সোমবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৬ ০০:০০ টা

জেএসসি পরীক্ষা প্রস্তুতি : বাংলা

বাংলা প্রথমপত্র

ফারুক আহম্মদ, সহকারী শিক্ষক, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল

 

মানবধর্ম : লালন শাহ্

     সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

১। জাতি-ধর্ম-রাষ্ট্র ন্যায় সকলি যে মানুষের তরে।

   মানুষ সবার ঊর্ধ্বে- নহে কিছু তাহার অধিক।

ক.  লালন জেতের ফাতা কোথায় বিকিয়েছেন?

খ.  লালন জাতকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না কেন?

গ. উদ্দীপকের ‘মানবধর্ম’ কবিতার কোন দিকটি ফুটে উঠেছে— ব্যাখ্যা কর।

ঘ. উদ্দীপকে ‘মানবধর্ম’ কবিতার সমগ্র বিষয়কে ধারণ করে কী? মন্তব্যটি যথার্থতা প্রমাণ কর।

ক. উত্তর : লালন জেতের ফাতা সাতবাজারে বিকিয়েছেন ।

খ. উত্তর : জাতের চেয়ে মানবধর্ম বড় বলে লালন শাহ্ জাতকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না।

পৃথিবীতে ধনি-গরিব, ধলা-কালা সকলেরই একটাই পরিচয় আর তা হলো মানবজাতি। সকল মানুষের জন্ম এবং মৃত্যু রহস্য একই। সকলের রক্তের রং লাল। তাইতো লালন শাহ্ মনে করেন, স্রষ্টা সকল মানুষকে এক দৃষ্টিতে দেখেন। কেননা স্রষ্টা সকল মানুষের জন্য একই চাঁদ-সূর্য-আকাশ সৃষ্টি করেছেন। ধনি-গরিবের জন্য আলাদা চাঁদ-সূর্য তৈরি করেননি। জগতে জাতির যে ভেদাভেদ তা মানুষের তৈরি। লালনের মতে মনুষ্যধর্মই মূলকথা, জাত নয়। তাই লালন জাতকে গুরুত্বপূূর্ণ মনে করেন না।                  গ. উত্তর : ‘মানবধর্ম’ কবিতায় ধর্ম বা সম্প্রদায়গত পরিচিতির চেয়ে মানুষ হিসেবে পরিচয়টাই বড় করে দেখিয়েছেন—  উদ্দীপকেও এই দিকটি ফুটে উঠেছে।

সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তাই পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই সমান। কেননা জন্মের সময় কোনো মানুষের গায়ে ধর্ম বা বর্ণের কথা লেখা থাকে না। তাই ধর্ম-বর্ণ-গোত্র এসব কিছুর ঊর্ধ্বে মানুষের প্রকৃত পরিচয় হলো মানুষ।

উদ্দীপকে মানুষকে সবার ঊর্ধ্বে স্থান দিয়ে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের জয়গান করা হয়েছে। কেননা জাতি-ধর্ম-রাষ্ট্র সব কিছুই মানুষের জন্য। মানুষের ঊর্ধ্বে জাতি-ধর্ম-রাষ্ট্র নয়। অন্যদিকে ‘মানবধর্ম’ কবিতায়ও লালন শাহ্ মানবের জয়গান করেছেন। মানুষ জাত ও ধর্মভেদে ভিন্ন লালন তা বিশ্বাস করেন না। তার মতে, ‘মনুষ্য ধর্মই মূলকথা। ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী যাই হোক মানুষের মূল পরিচয় সে মানুষ।’ সুতরাং বলা যায় যে, উদ্দীপকে মানবধর্মের শ্রেষ্ঠত্বের যে জয়গান করা হয়েছে ‘মানবধর্ম’ কবিতায়ও তা সম্পূর্ণরূপে প্রতিফলিত হয়েছে।

ঘ. উত্তর : উদ্দীপকে ফুটে ওঠা বিষয়ের মাধ্যমে ‘মানবধর্ম’ কবিতার সমগ্র বিষয় ধারণ করে না— মন্তব্যটি যথার্থ।

সৃষ্টিকর্তা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। তিনি মানুষের জন্য হাজার হাজার মাখলুকাত সৃষ্টি করেছেন। যেমন চন্দ্র-সূর্য, নদী-নালা, গাছ-ফল-ফুল ইত্যাদি। আর এগুলো সব মানুষের জন্য সমানভাবে তৈরি করা হয়েছে। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, সব কিছুর ঊর্ধ্বে মানুষ।  

উদ্দীপকে মানুষকে সবার ঊর্ধ্বে স্থান দিয়ে মানুষের শ্রেষ্ঠত্বের জয়গান করা হয়েছে। কেননা জাতি-ধর্ম-রাষ্ট্র সবকিছুই মানুষের জন্য। মানুষের ঊর্ধ্বে জাতি-ধর্ম-রাষ্ট্র নয়। অন্যদিকে ‘মানবধর্ম’ কবিতায়ও লালন শাহ্ মানবের জয়গান করেছেন। মানুষ জাত ও ধর্মভেদে ভিন্ন লালন তা বিশ্বাস করেন না। তার মতে, ‘মনুষ্যধর্মই মূলকথা। ধর্ম-বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী যাই হোক মানুষের মূল পরিচয় সে মানুষ।’ উদ্দীপকের সাদৃশ্যপূর্ণ এই দিকটাই ‘মানবধর্ম’ কবিতার একমাত্র আলোচ্য বিষয় নয়। 

‘মানবধর্ম’ কবিতায় লালন শাহ্ জাতপাতের কথা বর্ণনা করেছেন। জাতপাত নিয়ে এক ধরনের কুসংস্কারমনা  মানুষ বাড়াবাড়ি করে এবং সমাজে ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি করে। আর ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টিকারীদের দূরীকরণে কবিতায় লালন শাহ্ নানা ধারণা দিয়েছেন। কুসংস্কারমুক্ত সমাজ গড়ার জন্য কবি যুক্তি উপস্থাপন করেছেন। প্রদত্ত উদ্দীপকে ‘মানবধর্ম’ কবিতার এ বিষয়গুলো অনুপস্থিত। তাই বলা যায় যে, উদ্দীপকে ‘মানবধর্ম’ কবিতার সমগ্র বিষয় ধারণ করে না— মন্তব্যটি যথার্থ।

সর্বশেষ খবর