রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

জেএসসি পরীক্ষা প্রস্তুতি : বাংলা

বাংলা প্রথমপত্র

জেএসসি পরীক্ষা প্রস্তুতি : বাংলা

ফারুক আহম্মদ, সহকারী শিক্ষক, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল

 

তৈলচিত্রের ভূত : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়

সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

১। সাতক্ষীরার ভোমরা এলাকা থেকে গুজব ওঠে যে, একটি ১০-১২ বছরের মেয়ে স্বপ্নে ওষুধ পেয়েছে। যা খেলে সব রোগ ভালো হয়ে যায়। এই সংবাদ চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে দলে দলে লোক ছুটে আসে মেয়েটির কাছে। এক সময় তাকে পুঁজি করে আরও অনেকে এই ব্যবসা শুরু করে। ফলে প্রতারণার শিকার হয় গ্রামের সাধারণ মানুষ।

ক.  নগেনদের লাইব্রেরিতে কয়টি ছবি টাঙানো ছিল?

খ.  মামার প্রতি শ্রদ্ধাভক্তিতে নগেনের মন ভরে উঠল কেন?

গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের সাদৃশ্য ব্যাখ্যা কর।

ঘ. প্রকৃত শিক্ষার অভাবে এখনো গ্রামের সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রতারণার শিকার হচ্ছে- উদ্দীপক এবং ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পের অলোকে বিশ্লেষণ কর।

ক. উত্তর : নগেনদের লাইব্রেরিতে তিনটি ছবি টাঙানো ছিল।

খ. উত্তর : মামা নগেনকে নিজের ছেলেদের মতোই ভালোবাসতেন জেনে পরলোকগত মামার প্রতি শ্রদ্ধাভক্তিতে নগেনের মন ভরে উঠল।

নগেন মামা বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করত। তাই মারা যাওয়ার আগে নগেনের মামা নগেনকেও নিজের ছেলেদের সমান টাকাকড়ি দিয়ে গেছেন। মামার এরকম উদারতা সে কোনোদিন কল্পনাও করতে পারেনি। তাই নগেন মনে মনে মামাকে ঘৃণা করত। কিন্তু যখন জানতে পারল যে, মামা তাকে নিজের ছেলেদের মতোই ভালোবাসতেন তখন পরলোকগত মামার প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধাভক্তিতে নগেনের মন ভরে উঠল।

গ. উত্তর : উদ্দীপকের সঙ্গে ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে মানুষের অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারের সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।

প্রত্যেক ঘটনার পেছনে কোনো না কোনো কারণ থাকে। আর মানুষ যখন এই কারণ খুঁজে বের করতে পারে না, তখনই মানুষের মনের মধ্যে কুসংস্কার দানা বেঁধে ওঠে। অপর ব্যক্তি যা বলে তাই অন্ধভাবে বিশ্বাস করে। ফলে ফল হয় খারাপ।

উদ্দীপকে সাতক্ষীরার ভোমরা এলাকার একটি মেয়ে স্বপ্নে ওষুধ পেয়েছে। যা খেলে সব রোগ ভালো হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সারা এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। দলে দলে লোক ছুটে আসে তার কাছে। কিন্তু কিছুদিন পরে তাকে পুঁজি করে একদল লোক গ্রামের সাধারণ মানুষকে ঠকাতে শুরু করে। এভাবেই মানুষ প্রতিনিয়ত কুসংস্কারের পেছনে ছুটছে প্রতিনিয়ত। অন্যদিকে ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে মামা নগেনকে নিজের ছেলেদের মতোই ভালোবাসতেন জেনে পরলোকগত মামার প্রতি শ্রদ্ধাভক্তিতে নগেনের মন ভরে উঠল। তাই মামাকে প্রণাম করার জন্য এক রাতে নগেন মামার ফটো স্পর্শ করে। কিন্তু ফটোটি স্পর্শ করা মাত্রই নগেনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। নগেন ভাবে মামার ছবিতে প্রেতাত্মা ভর করেছে। তাই মামা আমাকে ঘৃণা করে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছে। সঠিক কারণ বের করতে না পেরে নগেন এরকম আবোল-তাবোল বকতে থাকে। কিন্তু আসল ঘটনা ছিল বিদ্যুতের শকট। এই ধরনের কুসংস্কর ও মানুষের অন্ধবিশ্বাসের মিল খুঁজে পাওয়া যায় উদ্দীপক ও ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে।   

ঘ. উত্তর : প্রকৃত শিক্ষার অভাবে এখনো গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রতারণার শিকার হচ্ছে— মন্তব্যটি যথার্থ।

গ্রামের অধিকাংশ মানুষ এখনো অশিক্ষিত। ফলে কোনো ঘটনার কারণ তারা বুঝতে পারে না। তাই একদল লোক তাদের ঠকানোর জন্য প্রস্তুত থকে। তারা অপব্যাখ্যা দিয়ে মনগড়া নিয়ম তৈরি করে। আর নিয়মে পড়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ প্রতারণার শিকার হন।

উদ্দীপকে দেখা যায় যে, সাতক্ষীরার ভোমরা এলাকার একটি মেয়ের স্বপ্নে পাওয়া ওষুধ খেলে সব রোগ ভালো হয়ে যায়। এই খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে দলে দলে লোক আসতে থাকে তার কাছে। আর যারা আসে তারা অধিকাংশই অশিক্ষিত। তাই একদল লোক ওই মেয়েকে পুঁজি করে একসময় নিজেরাই ব্যবসা শুরু করে। ফলে প্রতারণার শিকার হয় গ্রামের সাধারণ মানুষ। অন্যদিকে ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে কোনো প্রতারণার শিকার না হলেও অশিক্ষার নমুনা পাওয়া যায়। কারণ নগেনের মতো অসংখ্য লোক ভূত বিশ্বাস করে। তারা জানে না পৃথিবীতে ভূত বলে কিছু নেই। কারণ সে শিক্ষা গ্রামের মানুষকে দেওয়া হয় না। তাই নগেন মামার চিত্র স্পর্শ করে ধাক্কা খেলে ভাবে ভূতে তাকে ফেলে দিয়েছে। আর এই বিশ্বাস মানুষের মধ্যে জন্মেছে কুসংস্কারের কারণে এবং প্রকৃত শিক্ষার অভাবে।

যে কোনো ঘটনার কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য প্রয়োজন প্রকৃত শিক্ষা। আর এই শিক্ষার আলো গ্রামে এখনো সঠিকভাবে পৌঁছয়নি। তাই একদল চক্রান্তকারী লোক কারসাজি করে সাধারণ মানুষকে ঠকাচ্ছে। যেমনটা ঘটেছে উদ্দীপকে। রোগমুক্তির কথা বলে ব্যবসা করছে একদল লোক। অন্যদিকে ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পে কোনো প্রতারণার কথা না থাকলেও গ্রামের অনেক মানুষ ভূতের ভয় দেখিয়ে ব্যবসা করছে। ফলে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছে গ্রামের সাধারণ মানুষ। আর এসব সম্ভব হচ্ছে শিক্ষার অভাবে। তাই বলা যায়, প্রকৃত শিক্ষার অভাবে এখনো গ্রামের মানুষ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রতারণার শিকার হচ্ছে।

 

বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ও উত্তর

 প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জন্য ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্প থেকে কিছু বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ও উত্তর দেয়া হলো :

১। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

     ক. ১৮৭৮    খ. ১৮৯৪

     গ. ১৮৯৯    ঘ. ১৯০৮

২। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কোন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন?

     ক. মুরাতিপুর  খ. বারাকপুর       গ. দুমকা    ঘ.  সাহাজাদপুর 

৩। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিশোর উপযোগী গল্পের সংখ্যা কতটি?

     ক. ২৭ খ. ৩০  গ. ৪৫  ঘ.  ৫০

৪। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় কত সালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন?                   ক. ১৯৫০ খ. ১৯৫৬ গ. ১৯৬৭ ঘ. ১৯৭৮

৫। ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ কী ধরনের গ্রন্থ?

     ক. কাব্য খ. প্রবন্ধ গ. নাটক ঘ. উপন্যাস

৬। ‘তৈলচিত্রের ভূত’ গল্পটি কী ধরনের গল্প ?

     ক. কাব্য

     খ. প্রবন্ধ     গ. নাটক

     ঘ. কিশোর উপযোগী ছোটগল্প

৭। মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তির জন্য হিন্দু আচার শাস্ত্রীয় অনুষ্ঠানকে কী বলে?

     ক. শ্রাদ্ধ খ. উইল গ. মটকা ঘ.  প্রণাম

৮। রেশমের মোটা কাপড়কে কী বলে?

     ক. শ্রাদ্ধ  খ. উইল গ. মটকা ঘ.  প্রণাম

৯। প্রেতাত্মা অর্থ কী?

     ক. মটকা খ. ভূত গ. অশরীরী  ঘ. প্রকাণ্ড

১০। মামার প্রতি নগেনের মন শ্রদ্ধায় ভরে উঠল, কারণ—

     র. টাকাকড়ি দিয়েছে বলে

     ii. নিজের ছেলেদের মতো ভালোবাসত বলে

     iii কৃপণ ছিল বলে

 নিচের কোনটি সঠিক?

     ক. i ও ii খ. i ও iii                 

     গ. ii ও iii     ঘ. i, ii ও iii

১১। পরাশর ডাক্তার কোথায় বসে চিঠি লিখছিল?

     ক. ডাক্তারখানায়     খ. ঘরের মধ্যে             

     গ. পড়ার টেবিলে    ঘ. নিজের লাইব্রেরিতে

১২। নগেন কীসের মতো করে ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে টেবিল ঘেঁঁষে দাঁড়াল?

     ক. চোরের মতো     খ. ভয়ে ভয়ে              

     গ. লজ্জায়    ঘ. হাসতে হাসতে

১৩। নগেনের দাদা মশাইয়ের লাইব্রেরি বৈশিষ্ট্য হলো—

 i. অনেক পুরাতন আমলের

ii. বহুকালের ছেঁড়া মাসিকপত্র

iii. অনেক পুরাতন ক্যালেন্ডার আছে

 নিচের কোনটি সঠিক?

     ক. i ও ii  খ. i ও iii                     

     গ. ii ও iii     ঘ. i, ii ও iii

১৪। নগেন কোথায় থেকে লেখাপড়া করে?

     ক. দাদার বাড়ি খ. খালার বাড়ি                     গ. মামার বাড়ি       ঘ. চাচার বাড়ি

১৫। নগেননের মামা কেমন প্রকৃতির লোক ছিল?     ক. মহ  খ. মহানুভব  গ. কৃপণ  ঘ. উদার

১৬। নগেনের দাদা মশাইয়ের লাইব্রেরিতে কতটি চিত্র টাঙানো ছিল?

     ক. তিনটি খ. চারটি গ. পাঁচটি  ঘ. ছয়টি

১৭। নগেনের দাদা মশাইয়ের লাইব্রেরিতে চৈত্রমাসের কত তারিখ লেখা কাগজের ফলক ঝুলছে? 

     ক. দশ খ. বার গ. সতের  ঘ. বাইশ

১৮। রাত কয়টার সময় নগেন পরাশর ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করবে?

     ক. দশ  খ. বার  গ. সতের  ঘ. বাইশ

১৯। পরাশর ডাক্তার কত মিনিট চোখ বুঁজে বসে রইল?

     ক. দুই  খ. তিন গ. পাঁচ  ঘ. ছয়

২০। ছবিটি স্পর্শ করলে নগেনকে ধাক্কা দেয়, কারণ—

 i. রুপার ফ্রেমে বাঁধানো

 ii. ইলেকট্রিক বাল্ব ফিট করা হয়েছিল

 iii. বিদ্যুতের লাইন সংযোগ দেওয়া ছিল

 নিচের কোনটি সঠিক?

     ক. i ও ii খ. i ও iii                      

     গ. ii ও iii     ঘ. i, ii ও iii

 

উত্তরমালা : ১.ঘ ২.গ ৩.ক ৪. খ ৫.ঘ ৬. ঘ ৭.ক ৮.গ ৯.খ ১০.ক ১১.ঘ ১২.ক ১৩.ঘ ১৪.গ ১৫.গ ১৬.ক ১৭.খ ১৮.খ ১৯.গ ২০.ঘ 

সর্বশেষ খবর