বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা

শ্রমিক অসন্তোষ

দাবি মানার পরও অশুভ উসকানি

তৈরি পোশাক দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য। দেশের অর্থনীতির প্রাণভোমরা হিসেবে বিবেচিত হয় এ খাতে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা। ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রত্যক্ষভাবে জড়িত পোশাক শিল্পের সঙ্গে। এ শিল্পের সঙ্গে নির্ভরশীল মানুষের সংখ্যা সব মিলিয়ে দুই কোটি। ৫ আগস্ট কর্তৃত্ববাদী শাসনের পতনের পর থেকে অস্থির হয়ে উঠছে পোশাক শিল্প। শ্রমিকরা ন্যায্য বেতন ও ভাতার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সহিংসতার উদ্ভবও ঘটে শ্রমিক অসন্তোষকে কেন্দ্র করে। বলা হচ্ছিল পতিত স্বৈরাচারের এজেন্টরা দেশের অর্থনীতির ওপর আঘাত হানতে শ্রমিক অসন্তোষে মদত জোগাচ্ছে। সরকার সেই অভিযোগকে মাথায় রেখেই শ্রমিকদের অসন্তোষের কারণ উদঘাটনের প্রতি গুরুত্ব দেয় এবং তাদের সিংহভাগ দাবি পূরণও করা হয়। তারপরও পোশাক শিল্পে নিত্যনতুন দাবি ও নানা অজুহাতে অসন্তোষ সৃষ্টিতে মনে হচ্ছে কোথাও পুতুল নাচ মঞ্চস্থ হচ্ছে। কলকাঠি নাড়ছে শ্রমিক স্বার্থের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ কোনো মহল নয়, বরং দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে এমন অপশক্তি। তাদের কারসাজিতে সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের ভাষ্য, সোমবার সকাল থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে তৈরি পোশাক শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করছিলেন। দুপুরের দিকে মন্ডল নিটওয়্যারের শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ত্রিপক্ষীয় বৈঠক চলছিল। সমঝোতা না হওয়ায় শ্রমিকরা কারখানার বাইরে অবস্থান নেন। অন্য কারখানার শ্রমিকরাও সেখানে জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে পার্শ্ববর্তী দুটি কারখানার শ্রমিকরা পুলিশের ওপর হামলা শুরু করলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জসহ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করা হয়। তাতেই মারা যায় একজন শ্রমিক। আশুলিয়ায় বেতন ও হাজিরা বোনাসসহ ১৮ দফা দাবি পূরণের যৌথ ঘোষণার পরও যারা অশান্তিতে উসকানি দিচ্ছে তারা শ্রমিকদের কেউ নয়। বরং দেশের পোশাক শিল্প যাতে সংকটের মুখে পড়ে ও লাখ লাখ মানুষ বেকারত্বের শিকার হয় এটি তাদের উদ্দেশ্য কি না খতিয়ে দেখতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে শ্রমিক মালিক সরকার সব পক্ষকে সচেতন থাকতে হবে।

সর্বশেষ খবর