শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

সংস্কার রূপরেখা

কালো অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি রোধ করবে

দায়িত্ব গ্রহণের পাঁচ সপ্তাহর মাথায় সংস্কারের রূপরেখা ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে তিনি অর্থনীতির চাকা সচল রাখার ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে। সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন নির্বাচন ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রশাসন, বিচার প্রশাসনের সংস্কার অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পর, পরবর্তীতে নির্বাচন ব্যবস্থার মাধ্যমে যাতে কোনো রাজনৈতিক দল সংখ্যাগরিষ্ঠতার মাধ্যমে একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দিতে না পারে তা নিশ্চিত করা হবে। এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সব ক্ষমতা কুক্ষিগত না থাকে- সে লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংবিধান এবং নির্বাচন কমিশনেও আনা হবে সংস্কার। সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ছয়টি কমিশন করা হয়েছে, যার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে। এই কমিশনগুলো এক অক্টোবর থেকে পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন। কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্রসমাজ, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শ সভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার একটি ধারণাও দেওয়া হবে। জাতির উদ্দেশে প্রধান উপদেষ্টা সংস্কারের যে রূপরেখা ঘোষণা করেছেন তা প্রাসঙ্গিক এবং তাৎপর্যের দাবিদার। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের উদ্দেশ্যই ছিল রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে যে অনিয়ম ও অন্যায় থাবা বিস্তার করেছে তার দূরীকরণ। সংস্কারের মাধ্যমে দুর্নীতি অনিয়মের উচ্ছেদ ঘটলে তা ১৮ কোটি মানুষের প্রত্যাশা পূরণে অবদান রাখবে। ১৯৭১ সালে লাখ লাখ মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গ করেছিল একটি গণতান্ত্রিক এবং বৈষম্যমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে। স্বাধীনতার পর গত ৫৩ বছরে গণতন্ত্র কখনোই নিজস্ব চেহারায় আবির্ভূত হয়নি। ফ্যাসিবাদের ভ্রƒকুটির কাছে জিম্মি হয়েছিল রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান। সংস্কারের মাধ্যমে জাতি সেই কালো অধ্যায়ের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে পারবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর