বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৫ ০০:০০ টা

সুর হলো শেষ, রয়ে গেল রেশ

মোস্তফা মতিহার

সুর হলো শেষ, রয়ে গেল রেশ

পণ্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়া - ওস্তাদ জাকির হোসেন - পণ্ডিত শিবকুমার শর্মা

গতকাল ভোরে শেষ হলো ‘বেঙ্গল উচ্চাঙ্গ সংগীত উৎসব’। কিন্তু পাঁচ রাতের এই মহাযজ্ঞের রেশ এখনো রয়ে গেছে গুনগুনিয়ে বাজছে শ্রোতাদের হৃদয়ে। ওস্তাদ জাকির হোসেনের তবলার তাল, হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়ার বাঁশি, শিবকুমার শর্মার সন্তুর, ইরশাদ খানের সুরবাহার, রশিদ খানের খেয়াল, এন রাজনের বেহালা, ইউসুফ খানের সরোদের সুরে এখনো মুগ্ধ শ্রোতারা বুঁদ হয়ে আছেন। যথারীতি চতুর্থবারের এই আসরও বসেছিল ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে। শেষ রাতে সেতারে সুরবাহার পরিবেশন করেন ওস্তাদ বিলায়েত খাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র ইরশাদ খান, খেয়াল পরিবেশন করেন ওস্তাদ সুজাত খান, ওস্তাদ রশিদ খান ও সামিহান কশলকর।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় অনিমেষ বিজয় চৌধুরীর পরিচালনায় সিলেটের দল গীতবিতান-এর ধামার পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাপনী আয়োজন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সমাপনী রাতের উদ্বোধন করেন ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ফজলে হাসান আবেদ।

ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, বিনিয়োগ বোর্ডের এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ এ সামাদ। অতিথি ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের।

স্কয়ার টয়লেট্রিজের নিবেদনে ও বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে গত ২৭ নভেম্বর রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে বসে এই আসর।

মিনু হকের নৃত্য পরিচালনায় পল্লবী ড্যান্স একাডেমির শিল্পীদের দলীয় নৃত্যের মধ্য দিয়ে আসরের পর্দা উঠেছিল। উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

প্রথম রাতের আসরে সংগীত পরিবেশন করেন জয়াপ্রদা রামমূর্তি [কর্ণাটকি বাঁশি], রাহুল শর্মা [সন্তুর], কৌশিকী চক্রবর্তী [খেয়াল], পণ্ডিত কুশল দাস [সেতার] এবং বিদুষী বম্বে জয়শ্রী [কর্ণাটকি সংগীত]।

দ্বিতীয় রাতের আসর শুরু হয় বেঙ্গল পরম্পরা সংগীতালয়ের শিক্ষার্থী অভিজিতের ধ্রুপদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এ রাতে সরস্বতী বীণায় সুরের ইন্দ্রজালে সুরপ্রেমীদের মোহাবিষ্ট করেন জয়ন্তী কুমারেশ। দ্বিতীয় রাতের মূল আকর্ষণ ছিলেন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী।

তৃতীয় রাতের আসরে রাগ রাগেশ্বরী ও বানারশি ঠুমরির নৈপুণ্যে শাস্ত্রীয় সংগীতকে অনন্য এক উচ্চতায় উন্নীত করেন প্রথমবার বাংলাদেশে আসা শিল্পী ড. এন রাজন। এ ছাড়া ঠুমরি, টপ্পা এবং নাট্যসংগীত পরিবেশন করেন বিদুষী শ্রুতি সাদোলিকর। এ ছাড়া অন্যরা তো ছিলেনই।

চতুর্থ রাতে প্রদর্শিত হয় ‘নিসর্গের আঁকিয়ে’ শীর্ষক আট মিনিটের তথ্যচিত্র। চতুর্থ রাতের মূল আকর্ষণ ছিলেন ওস্তাদ জাকির হোসেন।

এই আসরে শাস্ত্রীয় সংগীতের বিভিন্ন পরিবেশনায় আরও অংশগ্রহণ করেন জয়াপ্রদা রামমূর্তি [বাঁশি], বালমুরালিকৃষ্ণ [কণ্ঠ], রনু মজুমদার (বাঁশি), শোভা মুডগাল [কণ্ঠে খেয়াল], সাদলিকার [কণ্ঠ], জয়ন্তী কুমারেশ [সরস্বতী বীণা], শুভায়ু সেন মজুমদার [এস্রাজ] প্রমুখ। গত বছর বক্তৃতারত অবস্থায় চিত্রশিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে মারা যান। তাই এবারের আসর তাকে উৎসর্গ করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর