বৃহস্পতিবার, ৯ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা

মো. জিল্লুর রহমান

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা

কাঞ্চনমালা আর কাঁকনমালা

অনুচ্ছেদ-১ : রাজপুরীতে গিয়ে ওই অচিন মানুষ সুচ নেওয়ার কথাটাও বলে না। বলতে থাকে অন্য কথা। বলে, আজকের দিন বড় শুভ দিন। আজ হচ্ছে পিটকুড়ুলির ব্রত, আজকের দিনে রানীদের পিঠা বিলাতে হয়-এমনই নিয়ম। নকল রানী পিঠা বানাতে যায়। সে কাঞ্চনমালাকেও পিঠা বানাতে ফরমায়েশ দেয়। নকল রানী পিঠা বানায়। সে পিঠা কেউ মুখেও তুলতে পারে না, এমনই বিস্বাদ! দুখিনী কাঞ্চনমালা বানান চন্দ্রপুলি, মোহনবাঁশি, ক্ষীরমুরলি পিঠা। মুখে দেওয়ামাত্র সবার মন ভরে যায়, এমনই স্বাদ তার। নকল রানী উঠানে আলপনা দিতে যায়। কোথায় নকশা কোথায় কি—এখানে একখাবলা রং লেপে দেওয়া, ওখানে একখাবলা লেপা। দেখতে যে কী অসুন্দর দেখায়! আর কাঞ্চনমালা আঁকেন পদ্মলতা। তার পাশে আঁকেন সোনার সাত কলস, ধানের ছড়া, ময়ূর পুতুল। লোকে তখন বুঝতে পারে কে আসল রানী, আর কে দাসী।

ক. রাজপুরীতে গিয়ে অচিন মানুষ দিনটি সম্পর্কে কী বলে? ওই দিন কী করতে হয়?

উত্তর : রাজপুরীতে গিয়ে অচিন মানুষটি বলে, আজকের দিন বড় শুভ দিন। আজ হচ্ছে পিটকুড়ুুলির ব্রত, আজকের দিনে রানীদের পিঠা বিলাতে হয়—এমনই নিয়ম।

খ. নকল রানী ও কাঞ্চনমালা কে কেমন পিঠা বানায়? চারটি বাক্যে লেখো।

উত্তর : নকল রানী কাঁকনমালা পিঠা বানায়। সে পিঠা কেউ মুখেও তুলতে পারে না, এমনই বিস্বাদ! আর দুখিনী কাঞ্চনমালা বানান চন্দ্রপুলি, মোহনবাঁশি, ক্ষীরমুরলি পিঠা। মুখে দেওয়ামাত্র সবার মন ভরে যায়।

গ. নকল রানী ও আসল রানীর আলপনা দেওয়া সম্পর্কে চারটি বাক্য লেখ।

উত্তর : নকল রানী উঠানে আলপনা দিতে যায়। কোথায় নকশা কোথায় কি— এখানে একখাবলা রং লেপে দেওয়া, ওখানে একখাবলা লেপা, যা দেখতে খুবই অসুন্দর হয়। আর আসল রানী কাঞ্চনমালা আঁকেন পদ্মলতা। তার পাশে আঁকেন সোনার সাত কলস, ধানের ছড়া, ময়ূর পুতুল, যা দেখে লোকে বুঝতে পারে কে আসল রানী আর কে দাসী।

অনুচ্ছেদ-২ : তখন সেই অচেনা মানুষটা কাঁকনমালাকে ডাক দেয়, বলে— হাতের কাঁকনে কেনা দাসী, জলদি সত্যি কথা বল। কাঁকনমালার সেকি রাগ! সে গর্জে উঠে জল্লাদকে হুকুম দেয় অচেনা মানুষ আর কাঞ্চনমালার গর্দান নিতে। জল্লাদ ওদের ধরতে আসার আগেই অচেনা মানুষ তার সুতার পুঁটলিকে হুকুম দেয়। একগোছা সুতা গিয়ে জল্লাদকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে। নকল রানী আবার গর্জে ওঠার আগেই অচিন মানুষ নতুন মন্ত্র পড়া ধরে :

সূতন সূতন সরুলি, কোন দেশে ঘর

সুচ রাজার সুচ গিয়ে আপনি পর।

সঙ্গে সঙ্গে লাখ লাখ সুতা রাজার গায়ের লাখ লাখ সুচে ঢুকে যায়। আবার মন্ত্র পড়ে অচিন মানুষ। সব সুচ রাজার শরীর থেকে বেরিয়ে এসে নকল রানির চোখেমুখে বিঁধে যায়। জ্বালা-যন্ত্রণায় ছটফট করে। নকল রানী শেষে মারা যায়। কাঞ্চনমালার দুঃখের দিন শেষ হয়। এদিকে রাজা বহু বছর পরে চোখ মেলেন। সামনে কে যেন দাঁড়িয়ে! কে! সেই রাখালবন্ধু! রাজা দুহাতে জড়িয়ে ধরেন তাকে। রাজা ক্ষমা চান তাঁর বন্ধুর কাছে। কথা দিয়ে কথা রাখেননি। রাজা বলেন, আজ থেকে তুমি আমার মন্ত্রী। এই রইল রাজ্য আমার, শুধু তুমি আমার পাশে থেকো! সারা জীবনের জন্য থেকো। রাখালবন্ধু কি তখন না থেকে পারে! রাজা তাঁর বন্ধুকে নতুন সোনার বাঁশি গড়িয়ে দেন। রাখাল সারা দিন মন্ত্রীর কাজ করে, প্রজাদের দুঃখ সরিয়ে তাদের মুখে হাসি আনে।

সারা দিনের কাজ শেষে রাজা বন্ধুকে নিয়ে যান। পুরনো দিনের মতো রাখালবন্ধু তখন বাঁশি বাজায় আর রাজা সেই সুর শোনেন। সুখে রাজার মন ভরে ওঠে।

-ক. অচেনা মানুষটি কাঁকনমালাকে ডেকে কী বলে? কাঁকনমালা জল্লাদকে কী হুকুম দেয়?

উত্তর : অচেনা মানুষটি কাঁকনমালাকে ডেকে বলে-হাতের কাঁকনে কেনা দাসী, জলদি সত্যি কথা বল।

কাঁকনমালা রাগে গর্জে উঠে জল্লাদকে হুকুম দেয় অচেনা মানুষ আর কাঞ্চনমালার গর্দান নিতে।

খ. কাঞ্চনমালার দুঃখের দিন কিভাবে শেষ হয়? চারটি বাক্যে লেখো।

উত্তর : নকল রানী কাঁকনমালার হুকুমে জল্লাদ অচেনা মানুষ ও কাঞ্চনমালাকে ধরতে আসার আগেই সে তার সুতার পুঁটলিকে হুকুম দেয়। একগোছা সুতা গিয়ে জল্লাদকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে। নকল রানী আবার গর্জে ওঠার আগেই অচিন মানুষ নতুন মন্ত্র পড়ে আর সঙ্গে সঙ্গে রাজার গায়ের লাখ লাখ সুচ গিয়ে নকল রানীর চোখেমুখে বিঁধে যায়। নকল রানী যন্ত্রণায় ছটফট করে মারা গেলে কাঞ্চনমালার দুঃখের দিন শেষ হয়।

গ. রাজা তাঁর রাখালবন্ধুর জন্য কী কী করলেন? চারটি বাক্যে লেখ।

উত্তর : বহু বছর পরে রাজা চোখ মেলে রাখালবন্ধুকে চোখের সামনে দেখে দুহাতে জড়িয়ে ধরে তার কাছে ক্ষমা চান এবং তাকে মন্ত্রী করেন। তারপর রাজা তাঁর বন্ধুকে নতুন সোনার বাঁশি গড়িয়ে দেন। রাখাল সারা দিন মন্ত্রীর কাজ করে, প্রজাদের দুঃখ সরিয়ে তাদের মুখে হাসি আনে আর রাজাও সারা দিনের কাজ শেষে রাখালবন্ধুকে নিয়ে যান। পুরনো দিনের মতো রাখালবন্ধু তখন বাঁশি বাজায় আর রাজা মনের সুখে সেই সুর শোনেন।

সর্বশেষ খবর