিক-মালিক এবং দেশের স্বার্থেই কলকারখানার সুরক্ষা জরুরি।

সর্বশেষ খবর