বৃহস্পতিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০১৫ ০০:০০ টা

অভিমান করেই অভিনয় ছেড়েছিলাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

অভিমান করেই অভিনয় ছেড়েছিলাম

আবারও হুমায়ূন আহমেদের গল্পের ছবিতে অভিনয় করছেন অভিনেতা রিয়াজ। ‘দুই দুয়ারি’ ও ‘শ্যামল ছায়া’র পর এবার ‘কৃষ্ণপক্ষ’। ‘কৃষ্ণপক্ষ’ নির্মাণ করছেন মেহের আফরোজ শাওন। এ বিষয়ে ও অন্যান্য প্রসঙ্গে আজ রিয়াজের ইন্টারভিউ

আবারও হুমায়ূন আহমেদের ছবিতে অভিনয় করছেন, এবারের অনুভূতি কেমন?

এবার অবশ্যই খারাপ লাগছে। কারণ আগের ছবি দুটি স্যার নিজে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। আজ তিনি নেই। তার ভালোবাসা আজও আমার চলার পথে পাথেয় হয়ে আছে। একদিন শাওন ভাবী বললেন, এখন থেকে প্রতিবছরই স্যারের গল্প নিয়ে নাটক-টেলিছবি-চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন। আমাকে অভিনয় করতে হবে। এই ঈদেও তার পরিচালনায় নাটকে অভিনয় করেছি। এখন করছি চলচ্চিত্র। স্যারের জম্নদিনে ছবিটি ট্রিবিউট করা হবে। এর একটা অংশ হতে পারছি, এর চেয়ে বড় সৌভাগ্যের বিষয় আর কী হতে পারে।

ছবিতে আপনার চরিত্রের ব্যাপারে কিছু বলুন

এখনই সব বলা ঠিক হবে না। দর্শক আগ্রহ ধরে রাখতে চাই। বলব চমৎকার এবং একেবারে অন্যরকম একটি চরিত্র।

অভিনয়ে বিরতি দিয়ে একসময় ব্যবসা, পরে চাকরি করেছিলেন। আবার ফিরলেন অভিনয়ে।

বলতে পারেন অভিমান করেই অভিনয় ছেড়েছিলাম। চলচ্চিত্রের প্রতি অভিমান জšে§ছিল। অশ্লীলতা, পাইরেসি, নকলÑ এসব চলচ্চিত্রের মৌলিকত্ব নষ্ট করে দিয়েছে। ভালো পরিচালকরা বেকার হয়ে পড়ছিলেন। বড় বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছিল। তাই সরে না গিয়ে উপায় ছিল না। এখন পরিস্থিতির তেমন উন্নতি না হলেও ভাবলাম এভাবে হাল ছেড়ে দেওয়াটা ঠিক    হবে না।

আবারও ছবি প্রযোজনার কথা বলেছিলেন। কখন আসছেন?

আসলে সম্ভাবনা খুব কম। আমার ঘরের টাকা অন্যের হাতে তুলে দিতে পারব না। যত দিন না চলচ্চিত্রের বাজারব্যবস্থার পরিবর্তন হবে, তত দিন প্রযোজনা করব না বলে ঠিক করেছি। কারণ এখন চলচ্চিত্রে বিনিয়োগ করা মানে লাভ দূরে থাক পুঁজিই ফেরত আসে না। পাইরেসি, নকল, আর সিনেমা হলের পরিবেশ এখনো প্রতিক‚লে। তাই অনুক‚ল পরিবেশ না ফেরা পর্যন্ত অপেক্ষা করব।

দিন দিন ছবি মুক্তির হার আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?

সবাই মিলে আমরা চলচ্চিত্রকে ধ্বংস করেছি। একের পর এক তামিল ছবির নকল করতে গিয়ে নিজেদের মৌলিক গল্প ভুলে গেছি। এরপরও যে দু-একটি মৌলিক ছবি হচ্ছে সেগুলো শুধু সিনেপ্লেক্সকে টার্গেট করে  নির্মিত হচ্ছে। ফলে দর্শকরা আরও হলবিমুখ হচ্ছে। ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রযোজকরা। ক্রমেই তারা ছবি নির্মাণ থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় কী?

মৌলিক গল্পের ছবি নির্মাণ করতে হবে।  কোনো একজনের তত্ত¡াবধানে ছবি মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা দূর করতে হবে। প্রযোজকের ব্যবসা তার নিজের হাতেই থাকা উচিত। সে ক্ষেত্রে প্রেক্ষাগৃহ মালিকদেরও এগিয়ে আসতে হবে। তৃতীয় পক্ষকে যত দিন নিয়ন্ত্রণে আনা না যাবে তত দিন চলচ্চিত্রের ভাগ্য পরিবর্তন হবে না।

চলচ্চিত্রে আপনার  অভিষেকের ২০ বছর পূর্ণ হলো এ বছর, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিও হিসেবটা কেমন?

চলচ্চিত্রই আমাকে রিয়াজ বানিয়েছে। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। এক জীবনে আর কী চাই। এটি আমার জন্য বিশাল প্রাপ্তি। আর এখন মনে হচ্ছে চলচ্চিত্রের জন্য কিছুই করতে পারিনি। ‘হƒদয়ের কথা’ নামে একটি ছবি প্রযোজনা করেছিলাম। চেয়েছিলাম নিয়মিত হব। কিন্তু বাজারব্যবস্থা আমাকে দূরে সরে যেতে বাধ্য করেছে। এটিই সবচেয়ে বড় অপ্রাপ্তি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর