বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা

উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য

যুদ্ধংদেহি নয় সংযম জরুরি

হামলা, প্রতি-হামলা, আগ্রাসনে মহাউত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইরান। ইরান অন্তত ১৮০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইসরায়েলে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হামলার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেছেন, ইরানের নাগরিক স্বার্থরক্ষার পক্ষে এটি অবধারিত প্রতিক্রিয়া। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বড় ভুল করে ফেলেছে ইরান। এ জন্য তাদের চড়ামূল্য দিতে হবে। বুধবার রাতেই পাল্টা হামলার হুমকি দেয় তেল আবিব। ইরানের শীর্ষস্থানীয় সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতিশোধ নিলে ইসরায়েলজুড়ে সব স্থাপনায় ব্যাপক হামলা করা হবে। পেন্টাগনের দাবি, মঙ্গলবার রাতে ইরান যখন ইসরায়েলি ভূখন্ডে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছিল, অন্তত এক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করতে সক্রিয় সহায়তা অব্যাহত রাখবে ওয়াশিংটন। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত নিরাপত্তা পরিষদকে লেখা চিঠিতে অভিযোগ করেছেন, তার দেশকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে ইরান। তেহরান বলেছে, ফিলিস্তিনের গাজা ও লেবাননে হামলার প্রতিশোধ এবং হামাস, হিজবুল্লাহ ও আইআরজিসি নেতাদের গুপ্তহত্যার জবাবে তারা ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে লেবাননে ইসরায়েলি হামলায় মঙ্গলবার ৫৫ এবং সোমবার ৯৫ জন নিহত হয়েছেন। দুই সপ্তাহ ধরে চলা হামলায় সহস্রাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন; বাস্তুচ্যুত ১০ লক্ষাধিক। সব মিলে একটা সর্বাত্মক যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে; যা বিশ্বশান্তির জন্য মারাত্মক বিপর্যয়ের শঙ্কা সৃষ্টি করছে। কূটনীতি ও সমর বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে ক্ষমতায় মত্ত ইসরায়েল যেন অনন্ত যুদ্ধের দরজা খুলে দিচ্ছে। অথচ যুদ্ধ নয়, শান্তি এবং জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার- এটাই হওয়া উচিত সভ্যতাগর্বী বিশ্বমানবের অলঙ্ঘনীয় দর্শন। এ বোধোদয় হওয়া চাই বিশ-বিবেকের পর্যায়ে পৌঁছানো শীর্ষ নেতাদের। উসকানি নয়, যুদ্ধংদেহি সব পক্ষকে সংযত ও নিরস্ত্র করতে তারা জোরালো ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করে পৃথিবীর শান্তিকামী বিবেকবান প্রতিটি মানুষ।

 

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর