বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

বন্ড সুবিধার কাপড়

খোলাবাজারে পাচার বন্ধ হোক

অপরাধ প্রবণতা কালোছায়া ফেলেছে প্রতিটি ক্ষেত্রে। অনিয়ম অসততাই যেন হয়ে উঠেছে ধনী হওয়ার সহজ পথ। বিভিন্ন ক্ষেত্রের যেসব তথ্য-উপাত্ত প্রতিদিন প্রকাশ পাচ্ছে, তা যথেষ্ট উদ্বেগের। তৈরি পোশাকশিল্প দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানিমুখী শিল্প খাত। লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানে যা অবদান রাখছে। জাতীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান  এ শিল্পের। কিন্তু পোশাকশিল্প মালিক নামধারী কিছু অসাধু ব্যক্তির কারসাজিতে এ শিল্পের মর্যাদা কালিমালিপ্ত হচ্ছে। তারা শুল্কমুক্ত বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধার কাপড় কালোবাজারে বিক্রি করছেন। চাহিদার চেয়ে বেশি কাপড় আমদানি করে সরকারকে মোটা টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত করছেন। অন্যদিকে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা কাপড়, সুতা ইত্যাদি কালোবাজারে বিক্রি করায় এ খাতের দেশীয় কলকারখানা মার খাচ্ছে। এদের কারণে বস্ত্র খাতে প্রায় পাঁচ হাজার শিল্প-কারখানা পড়ছে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে। বলা হচ্ছে, এর অনেকগুলোই লাইফ সাপোর্টে রয়েছে। প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার বিনিয়োগ পড়েছে হুমকিতে। বন্ড সুবিধায় আমদানি করা শুল্কমুক্ত কাপড় কালোবাজারে বিক্রি করায় দেশের বস্ত্র কারখানায় উৎপাদিত কাপড় অবিক্রীত পড়ে থাকছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। অথচ অভিযোগ, বন্ড সুবিধার অপব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না শুল্ক বিভাগ। পোশাকশিল্পে বছরে প্রায় লাখ কোটি টাকা পাচারের তথ্য উদঘাটিত হলেও তার অনুসন্ধান ও তদন্তে গতি নেই। চোরাই কাপড়ের অবৈধ অর্জনের ভাগ পৌঁছায় বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার অনেক কর্তার পকেটে। এই যদি অবস্থা হয় এবং চলতে থাকে, দেশের বস্ত্রশিল্পের জন্য তা হবে অশনিসংকেত। বিলুপ্তির দিকে ঠেলে দেবে এ শিল্পকে। তাতে ব্যাপকসংখ্যক জনশক্তি কর্মচ্যুত হবেন, জাতীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিও বাধাগ্রস্ত হবে।  চোরদের দৌরাত্ম্যে গৃহস্থ পালানোর অবস্থা হবে- যা কোনো সভ্য সমাজে চলতে পারে না। সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে আশা করি।

সর্বশেষ খবর