মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৪ ০০:০০ টা

মূল্যস্ফীতির দেড় দশক

ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা জরুরি

আওয়ামী লীগের ১৫ বছরে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ভয়াবহভাবে। ৬৭ টাকার ডলার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ১২০ টাকায় পৌঁছায়। যা দেশের ব্যবসাবাণিজ্যের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনে। দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে যাওয়ায় টাকার বিপরীতে ডলারের দাম দ্রুত বাড়তে থাকে। রাজনীতিক ও আমলারা দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের বড় অংশ বিদেশে পাচার করায় দেশের অর্থনীতি ফোকলা হয়ে যায়। ব্যাংক ঋণ নিয়ে লোপাট করা এবং সেই অর্থ বিদেশে পাচারের ফলে অর্থনীতিতে দেখা দেয় ভয়াবহ সংকট। দুঃশাসনের ১৫ বছরে ব্যাংকিং খাতে লুটপাটের মচ্ছব চলেছে সরকারের নীতিনির্ধারকদের সহযোগিতায়। মুদ্রাবাজারে ভয়াবহ দুর্নীতির কারণে ডজনের বেশি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার উপক্রম হয়। কয়েকটি ব্যাংক মার্জার করতেও বাধ্য হয়। শেষ দিকে এ ব্যাংকগুলোতে নগদ টাকার কোনো সরবরাহ ছিল না। ফলে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয় সব ধরনের লেনদেন। পুঁজিবাজার থেকেও হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে সরকার-সংশ্লিষ্টরা। যার পুরোটা বিদেশে পাচার হয়ে গেছে বলে সন্দেহ করা হয়। ডলার সংকটে এলসি বন্ধ করতে হয়েছে। ফলে দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের ব্যবসা কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খেতে হয়েছে পতিত সরকারের শেষ দিকে। ২০০৮ সালের অক্টোবরে দেশে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ওই বছরের অক্টোবরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পায়। এই বৃদ্ধির সূচক আর থামেনি। প্রতি বছর খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে। বেড়েছে ব্যাংক লুটপাট। ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে ঋণ নিয়ে ব্যাংক দেউলিয়া করে দেওয়া হয়েছে। লুটপাটের হোতাদের হাতে ব্যাংক ব্যবস্থা ছেড়ে দেওয়ায় ভয়াবহ বিপর্যয় অনিবার্য হয়ে ওঠে। আধুনিক যুগে ব্যবসাবাণিজ্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। ডলারের দাম আকাশচুম্বী হওয়ার পাশাপাশি সুদহার বেড়ে যাওয়ায় তার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ব্যবসাবাণিজ্যে। গত কয়েক বছর ধরে শিল্প খাতে বিনিয়োগ বাড়ার বদলে কমেছে। এ অবস্থা থেকে ফিরে দাঁড়াতে ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। ব্যবসাবান্ধব নীতি প্রণয়নও জরুরি।

সর্বশেষ খবর