লেবাননের শিয়াপন্থি রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহও নিহত হলেন। সংগঠনটি জানায়, হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহ সংগঠনের মহান ও অমর শহীদদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, লেবাননের রাজধানী বৈরুতে চালানো বিমান হামলায় তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিষ্ঠুর উল্লাসে তারা আরও বলেছে, হাসান নাসরুল্লাহ আর বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ পরিচালনা করতে পারবেন না। কী বর্বর মানসিকতার সদম্ভ প্রকাশ! ১৯৮২ সালে প্রতিষ্ঠিত হিজবুল্লাহ শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে ইসলামের প্রধান দুই শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে। আর ‘মুসলিমদের ভূমি দখলকারী’ আখ্যায়িত করে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল ধ্বংসের ডাক দেয়। নাসরুল্লাহর নেতৃত্বে হিজবুল্লাহ ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধাদের পাশাপাশি ইরাক ও ইয়েমেনের মিলিশিয়াদের প্রশিক্ষণগত সহায়তা দিয়েছে। প্রয়োজনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেটের সমৃদ্ধ ভান্ডার রয়েছে হিজবুল্লাহর। গত অক্টোবরে হিজবুল্লাহ-ইসরায়েল উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের রকেট হামলার জের ধরে গাজায় নৃশংস তান্ডব শুরু করে দেশটি। এর জবাবে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রায়ই ইসরায়েল এবং দখলকৃত গোলান মালভূমি এলাকায় রকেট হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। হাসান নাসরুল্লাহকে জীবন দিতে হলো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবং সত্য-ন্যায়ের পক্ষে ভূমিকা রাখার জন্য। এর আগে ইরানের রাজধানী তেহরানে গুপ্তহত্যার শিকার হন হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া। প্রতিকারহীনভাবে বেড়েই চলেছে মৃত্যুর মিছিল। হিজবুল্লাহপ্রধান নিহত হওয়ায় অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে গোটা মধ্যপ্রাচ্য। আরও সংঘাতের দিকে যেতে পারে তেলসমৃদ্ধ ওই এলাকা। নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি অধিবেশন ডাকার আহ্বান জানিয়েছে ইরান। বিশ্বসমাজ জোরালো জনমত ও প্রতিরোধ গড়ে তুলে ইসরায়েলি নৃশংসতায় লাগাম টানতে পারে। সভ্য বিশ্বে এরকম হত্যা, হামলা ও ধ্বংসযজ্ঞের মচ্ছব কিছুতেই চলতে পারে না।