শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা

সাইবার আইন

বাতিল হোক কালাকানুন

সাইবার নিরাপত্তা আইন দেশের ইতিহাসের অন্যতম সমালোচিত কালাকানুন বলে বিবেচিত হয়েছে পতিত সরকারের আমলে। মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে স্তব্ধ করতে ঢালাওভাবে ব্যবহার করা হয়েছে এই আইন। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা ও সাইবার অপরাধ রোধের নামে আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছিল। কিন্তু সে সাধুপনার আড়ালে লুকিয়ে ছিল কর্তৃত্ববাদী সরকারের কর্তৃত্বকে আরও শক্ত করার অসৎ মনোভাব। সাইবার নিরাপত্তা আইন মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে নিষ্ঠুরভাবে দমনে কাজে লাগানো হয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের নিষ্ঠুর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে এই কালাকানুন। সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের দমনেও তা যথেচ্ছ ভূমিকা রেখেছে। বিগত সরকারের আমলেই বুদ্ধিবৃত্তির সঙ্গে জড়িত সব মহলের ক্ষোভের লক্ষ্যস্থলে এটি পরিণত হয়। দেশের বাইরেও গণতন্ত্রপ্রেমী সচেতন মানুষ এই কালো আইন বাতিলের জন্য সোচ্চার থেকেছেন। দেশে যারা এই বর্বর কালাকানুনের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তাদের অন্যতম অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩’ সংশোধনবিষয়ক মতবিনিময় সভায় বিশিষ্টজনরা হয়রানি ও নিপীড়নমূলক আইনটি বাতিলের পক্ষে মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, দেশের প্রচলিত অপরাধের সঙ্গে বিদ্যমান আইনের সংজ্ঞা, বিচার পদ্ধতিসহ নানা বিষয়ে ত্রুটি রয়েছে। বিরোধী দলকে দমনের জন্য তৈরি করা এই কালাকানুনটি বাতিলের জন্য বিশিষ্টজনরা মতামত রেখেছেন মতবিনিময় সভায়। আইন উপদেষ্টা সবাইকে আশ্বস্ত করেন সব কালাকানুন বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তা আইন পুরোপুরিভাবে নাকি আপত্তিকর দিকগুলো বাতিল করা হবে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা হবে। এ বিষয়ে নতুন আইন হলে তার উদ্দেশ্য থাকবে নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া। বিশেষত নারী ও শিশুদের স্পর্শকাতরতা বিবেচনায় আনা। সাইবার অপরাধ আইন অপরাধীদের দমন নয় বরং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের অপনায়কদের সুরক্ষায় প্রণীত হয়েছিল। যেটি বাতিলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর