মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা

বিদ্যুতে হরিলুট

অন্যায় চুক্তি বাতিল করুন

এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই তত্ত্বকে নিজেদের নীতিমালা হিসেবে গ্রহণ করেছিল বিদায়ী ফ্যাসিবাদী সরকার। এ সরকারের আমলে দেশের সব প্রান্তে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কৃতিত্ব দাবি করলেও এ খাতে যে লুটপাট চলেছে তা ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। এ লুটপাটে শাসকগোষ্ঠীর পকেট ভর্তি করতে দফায় দফায় বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। ২০০৯ সালের পর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ১৫ বছরে তারা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে ১৮৮ শতাংশ। এর আগে ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে চারবার। এ সময় গ্রাহক পর্যায়ে সর্বনিম্ন ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১৬ শতাংশ। আওয়ামী সরকারের গত দেড় দশকে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১৪ বার। এর ফলে দেশের উৎপাদন খাতের সব পণ্যেরও দাম বেড়েছে। মানুষের জীবনমানের ওপর প্রভাব ফেলেছে এই মূল্যবৃদ্ধি। বিশেষজ্ঞদের মতে, অযৌক্তিকভাবে ইউনিটপ্রতি বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে হরিলুট করা হয়েছে। গত দেড় দশকে বিদ্যুৎ খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেলেও বিদ্যুতের দাম বেড়েছে অভাবনীয় হারে। এর কারণ চাহিদার তুলনায় উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রতিযোগিতাহীন বাজার এবং অনিয়ম-দুর্নীতি। বিদু্যুৎ খাতে ঋণ ও দায়দেনা মেটানোর নামে দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে তা চাপানো হয়েছে ভোক্তার ওপর। বিদ্যুতের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রতিটি শিল্প পণ্যের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। মূল্যস্ফীতিতে তা মদত জুগিয়েছে। বিদায়ী কর্তৃত্ববাদী সরকার দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ধিকৃত সরকারের পরিণতি হয়েছে নিত্যপণ্যের মূল্য মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাওয়ায়। ভারতের বিতর্কিত আদানি শিল্পগোষ্ঠীর কাছ থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনা হয়েছে। বিদেশ থেকে দেশে কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে প্রতি ইউনিট অন্তত ২ টাকা কম খরচ হতো। নিশ্চিত হতো হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান। দেশের স্বার্থেই ঝাড়খন্ডের আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি বাতিলের দাবি জনদাবিতে পরিণত হয়েছে। বিদ্যুৎ খাতের লুটপাটের সব ফাঁকফোকর বন্ধ করাও জরুরি।

সর্বশেষ খবর