শীত এলেই সংগীত শিল্পীরা চনমনে হয়ে ওঠেন। এবারের শীত মৌসুম শুরু থেকেই জমে উঠেছে। এরই মাঝে শেষ হয়ে গেল ‘বাংলাদেশ সংগীত সপ্তাহ’, ‘জ্যাজ অ্যান্ড ব্লুজ ফেস্টিভ্যাল ঢাকা’ এবং হাবিব-সুনিধি চৌহানের ‘উইন্টার ব্লাস্ট ২০১৫ ঢাকা’। কিন্তু এখানেই শেষ নয় মৌসুম। চমক আছে আরও।
আজ শুরু ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব’
আজ থেকে শুরু হচ্ছে ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক লোকসংগীত উৎসব’। বাংলা গানের ঐতিহ্য ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, জারি, সারি, বাউল ও মরমি গান নিয়ে এই আয়োজন সাজানো হচ্ছে। অনুষ্ঠানের প্রথম দিন আজ আয়োজন শুরু হবে পল্লবি ডান্স সেন্টারের নাচ দিয়ে। তারপর একে একে মঞ্চে উঠবেন ফরিদা পারভীন, কিরণ চন্দ্র রায়, চন্দনা মজুমদার, রব ফকির, শফি মণ্ডল, অর্ক মুখার্জি ও ভারতের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী পাপন। এ ছাড়া তিন দিনের এই উৎসবে আরও গান পরিবেশন করবেন মমতাজ বেগম, বারী সিদ্দিকী, নাশিদ কামাল, সদানন্দ সরকার, নিশিকান্ত সরকার, কাজল দেওয়ান, মিনু বিল্লাহ, লুবনা মরিয়ম, লাবিক কামাল গৌরব ও ম্যাজিক বাউলিয়ানা প্রমুখ। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশ থেকেও ফোক শিল্পীরা আসছেন গান শোনাতে। পাকিস্তান থেকে আসছেন আবিদা পারভিন ও সাঁই জহুর। ভারত থেকে আসছেন ইন্ডিয়ান ওশান, নুরান সিস্টার্স, রাজস্থান ফোক গ্রুপ, পবন দাস বাউল ও পার্বতী বাউল। অন্যদিকে আয়ারল্যান্ডের নিয়াভ নি কারা, চীনের ইউনান আর্ট ট্রুপ ও মিসরের আলেক্সন্দ্রিয়া ডান্স ট্রুপের পরিবেশনাও থাকবে। অনুষ্ঠান শুরু হবে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টায়। চলবে রাত ১টা পর্যন্ত।
২৩ নভেম্বর ‘দুই বাংলার গান’
অনুপমের সঙ্গে ন্যানসির প্রথম কাজ একটি চলচ্চিত্রের গানের মধ্য দিয়ে। এটির নাম ছিল ‘চোরাবালি’। গানটির কথা, সুর ও সংগীত ছিল অনুপমের। তবে দুজনের রেকর্ডিং হয়েছিল দুই বাংলায়। তাই তাদের সাক্ষাৎ হয়নি। এবার সে সুযোগ এসেছে। একই কনসার্টে গাইবেন দুই দেশের এ দুই জনপ্রিয় শিল্পী।
‘দুই বাংলার গান’ শীর্ষক ধারাবাহিক কনসার্টের প্রথম আয়োজনে থাকছে অনুপম ও ন্যানসির পরিবেশনা। এর শিরোনাম ‘দুই বাংলার গান’। কনসার্টটির উদ্যোক্তা অন্তর শোবিজ। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে কনসার্টের বিস্তারিত জানানো হয়। জানা গেছে, কনসার্টে গান গাইবেন পারভেজও। চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ন্যানসি ও তিনি উপস্থিত থাকবেন।
২৭ নভেম্বর থেকে ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব’
এরপর ২৭ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিসরের উচ্চাঙ্গ সংগীতউৎসব ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গসংগীত উৎসব-২০১৫’। এটির আয়োজন করছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। ২৭ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে বসবে এই বিশ্ব সুরের আসর। এবারের উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর স্মৃতির প্রতি। তিনি গত বছর এই উৎসব মঞ্চেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। দেশীয় শিল্পীদের পাশাপাশি উৎসবে যোগ দিতে এবারও বাংলাদেশে আসছেন বিভিন্ন দেশের নৃত্য ও উচ্চাঙ্গসংগীতের প্রবাদপ্রতিম কণ্ঠশিল্পী ও যন্ত্রশিল্পীরা।
আরও কনসার্টের প্রস্তুতি
এসব বড়বড় আয়োজনের পাশাপাশি ক্ষুদ্রাকৃতির বিভিন্ন অনুষ্ঠানও রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন শিল্পীর ব্যক্তিগত কনসার্টও রয়েছে। তাই সংগীতশিল্পীরা এখন রয়েছেন বেশ ব্যস্ততার মধ্যে। নিজের গান নতুন করে ঝালিয়ে নিতে ব্যস্ত সবাই। জেমস, আইয়ুব বাচ্চু, মাইলসসহ বিভিন্ন ব্যান্ড এবারের মৌসুমে থাকবে বেশ সরগরম। এ ছাড়া আঁখি আলমগীর, সেলিম চৌধুরী, পুলক, কনা, কিশোর, মমতাজসহ অনেক শিল্পীই কনসার্টের জন্য প্রস্তুত। সব মিলিয়ে সংগীত প্রিয়দের ভাষায়, এবারের শীত সংগীতে মাতার সময়।