শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

সফল সফর

গণতন্ত্র ও উন্নয়নে সমর্থন আদায়

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনকে কেন্দ্র করে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে দুই দেশের সম্পর্ক ঝালাই করা শুধু নয়, সুনির্দিষ্ট সহযোগিতার আশ্বাসও আদায় করেছেন। বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ উন্নয়ন সহযোগী চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নতুন অধ্যায় শুরুর বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধানকে। জাতিসংঘের মহাসচিব, আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ বিশ্বনেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় রোহিঙ্গা সংকট নিরসন এবং পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনার ব্যাপারেও বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ঐতিহ্যগতভাবে বিশ্বনেতারা অনির্বাচিত কোনো সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের গাঁটছড়া বাঁধতে আগ্রহী নন। কিন্তু বাংলাদেশে জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে যে সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তারা দায়িত্ব হাতে নিয়েছেন দেশের ১৮ কোটি মানুষের সমর্থন নিয়ে। ভাষা, ধর্ম, রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে সব মানুষ তাদের পেছনে একট্টা হয়েছেন গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ বৈষম্যহীন এক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে। ফলে নির্বাচিত সরকারের চেয়েও বিশ্বপরিসরে মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে নোবেল লোরিয়েট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্যই ছিল গণতন্ত্রের জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ একটি বৈষম্যমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠা। পাকিস্তানি দুঃশাসনে দীর্ঘ ২৩ বছরের বৈষম্য ও গণতন্ত্রহীনতার শিকার হয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। কিন্তু স্বাধীনতার পর দেশের দায়িত্ব গ্রহণকারী নেতৃত্ব মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যাশাকে পাশ কাটিয়ে একদলীয় শাসনের আত্মঘাতী পথ বেছে নিয়ে যে ভুল করেন, তার খেসারত দিতে হয়েছে জাতিকে প্রায় ৫ দশক ধরে। জুলাই বিপ্লব দেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদায় প্রতিষ্ঠার সুযোগ এনে দিয়েছে। এ বিষয়ে দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে গণতন্ত্রকামীদের রাজনৈতিক ঐকমত্য। জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সফর ও বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বৈঠক গণতন্ত্রের পাশাপাশি বাংলাদেশের জন্য টেকসই উন্নয়নের পথ খুলে দেবে এমনটিই আশা করা যায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর