আমার সন্তান (কবিতা)— ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর
প্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ তোমাদের জন্য ‘পালামৌ’ গল্প থেকে কিছু জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর ছাপানো হলো :
১. ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর কত সালে জন্মগ্রহণ করেন? উত্তর : ১৭১২ সালে
২. কত বছর বয়সে ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর সংস্কৃতি ও ফার্সি ভাষায় ব্যুত্পত্তি লাভ করেন? উত্তর : ২০ বছর
৩. ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর কার সভাকবি ছিলেন? উত্তর : কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের
৪. কৃষ্ণচন্দ্র রায় কোন স্থানের রাজা ছিলেন? উত্তর : নবদ্বীপের
৫. ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর কত সালে মৃত্যুবরণ করেন? উত্তর : ১৭৬০ সালে
৬. ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ কোনটি? উত্তর : অন্নদামঙ্গল
৭. অন্নপূর্ণা দেবী কোন নদীর তীরে এসে উঠল? উত্তর : গঙ্গা
৮. অন্নপূর্ণা পার হওয়ার জন্য কাকে ডাকল? উত্তর : ঈশ্বরী পাটনীকে
৯. ত্বরায় শব্দের অর্থ কী? উত্তর : তাড়াতাড়ি
১০. ঈশ্বরী পাটনী দেবীকে কী বলে আখ্যায়িত করেছেন? উত্তর : কুলবধূ
১১. বাঙালি নারীরা কার নাম ধরে ডাকে না? উত্তর : স্বামীর
১২. অন্নপূর্ণা কার উপরে পা রাখল? উত্তর : সেঁউতির
১৩. কার স্পর্শে সেঁউতি সোনায় পরিণত হলো? উত্তর : অন্নপূর্ণা
১৪. নৌকা গজগমনে কোনদিকে চলা শুরু করল? উত্তর : পূর্বদিকে
১৫. অন্নপূর্ণা কার নিবাস ছাড়ল? উত্তর : হরিহড়ের
১৬. অন্নপূর্ণা হরিহড়ের বাড়ি কেন ছাড়ল? উত্তর : কোন্দলের কারণে
১৭. অন্নপূর্ণা কার বাড়িতে থাকবেন? উত্তর : ভবানন্দ মজুমদারের
১৮. ‘মানসিংহ ও ভবানন্দ’ উপাখ্যানের সম্পাদক কে?
উত্তর : আবদুল হাই এবং আনোয়ার পাশা
১৯. অন্নপূর্ণা কোন ছদ্মবেশ ধারণ করেন? উত্তর : গৃহবধূর
২০. পাটনী অন্নপূর্ণার কাছে কী বর চাইলেন? উত্তর : সন্তানের সমৃদ্ধি
সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর
১। বিহারের রাজা নীলকান্তের কোনো সন্তান ছিল না। তাই তিনি ঈশ্বরের কাছে সন্তানের জন্য প্রায়ই প্রার্থনা করতেন। হঠাৎ একদিন এক ফকির এসে রাজাকে বলল, তোমার কী চাই। রাজা বলল, আমার কোনো সন্তান নেই, তাই আমি সন্তান চাই। ফকির রাজাকে একটি লাঠি দিয়ে বলল, এই লাঠিটি কুল গাছে চেলে মারবে। যে কয়টি কুল পড়বে তা বেটে স্ত্রীকে খাওয়াবে। তাহলে তোমার স্ত্রীর সন্তান হবে। রাজা তাই করল এবং তার স্ত্রীর ফুটফুটে একটি বাচ্চা হলো।
ক. ‘মানসিংহ ও ভবানন্দ’ উপখ্যানের সম্পাদক কে?
খ. আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে- ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকের সঙ্গে ‘আমার সন্তান’ কবিতার বৈসাদৃশ্য- ব্যাখ্যা কর। ঘ. উদ্দীপকটি ‘আমার সন্তান’ কবিতার মূল ভাবকে সমর্থন করে না- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
ক. উত্তর : ‘মানসিংহ ও ভবানন্দ’ উপাখ্যানের সম্পাদক আবদুল হাই এবং আনোয়ার পাশা।
খ. উত্তর : উক্তিটির মধ্যে সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
ঈশ্বরী পাটনী খেয়াঘাটের দরিদ্র মাঝি। খেয়া পার করাই তার কাজ। একদিন এক দেবী ছদ্মবেশে তার নৌকায় পার হওয়ার জন্য আসেন। দেবীর পায়ের স্পর্শে নৌকা সোনা হয়ে গেলে পাটনী বুঝতে পারে এ কোনো সাধারণ নারী নয়। তাই দেবীর কাছে পাটনী বর চায়। দেবী পাটনীর প্রতি খুশি হয়ে যা ইচ্ছা তাই চাইতে বলে। পাটনী নিঃস্বার্থভাবে সন্তানের মঙ্গল ও সুখ-সমৃদ্ধির চিন্তা করেই উক্তিটি করেন।
গ. উত্তর : স্রষ্টার কাছে চাওয়ার ক্ষেত্রে বিহারের রাজার এবং ‘আমার সন্তান’ কবিতার পাটনীর মধ্যে নিজের স্বার্থকে গুরুত্ব বা বিসর্জন দেওয়ার ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে। ‘আমার সন্তান’ কবিতায় দেখা যায় ঈশ্বরী পাটনী নিজের স্বার্থকে গুরুত্ব না দিয়ে সন্তানের সুখ-সমৃদ্ধির কথা চিন্তা করেছেন। একদিন এক ছদ্মবেশধারী দেবী পাটনীর নৌকায় পার হওয়ার জন্য ওঠেন। পাটনীর কথাবার্তায় দেবী অন্নপূর্ণা খুশি হয়ে বর প্রার্থনা করতে বলেন। ঈশ্বরী পাটনী ইচ্ছা করলে সোনা-মহর-ধন-সম্পদ যা খুশি তাই চাইতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে সন্তানের মঙ্গলের কথা ভাবলেন এবং দেবীর কাছে বর চাইলেন, ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।
অন্যদিকে, উদ্দীপকের বিহারের রাজা নীলকান্ত সাহেব নিজের স্বার্থকে গুরুত্ব দিলেন। একদিন এক ফকির এসে রাজাকে বলল, তুমি বর চাও। রাজা বলল, যেহেতু আমার কোনো সন্তান নেই, সুতরাং আমার একটি সন্তান দাও। ফকির রাজার কথা শুনে রাজাকে একটি লাঠি দিয়ে বলল, এই লাঠিটি কুল গাছে চেলে মারবে। যে কয়টি কুল পড়বে তা বেটে স্ত্রীকে খাওয়াবে। তাহলে তোমার স্ত্রীর সন্তান হবে। রাজা নীলকান্তের প্রার্থনার মধ্যে আপন কল্যাণ কামনাই মুখ্য হয়ে উঠেছে। সুতরাং উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যায় যে, স্রষ্টার কাছে চাওয়ার ক্ষেত্রে দুই ব্যক্তির দুই রকম মনোভাব। অর্থাৎ একজন নিজের স্বার্থকে বড় করে দেখেছেন। অন্যজন অন্যের মঙ্গল কামনা করেছেন। উদ্দীপক ও ‘আমার সন্তান’ কবিতার পার্থক্য এখানেই।