ক. সারকোলেমা কী?
খ. অস্টিওপরোসিস বলতে কি বোঝায়?
গ. তোমার চলনে Q ও R এর ভূমিকা ব্যাখ্যা কর।ঘ. চিত্রে চ ও R এর বৈশিষ্ট্য আলাদা আলোচনা কর।
উদ্দীপক-১ এর উত্তর :
ক. পেশি আবরণীকে সারকোলেমা বলে।
খ. অস্টিওপরোসিস একটি ক্যালসিয়াম অভাবজনিত রোগ। এ রোগে অস্থি ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং গুরুত্ব কমে যায়। সামান্য আঘাতে অস্থির ফ্র্যাকচার হতে পারে। বয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের সাধারণত এ রোগ হয়।
গ. উদ্দীপকে Q হলো পেশি এবং R হলো অস্থি। আমার চলনে অস্থি ও পেশির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো।
মানুষের চলনে অস্থি ও পেশির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অস্থি দেহের কাঠামো কঙ্কাল গঠন করে। আর পেশিতন্ত্র এই কাঠামোর ওপর আচ্ছাদন তৈরি করে। ঐচ্ছিক পেশি টেন্ডন নামক দৃঢ় ও স্থিতিস্থাপক অংশ দ্বারা অস্থিকে আটকে রাখে। এভাবে পেশি কোনো অঙ্গকে প্রসারিত করে, দেহের কোনো অঙ্গকে ভাঁজ করে, প্রয়োজনে দেহের অক্ষ থেকে দেহের কোনো অঙ্গকে দূরে সরিয়ে দেয়, কোনো অঙ্গকে দেহের অক্ষের দিকে টেনে আনে, কোনো অঙ্গকে উপরের দিকে ওঠায়, কোনো অঙ্গকে নিচে নামায় বা কোনো অঙ্গকে প্রধান অক্ষের চারপাশে, ডানে-বাঁয়ে ঘোরানো ইত্যাদি কার্য সম্পাদন করে। অর্থাৎ Q ও R এর সমন্বিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমি চলতে পারি। তাই অস্থি ও পেশি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ঘ. চিত্রে P হলো তরুণাস্থি এবং R হলো অস্থি। অস্থি ও তরুণাস্থি ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। নিম্নে তা আলোচনা করা হলো।
১. অস্থি যোজক কলার রূপান্তরিত রূপ, অপরপক্ষে তরুণাস্থি যোজক কলার ভিন্ন রূপ।
২. অস্থি দেহের সর্বাপেক্ষা দৃঢ় কলা, অন্যদিকে তরুণাস্থি অপেক্ষাকৃত নরম ও স্থিতিস্থাপক।
৩. অস্থির মাতৃকা এক প্রকার জৈব পদার্থ দ্বারা গঠিত, অন্যদিকে তরুণাস্থির মাতৃকা কন্ড্রিল দ্বারা গঠিত।
৪. অস্থি কোষকে বলে অস্ট্রিওব্লাস্ট আর তরুণাস্থির কোষকে বলে কন্ডিওব্লাস্ট।
৫. অস্থির কোষগুলো শাখা-প্রশাখাযুক্ত অনেকটা মাকড়সার জালের মতো।
৬. অস্থি পেরিঅস্টিয়াম আবরণ দিয়ে আবৃত, অন্যদিকে তরুণাস্থি পেরিকন্ডিয়াম আবরণ দিয়ে আবৃত।
৭. অস্থি লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন ও খনিজ লবণ সঞ্চয় করলেও তরুণাস্থির ক্ষেত্রে তেমনটি ঘটে না।
৮. অস্থি বৃদ্ধির জন্য প্রচুর ভিটামিন ‘ডি’ ও ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার প্রয়োজন হলেও তরুণাস্থি বৃদ্ধির জন্য বিশেষ খাবারের প্রয়োজন নেই।
৯. অস্থি হলো হাত ও পায়ের অস্থি; অন্যদিকে নাকের অগ্রভাগের অস্থি, কানের পিনার অস্থি হলো তরুণাস্থি। মানবদেহের অভ্যন্তরীণ কাঠামো এ ধরনের টিস্যু দ্বারা গঠিত। দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থল স্থিতিস্থাপক রজ্জুর মতো বন্ধনী দিয়ে দৃঢ়ভাবে আটকানো থাকে।
ক. LDL এর পূর্ণ নাম ইংরেজিতে লেখ।
খ. টেন্ডন বলতে কি বোঝায়?
গ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অস্থির সংযোগস্থলের চিহ্নিত চিত্র অঙ্কন কর।
ঘ. উদ্দীপকে উল্লিখিত অস্থির সংযোগস্থলের প্রকারভেদগুলো পরস্পর পৃথক ব্যাখ্যা কর।
উদ্দীপক-২ এর উত্তর :
ক. LDL-এর পূর্ণ নাম হলো Low Density Lipoprotein.
খ. মাংসপেশির প্রান্তভাগ রজ্জুর মতো শক্ত হয়ে অস্থিগহবরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে। এই শক্ত প্রান্তকে টেন্ডন বলে। ঘন শ্বেত তন্তুময় যোজক টিস্যুর দ্বারা টেন্ডন গঠিত হয়। টেন্ডনের টিস্যু শাখা-প্রশাখাবিহীন হয়ে থাকে।
গ. উদ্দীপকে সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধির কথা বলা হয়েছে। এর চিহ্নিত চিত্র নিচে অঙ্কন করা হলো।
ঘ. দুই বা ততধিক অস্থির সংযোগস্থলকে অস্থিসন্ধি বলে। দেহের সব অস্থিসন্ধি এক রকম নয়। এদের কোনোটি একবারে অনড়, আবার কোনোটি সহজে সঞ্চালন করা যায়। নিম্নে অস্থির সংযোগস্থলের প্রকারভেদগুলো পরস্পর পৃথক তা ব্যাখ্যা করা হলো। যথা :
১. নিশ্চল অস্থিসন্ধি : নিশ্চল অস্থিসন্ধিগুলো অনড় অর্থাৎ নাড়ানো যায় না। যেমন করোটিকা অস্থিসন্ধি।
২. ঈষৎ সচল অস্থিসন্ধি : এসব অস্থিসন্ধি একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত থাকলেও সামান্য নড়াচড়া করতে পারে। ফলে আমরা দেহকে সামনে, পেছনে ও পাশে বাঁকাতে পারি। যেমন মেরুদ-ের অস্থিসন্ধি।
৩. পূর্ণ সচল অস্থিসন্ধি : এসব অস্থিসন্ধি সহজে নড়াচড়া করানো যায়। এ জাতীয় অস্থিসন্ধির মধ্যে বল ও কোটরসন্ধি, কবজাসন্ধি প্রধান।
৪. বল ও কোটরসন্ধি : বল ও কোটরসন্ধিতে সন্ধিস্থলে একটি অস্থির মাথার মতো গোল অংশ অন্য অস্থির কোটরে এমনভাবে স্থাপিত থাকে, যাতে অস্থিটি বাঁকানো, পার্শ্ব চালনা ও সব দিকে নাড়ানো সম্ভব হয়।
৫. কবজি সন্ধি : কবজা, যেমন দরজার পাল্লাকে কাঠামোর সঙ্গে আটকে রাখে সেরূপ কবজার মতো সন্ধিকে কবজি সন্ধি বলে। যেমন : হাতের কনুই, জানু ও আঙুলে এ ধরনের সন্ধি দেখা যায়। এসব সন্ধি শুধু এক দিকে নাড়ানো যায়।
অতএব, গঠন ও কাজের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, উদ্দীপকে উল্লিখিত অস্থির সংযোগস্থলের প্রকারভেদগুলো পরস্পর পৃথক।