রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ০০:০০ টা

আবার শঙ্কা বন্যার

ত্রাণ ও পুনর্বাসনে চাই সমন্বিত প্রচেষ্টা

অসময়ে পানি বাড়ছে তিস্তায়। শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বন্যার। বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র জানিয়েছে, কদিন ধরে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। পানি দ্রুতই আরও বাড়তে পারে। প্লাবিত হতে পারে রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও নীলফামারীর নিম্ন ও চরাঞ্চল। উজানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলেও মুষলধারায় বৃষ্টি হচ্ছে। তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও আত্রাইয়ে দ্রুত পানি বাড়ছে। গতকাল সকাল পর্যন্ত এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও তিস্তার পানি ছিল বিপৎসীমার কাছাকাছি। তিস্তা অববাহিকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। আবহাওয়াবিদদের মতে, বর্ষা মৌসুমের এখন শেষ পর্যায়। সময়টা সাধারণত বৃষ্টিপ্রবণ। তারই জেরে নদনদীগুলোতে বইছে অতিরিক্ত পানির প্রবাহ। অসময়ে বন্যার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, চট্টগ্রাম বিভাগেও বৃষ্টি বৃদ্ধির প্রভাবে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে। পদ্মা ও মহানন্দার পানি বেড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেশকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ডুবে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত বিস্তীর্ণ ফসলি জমির ফসল। প্রায় ১ হাজার পরিবার পানিবন্দি। তিস্তার ডালিয়া ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে বন্যার পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে উত্তরের জেলাগুলোতে। রাজশাহীর চর এলাকা থেকে শিশু-নারী-বৃদ্ধ এবং ধান-চালের সঙ্গে গবাদিপশু নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পদ্মার ভাঙনে ঘরবাড়ি হারানো অনেক অসহায় মানুষ ভাসছে পরিবার-পরিজন নিয়ে নৌকায়। তারা ডাঙা খুঁজছেন আশ্রয়ের। প্রকৃতির এরকম খেয়ালি বিধ্বংসী আচরণ যেন দেশের মানুষের নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টি-বন্যা-ঝড়ঝঞ্ঝা নিয়ন্ত্রণ সাধ্যাতীত হলেও আগাম সতর্কতা জনগণের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমাতে পারে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও দপ্তরগুলোর দায়িত্বশীলতা প্রত্যাশিত। সেই সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন, সামাজিক সংগঠন এবং সমাজের সামর্থ্যবানদের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনে ভূমিকা রাখা জরুরি। দুঃসময়ে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় বানভাসি, পানিবন্দি ও ভাঙনে সর্বস্ব হারানো মানুষের দুর্দশা লাঘব হোক, তারা ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি ও সহায় ফিরে পাক- সেটাই কামনা।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর