সোমবার, ৭ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা

হালাকু খানের হত্যাযজ্ঞ

আরওয়া আজাদ

মোঙ্গল শাসক হালাকু খানের বাগদাদ আক্রমণ ও ধ্বংসযজ্ঞ ইতিহাসের একটি বেদনাদায়ক ঘটনা। এ হামলায় বাগদাদের ১৬ লাখ মানুষ গণহত্যার শিকার হয়। পারস্যের গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়ের ক্ষমতা বিলোপ করার পর ১২৫৬ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি মাসে হালাকু খান বাগদাদ অবরোধ করেন। এ সময় বাগদাদের খলিফা ছিলেন আল মুস্তাসিম বিল্লাহ। গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়কে দমনের ব্যাপারে হালাকু খান খলিফার সহায়তা চান। অপরিণামদর্শী খলিফা হালাকু খানকে সাহায্য প্রদানে কোনো আগ্রহ দেখাননি। এতে হালাকু খান খলিফার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়ে বাগদাদ আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। গুপ্তঘাতক সম্প্রদায়কে দমনের পর হালাকু খান বাগদাদের দিকে অগ্রসর হন। অভিযানের শুরুতেই তিনি বাগদাদের বহিঃপ্রাচীর ধ্বংস করে খলিফাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। খলিফা এতে সায় না দিলে বাগদাদ নগরী অবরুদ্ধ হয়। মোঙ্গল বাহিনী পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে প্রবল বেগে আক্রমণ চালায়। মোঙ্গল বাহিনীর চীনা, তাতার এবং মধ্য এশিয়ান সৈন্যরা একের পর এক অগ্নিগোলক নিক্ষেপ করে খলিফা আল মুস্তাসিম বিল্লাহর মনে ভয় ঢোকাতে সমর্থ হন। বাগদাদের পতন অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়। খলিফার ক্ষুদ্র সেনাবাহিনী হালাকু খানের বিশাল বাহিনীর বিরুদ্ধে বাগদাদ রক্ষা করতে ব্যর্থ হলে খলিফা পরিবার-পরিজন ও অনুচরবর্গসহ জীবন রক্ষার জন্য প্রাণভিক্ষা চান এবং আত্মসমর্পণের প্রস্তাব দেন। মোঙ্গলরা খলিফার আবেদনে সাড়া দেয় এবং নগরবাসীকে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। খলিফাসহ নগরবাসী আত্মসমর্পণ করলে হালাকু খান বাগদাদ নগরীর অভ্যন্তরে প্রবেশ করে খলিফা ও খলিফার আত্মীয়-পরিজনসহ নগরীর অসংখ্য নর-নারীকে হত্যা করে। বাগদাদের অগণিত নারী-পুরুষের করুণ আর্তনাদ উপেক্ষা করে মোঙ্গল বাহিনী বীভৎস হত্যালীলা চালায়। জীবননাশের মধ্য দিয়েই মোঙ্গল বাহিনীর তান্ডব শেষ হয়নি, তাদের হাতে যুগ যুগ লালিত মুসলিম সাহিত্য-শিল্প ও সংস্কৃতিরও বিলুপ্ত ঘটে।        

 

সর্বশেষ খবর