বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

পাচারকৃত অর্থ

দেশে ফেরত আনাই বড় চ্যালেঞ্জ

দুর্নীতি ও ব্যাংক ঋণ লোপাট করে বিদেশে অর্থ পাচার বাংলাদেশের নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে স্বাধীনতার পর থেকে। অসৎ পথে অর্জিত অর্থের একাংশ দেশে বিলাস বৈভবে ব্যয় করেছে দুর্নীতির বরপুত্ররা। যাদের মধ্যে আছেন অসৎ রাজনীতিক, অসৎ আমলা এবং অসৎ ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বছরখানেক আগে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়। বিরোধী দলকে নির্বাচনি প্রতারণার ফাঁদে ফেলতে সরকার তাদের অনুমতি সাপেক্ষে সভা-সমাবেশ মিছিল করার সুযোগ দেয়। সে সব কর্মসূচিতে জনতার ঢল নামায় নিজেদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েন সীমাহীন লুটপাট আর দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নোংড়া নর্দমার কীটরা। তারা ঢালাওভাবে তাদের লুণ্ঠিত অর্থ বিদেশে পাচার শুরু করে। আনুষঙ্গিক হিসেবে ওই সময় এক থেকে দেড় লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে বিদেশে। পরিণতিতে দেশের অর্থনীতি খাদের কিনারে পতিত হয়। ডলারের দাম এক বছরের মধ্যে ৮৫ টাকা থেকে ১২০ টাকায় দাঁড়ায়। বাংলাদেশের রিজার্ভ ক্রমান্বয়ে কমতে থাকে। বাংলাদেশ থেকে গত চার দশকে বিদেশে যে অর্থ পাচার হয়েছে তা দেশে বিনিয়োগ করা হলে অন্তত ১০ লাখ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হতো। বিপর্যয়ে পড়া দেশের অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে সরকার বিভিন্ন সময়ে দেশ থেকে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার উদ্যোগ নিচ্ছে। অতীতের প্রতিটি সরকার একই ধরনের প্রতিশ্রুতি দিলেও সদিচ্ছার অভাবে শুধু অশ্ব ডিম্ব প্রসবই নিশ্চিত হয়েছে। পাচারকারীদের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের দূরতম সম্পর্ক না থাকায় দেশবাসীর বিশ্বাস এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলে সব না হোক সন্তোষজনক পরিমাণের পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে। চীন ইন্দোনেশিয়া এ ব্যাপারে সাফল্য দেখিয়েছে। যে সব দেশে অর্থ পাচার হয়েছে তাদের পক্ষ থেকেও সরকারকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আমাদের বিশ্বাস এ ক্ষেত্রে সব ধরনের উদ্যোগ অব্যবহৃত রাখা হলে সাফল্য অবশ্যই আসবে। সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিত্বদের নিয়ে গড়া অন্তর্বর্তী সরকার এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর