রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিশ্ববাসীর অনুপ্রেরণা

জাতিসংঘ শুনল জুলাই বিপ্লবের কথা

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে বাংলাদেশের জুলাই ছাত্র বিপ্লবের বীরগাথা তুলে ধরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলায় দেওয়া ভাষণে তিনি জুলাই অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করেছেন নিপুণভাবে। বলেছেন, এ অভ্যুত্থান আগামীতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষকে মুক্তি ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে অনুপ্রেরণা জোগাবে। বাংলাদেশের ছাত্ররা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে যেমন সফল অভ্যুত্থান ঘটিয়েছেন, তেমন মানুষের মধ্যে নতুন স্বপ্নের বীজও বপন করেছেন। ছাত্রদের নেতৃত্বে জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে যুগান্তকারী পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মহান সংসদে তিনি উপস্থিত হতে পেরেছেন। বাংলাদেশে গণমানুষের বিশেষ করে তরুণ সমাজের অফুরান শক্তি বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর আমূল রূপান্তরের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। ছাত্র ও যুব সমাজের আন্দোলন প্রথম দিকে ছিল মূলত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। পর্যায়ক্রমে তা গণ আন্দোলনে রূপ নেয়। এরপর সারা পৃথিবী অবাক বিস্ময়ে দেখেছে কীভাবে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ একনায়কতন্ত্র, নিপীড়ন, বৈষম্য, অবিচার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাজপথে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দৃঢ়ভাবে রুখে দাঁড়িয়েছে। বন্দুকের গুলি উপেক্ষা করে বুক পেতে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের তরুণরা। অবৈধ রাষ্ট্রক্ষমতার বিরুদ্ধে প্রবলভাবে সোচ্চার হয়েছিলেন তরুণীরা। স্কুলপডুয়া কিশোর-কিশোরীরা নিঃশঙ্কচিত্তে উৎসর্গ করেছে তাদের জীবন। শত শত মানুষ চিরতরে হারিয়েছে দৃষ্টিশক্তি। আমাদের মায়েরা, দিনমজুরসহ অগণিত মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেমেছেন রাজপথে। ৮০০ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে স্বৈরাচারী শক্তির হাতে। বাংলাদেশের সরকারপ্রধান স্পষ্টভাবে  বলেছেন, উদারনীতি, বহুত্ববাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর মানুষের গভীর বিশ্বাস থেকেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়। একাত্তরের সেই মূল্যবোধ ধারণ করে নতুন প্রজন্ম ফ্যাসিবাদ রুখতে এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশের নতুন যাত্রায় বিশ্ববাসীকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সরকারপ্রধান। গণতন্ত্র অভিযাত্রায় প্রধান উপদেষ্টার এ আহ্বান খুবই সময়োপযোগী ও প্রাসঙ্গিক।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর