সাম্প্রতিক অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহ বিভাগের তিনটি জেলা ক্ষতির মুখে পড়েছে। ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনায় প্লাবিত হয়েছে অনেক গ্রাম। বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা-পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কংস ও নেতাই নদীর পানি বেড়েছে। অন্তত ৩০টি গ্রাম নতুন করে পানিতে সয়লাব। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন দুই লাখের বেশি মানুষ। তাদের দুঃখ-দুর্ভোগের শেষ নেই। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ তৎপরতা চললেও তা পর্যাপ্ত নয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে খাদ্য সংকট চলছে। শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণের ব্যবস্থা করা হলেও সুপেয় পানির সংকটে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে বানভাসি মানুষ। মঙ্গলবার পর্যন্ত নয়জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। অন্যদিকে ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডুবে নেত্রকোনায় এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা। এ বছর একের পর এক বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে ভাসল দেশের বিভিন্ন এলাকা। লাখ লাখ মানুষের জীবনে নেমে এলো অবর্ণনীয় দুর্দশা। শস্য-সম্পদের ক্ষতি হলো বিস্তর। রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ উদ্বেগজনক। প্রকৃতির এসব বৈরী আচরণ ঠেকানো সাধ্যাতীত হলেও আগাম সতর্কতা এবং ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে মানুষের প্রাণহানি এবং দুর্দশা লাঘব করা সম্ভব। পরিবার-পরিজন ও গবাদিপশু নিয়ে পানিবন্দি মহাবিপন্ন মানুষদের পাশে জরুরি ত্রাণ ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে দাঁড়াতে হবে স্থানীয় প্রশাসনসহ সামাজিক সংগঠন ও সামর্থ্যবান মহলকে। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় বানভাসি মানুষের তাৎক্ষণিক সহায়তা ছাড়াও ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং বন্যা-উত্তর পুনর্বাসনে ভূমিকা রাখা এখন অধিক জরুরি।