সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা : বাংলা

সুকুমার মণ্ডল, সিনিয়র শিক্ষক

পঞ্চম শ্রেণির পড়াশোনা : বাংলা

পঞ্চম শ্রেণির বাংলা প্রশ্নপত্রে মোট ১৪টি প্রশ্ন থাকবে। এগুলোর মধ্যে ২টি অনুচ্ছেদ থেকে ২টি করে ৪টি প্রশ্ন থাকবে।

 

 মান : ১০০, সময় ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট

 

প্রদত্ত অনুচ্ছেদটি পড়ে ১ ও ২ নম্বর ক্রমিকের উত্তর দাও :

‘সার্থক জনম মাগো জন্মেছি এ দেশে।’ কবির এ কথার অর্থ-আমাদের সৌভাগ্য ও সার্থকতা যে আমরা এ দেশে জন্মেছি। বাংলাদেশের প্রায় সব লোক বাংলায় কথা বলে। আমরা বাঙালি। তবে আমাদের দেশে যেমন রয়েছে প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য, তেমনি রয়েছে মানুষ ও ভাষার বৈচিত্র্য। বাংলাদেশের পার্বত্য জেলাগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার লোকজন। এদের কেউ চাকমা, কেউ মারমা, কেউ মুরং, কেউ তঞ্চঙ্গা ইত্যাদি। এ ছাড়া রাজশাহী আর জামালপুরে রয়েছে সাঁওতাল ও রাজবংশীদের বসবাস। তাদের রয়েছে নিজ নিজ ভাষা। একই দেশ, একই মানুষ, অথচ কত বৈচিত্র্য। এটাই বাংলাদেশের গৌরব। সবাই মিলেমিশে আছে যুগ যুগ ধরে। এ রকম খুব কম দেশেই আছে। আমাদের বাংলাদেশের বাইরেও অনেক বাঙালি আছে। বাংলাদেশের এই যে মানুষ, তাদের পেশাও কত বিচিত্র্য। কেউ জেলে, কেউ কুমার, কেউ কৃষক, কেউ আবার কাজ করে অফিস-আদালতে। সবাই আমরা পরস্পরের বন্ধু। একজন তার কাজ দিয়ে আরেকজনকে সাহায্য করছে। গড়ে তুলছে এই দেশ। ভাবো তো কৃষকের কথা। তারা কাজ না করলে আমাদের খাদ্য জোগাত কে? সবাইকে তাই আমাদের শ্রদ্ধা করতে হবে, ভালোবাসতে হবে। সবাই আমাদের আপনজন। আমাদের আছে নানা ধরনের উৎসব। মুসলমানদের রয়েছে দুটি ঈদ, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। হিন্দুদের দুর্গাপূজাসহ আছে নানা উৎসব আর পার্বণ। বৌদ্ধদের আছে বৌদ্ধ পূর্ণিমা। খ্রিস্টানদের আছে ইস্টার সানডে আর বড়দিন। এ ছাড়া রয়েছে নানা উৎসব। পহেলা বৈশাখ-নববর্ষের উৎসব। রয়েছে রাখাইনদের সাংরাই ও চাকমাদের বিজু উৎসব।

১. প্রদত্ত শব্দগুলোর অর্থ লেখ। ৭টির মধ্যে ৫টি.            ১ x ৫=৫

ক. সার্থক     খ. বৈচিত্র্য  

গ. প্রকৃতি     ঘ. পার্বত্য 

ঙ. গৌরব     চ. পরস্পর 

ছ. শ্রদ্ধা

২. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :                                              ২+৪+৪=১০

ক. বাংলাদেশের প্রায় সব মানুষ কোন ভাষায় কথা বলে? বাংলাদেশের গৌরব কীসে?     ২  

খ. বাংলাদেশের মানুষের পেশা সম্পর্কে কী বলা হয়েছে? তারা কীভাবে দেশকে গড়ে তুলছে? চারটি বাক্যে লেখ।           ৪

গ. অনুচ্ছেদে উল্লিখিত বিভিন্ন উৎসব সম্পর্কে চারটি বাক্যে লেখ।         ৪

প্রদত্ত অনুচ্ছেদটি পড়ে (পাঠ্য বই বহির্ভূত.) ৩ ও ৪ নম¡র ক্রমিকের উত্তর লেখ। 

একবার বনের পশুদের নাচ দেখিয়ে এক বানরের খুব নাম-যশ হয়েছিল। পশুরা মুগ্ধ হয়ে বানরকে তাদের রাজা করে নিল। কিন্তু রাজা হওয়ার মতো কোনো যোগ্যতাই বানরের ছিল না। বুদ্ধিমান আর পন্ডিত বলে শেয়ালের নামডাক কিছু কম নয়। তবু তাকে বাদ দিয়ে পশুরা বানরকে রাজা করায় শেয়ালের রাগ গিয়ে পড়ল বানরের ওপর। সে শুধুই বানরকে জব্দ করার ফন্দি আঁটতে লাগল। এক দিন বনের পথে ঘুরতে ঘুরতে শেয়াল দেখল, ঝোপের আড়ালে একটা ফাঁদ পাতা রয়েছে। ফাঁদ চোখে পড়তেই শেয়াল আনন্দে লাফিয়ে উঠল। সে ভাবল, যে করে হোক ওই হাবাগোবা বানরকে এনে এই ফাঁদে ফেলতে হবে। তাহলে জন্মের মতো তার রাজাগিরির সাধ ঘুচবে। তখনই শেয়াল চলে এলো বানরের কাছে। করজোড়ে বলে, মহারাজ, এই অধমকে যদি আপনার সেবা করার সুযোগ দেন তবে ধন্য হই। বানর পায়ের ওপর পা তুলে কলার খোসা ছাড়াচ্ছিল। একটা আস্ত পাকা কলা কোঁৎ করে গিলে ফেলে গম্ভীর মুখে বলল, তোমার মনের ইচ্ছাটা নির্ভয়ে বলে ফেল। শেয়াল বলল, এক জায়গায় খুব ভালো খাবার দেখে এসেছি প্রভু। বনরাজ্যে আপনি ছাড়া এমন খাবারের যোগ্য আর কেউ নেই। যদি দয়া করে অনুমতি করেন, সে জায়গায় আপনাকে নিয়ে যেতে পারি। শেয়ালের চালাকি বানর কিছুই বুঝতে পারল না। সে খুশি হয়ে শেয়ালের সঙ্গে রওনা হলো। মনের খুশি মনে চেপে শেয়াল বানরকে সেই ফাঁদের কাছে ঝোপটা দেখিয়ে বলল, মহারাজ এই ঝোপের পেছনেই সব খাদ্য লুকানো আছে। আপনি এবারে গিয়ে খেতে শুরু করুন। আমি হলাম আপনার দাস, একটু দূরে দাঁড়ানোই ভালো। বোকা বানর শেয়ালের কথা ভুলে সুখাদ্যের লোভে ঝোপের ভেতরে গিয়ে ঢুকল আর ফাঁদে আটকে পড়ল। তখন সে বাঁচাও, বাঁচাও করে চিৎকার করে শেয়ালকে ডাকতে লাগল। শেয়াল বাঁকা হেসে বলল, বানর মশাই, তুমি একটা আকাট মূর্খ। এই বুদ্ধি নিয়ে পশুদের রাজা হওয়া যায় না। শিকারিরা এখনই আসবে। তোমার যোগ্য ব্যবস্থা তারাই করবে।

৩. ছকে কয়েকটি শব্দ ও শব্দার্থ দেওয়া আছে। উপযুক্ত শব্দ দিয়ে নিচের বাক্যগুলোর শূন্যস্থান পূরণ করে উত্তরপত্রে লেখ :            ১ x ৫=৫

শব্দ-শব্দার্থ

পশু জন্তু

বুদ্ধিমান-জ্ঞানী, চালাক

জব্দ-আটক

নিগৃহীত-লাঞ্ছিত

সম্পূর্ণ-পরাভূত

ফন্দি-গুপ্ত কৌশল, মতলব

ফাঁদ-পশুপাখি ধরার যন্ত্র, কৌশল, চক্রান্ত    নির্ভয়ে-ভয় না করে।

ক. রাশেদ সব সময় মুন্নাকে- করতে চায়।

খ.  রাজা গরিব লোকটিকে তার কথা বলার অনুমতি দিলেন।

গ.  আমাদের শ্রেণিশিক্ষক একজন সৎ ও।

ঘ. রহিম মিয়া ইঁদুর ধরার জন্য পেতে রেখেছে।

ঙ. চোরটি পালানোর জন্য আঁটতে লাগল।

৪. নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ :                                                                      ৫ x ৩=১৫

ক. কী করে বানরের নাম-যশ হয়েছিল? শেয়াল কেন বানরকে রাজা হিসেবে মেনে নিতে পারল না? চারটি বাক্যে লেখ।                                                                                                                                       ১+৪=৫

খ. কী দেখে শেয়াল আনন্দে লাফিয়ে উঠল? কী বলে সে বানরকে ঝোপের কাছে নিয়ে এলো? চারটি বাক্যে লেখ।             ১+৪=৫

গ. একজন রাজার দায়িত্ব সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।   ৫

৫. নিচের দাগ দেওয়া শব্দের ক্রিয়াপদগুলোর চলিত রূপ লেখ :

৭টির মধ্যে ৫টি.            ১x৫=৫  

ক.  এক সন্ধ্যায় বনের সব প্রাণী আসিয়া জড় হলো সিংহের গুহায়।

খ. এক মজার বন্ধুর কথা বলা হইয়াছে ‘ফুটবল খেলোয়াড়’ কবিতায়।

গ. মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সিপাহি মুন্সি আবদুর রউফ যুদ্ধে ঝাঁপাইয়া পড়েন।

ঘ. আমরা একটু দেরি করিয়াই মেলায় গেলাম।

ঙ. তবেই তাঁদের ঋণ শোধ করা সম্ভব হইবে।

চ. নকল রানির ভয়ে কাঁপিতে থাকে কাঞ্চনমালা।

ছ. ঝড়ে গাছপালা ভাঙিয়া গেলে ওরা ব্যথা পায় না।

৬. অনুচ্ছেদটি পড়ে কে, কী, কোথায়, কীভাবে, কেন, কখন. শব্দগুলো দিয়ে পাঁচটি প্রশ্ন তৈরি করে উত্তরপত্রে লেখ :              ১x৫=৫

ইংরেজ আমলের প্রথম দিকে, সুন্দরবনে গন্ডারের সংখ্যাধিক্য ছিল। কিন্তু সেই গন্ডার এখন নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। ইংরেজ শাসক ও দেশিয় কর্মচারী এবং স্থানীয় দক্ষ শিকারি সবাই মিলে ক্রমান্বয়ে গন্ডারের বংশ ধ্বংস করেছে। বিখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ভ্রাতা নলিনী ভূষণ রায় ১৮৮৫ সালে সুন্দরবনে গন্ডার দেখেছিলেন বলে জানা যায়। এর পর প্রাণীটি আর দেখা যায়নি। একসময়ে এখানে হাতিও ছিল, এখন একটিও নেই। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল ছাড়াও জামালপুর-শেরপুর অঞ্চলের গারো পাহাড়ে হাতি দেখা যায়।

৭. নিচের যুক্তবর্ণগুলো ভেঙে দেখাও এবং প্রতিটি যুক্তবর্ণ দিয়ে তৈরি শব্দ দ্বারা একটি করে বাক্য রচনা কর।     ২x৫=১০

ক. ত্র্য খ. ক্ষ গ. ম্প ঘ. ত্ম ঙ. স্বচ. ন্দ ছ. ঙ্ক

৮. উপযুক্ত স্থানে বিরাম চিহ্ন বসিয়ে অনুচ্ছেদটি তোমার উত্তরপত্রে লেখ :         ৫  

সে সময়ে শীতলক্ষ্যা নদীর পারের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে ছিল সুসভ্য মানুষজনের বসবাস ছিল নগর সভ্যতা পূর্ব দক্ষিণ দিক দিয়ে ভৈরবের মেঘনা হয়ে এখানকার ব্যবসা বাণিজ্য সুদূর জনপদ পর্যন্ত প্রসারিত ছিল

৯. এককথায় প্রকাশ কর :         ১x৫=৫

ক. যে কাহিনি কল্পনা করে লেখা হয়

খ. হুংকার দিয়ে ওঠা

গ. মাথা নত করে অভিবাদন করা

ঘ. কেনা গোলাম

ঙ. প্রতি মুহূর্তে অপেক্ষা করা

চ. পাহারা দেওয়া

ছ. যিনি ইতিহাস জানেন বা লেখেন

১০. প্রদত্ত শব্দগুলোর বিপরীত শব্দ লেখ : ৭টি থেকে যেকোনো ৫টি.     ১x৫=৫

ক. লোকটি তাকে অভিশাপ দিলেন।

খ. লোহার অংশটুকু ছিল চোখা। 

গ. জলপথে শত্রুরা এ দেশে প্রবেশ করল।

ঘ. বনের সব প্রাণী তার সামনে এসে দাঁড়াল। 

ঙ. সৈন্যরা সশস্ত্র ছিল।

চ. আমি ছোট মামার বাড়ি যাব।

ছ. সাকিব একজন ভীরু মানুষ।

১১. কবিতাংশটুকু পড়ে নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লেখ :  ২+৫+৩=১০

আমাদের মেসে ইমদাদ হক ফুটবল খেলোয়াড়,

হাতে পায়ে মুখে শত আঘাতের ক্ষতে খ্যাতি লেখা তার।

সন্ধ্যাবেলায় দেখিবে তাহারে পটি বাঁধি পায়ে হাতে,

মালিশ মাখিছে প্রতি গিঁটে গিঁটে কাত হয়ে বিছানাতে।

মেসের চাকর হয় লবেজান সেঁক দিতে ভাঙা হাড়ে,

সারা রাত শুধু ছটফট করে কেঁদে কেঁদে ডাক ছাড়ে।

আমরা তো ভাবি ছ মাসের তরে পঙ্গু সে হলো হায়,

ফুটবল-টিমে বল লেয়ে কভু দেখিতে পাব না তায়।

ক. কবিতাংশটি কোন কবিতার অংশ? কবিতাটির কবির নাম কী? ২ 

খ. কবিতাংশটুকুর মূল বক্তব্য পাঁচটি বাক্যে লেখ।          ৫  

গ. তোমার প্রিয় খেলা সম্পর্কে তিনটি বাক্য লেখ।   ৩ 

১২. মনে করো, তুমি বর্ষণ/বর্ষা। তুমি চন্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র/ছাত্রী। তোমার শ্রেণির রোল নম্বর ১০। তুমি চন্দ্রা সাধারণ পাঠাগারের সদস্য হতে ইচ্ছুক। এ পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নিচের ফরমটি পূরণ কর।     ৫

পাঠাগার সদস্য ফরম :

♦ নাম : ...........................................

♦ বিদ্যালয়ের নাম : .............................

♦ শ্রেণি : ..........................................

♦ রোল নম্বর : ...................................

♦ যে বই গ্রহণে ইচ্ছুক : .................

♦ আবেদনকারীর স্বাক্ষর : ................

১৩. মনে কর, তুমি সুহƒদ/সুহƒদা। তুমি শিমুলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র/ছাত্রী। তোমার শ্রেণির রোল নম্বর ০১। অসহ্য গরমের কারণে সকালে ক্লাসের সময়সূচি পরিবর্তনের আবেদন জানিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে একটি আবেদনপত্র লেখ।         ৫

১৪. নিচের যেকোনো বিষয়ে ২০০ শব্দের মধ্যে একটি রচনা লেখ :         ১০

ক.   একজন বীরশ্রেষ্ঠ ভূমিকা, বীরশ্রেষ্ঠদের নাম, জন্ম ও পরিচয়, কৈশোর ও কর্মজীবন, মুক্তিযুদ্ধে অবদান, মৃত্যু, উপসংহার.

খ. বাংলাদেশের মৎশিল্প/শখের মৎশিল্প ভূমিকা, মৎশিল্প কী, মৎশিল্পের উপকরণ, পোড়ামাটির প্রাচীন শিল্প, ঐতিহ্যময় মৎশিল্প, উপসংহার.

গ. বাংলাদেশের জাতীয় পশু/রয়েল বেঙ্গল টাইগার ভূমিকা, পশুর নাম, আকৃতি, আবাসস্থল, রং, খাদ্যাভ্যাস, কোথায় দেখা যায়, উপসংহার.

ঘ.   বইমেলা ভূমিকা, বাংলাদেশে বইমেলা, বইমেলার তাৎপর্য, বইমেলার প্রভাব, উপসংহার।

সর্বশেষ খবর