শনিবার, ১২ মার্চ, ২০১৬ ০০:০০ টা

অপেক্ষার মিষ্টি ফল...

শোবিজ ডেস্ক

অপেক্ষার মিষ্টি ফল...

অপেক্ষার ফল না কি মিষ্টি। ব্রি লারসনের ক্ষেত্রে তাই হলো। মাত্র ১০ বছর বয়সে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনে অভিনয়ের শুরু। তখন  থেকেই অস্কার জিতার স্বপ্ন লেপ্টে ছিল তার চোখে। ২৬ বসন্তে এসে সে স্বপ্ন সত্যি হলো। ‘সেরা চলচ্চিত্র অভিনেত্রী’র শীর্ষ পুরস্কার জিতে নিলেন তিনি। ৮৮তম অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস বিজয়ী লারসন রুম চলচ্চিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য প্রথমবারের মতো মনোনয়ন পেয়েই জিতে নিয়েছেন অনেক সাধনার অস্কার পুরস্কার। অথচ সাধারণ মানুষের মধ্যে খুব কম লোকেই ব্রি লারসন সম্পর্কে জানতেন। তবে হলিউড ইন্ডাস্ট্রির খোঁজখবর যারা নিয়মিত রাখেন, তারা এই তরুণীর সাফল্যে খুব অবাক হননি। কারণ, সম্ভাব্য বিজয়ীর তালিকায় তারা লারসনকেও রেখেছিলেন। আর সুঅভিনেত্রী হিসেবে তিনি গোল্ডেন গ্লোব, স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড অ্যাওয়ার্ড এবং বাফটার মতো বড় বড় পুরস্কার তো আগেই জিতে নিয়েছেন।

মানসিক টানাপড়েনের পরিপূর্ণ থ্রিলার চলচ্চিত্র রুম-এ লারসনের চরিত্রটি ছিল একজন অপহৃত মায়ের। যিনি বন্দী অবস্থায় একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। ওই চরিত্রটি সম্পর্কে লারসনের অভিমত, রুম ছবিতে কাজের মধ্য দিয়ে তিনি অবিবাহিত মায়েদের সম্পর্কে নতুন করে উপলব্ধি অর্জন করেছেন, নিজের মা সম্পর্কেও। কারণ, তিনিও ছিলেন এ রকম একজন একাকী মা।

বিজয়ী হিসেবে নিজের নামের ঘোষণা শুনে তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় লারসন বলেন, ‘মনে হচ্ছে বিস্ময়কর কোনো স্বপ্নের দেশে পৌঁছে গেছি আমি।’

লারসনের কথায় রুম ছবির মূল চরিত্রে কাজ করাটা ছিল তার কাছে ‘মনস্তাত্ত্বিক এক অন্তর্যাত্রা’। চরিত্রটিকে বাস্তব ও নিখুঁত করে তোলার জন্য নারীর ওপর যৌন নিপীড়নের প্রভাব এবং ব্যক্তির ওপর একাকী বন্দিজীবনের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানার জন্য তিনি ছয় মাস ধরে পড়াশোনা করেছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা করেছেন মনস্তত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে। এমন বন্দিত্বকালে ব্যক্তির শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি, মাসের পর মাস সূর্যের আলোবিহীন জীবন কাটানো এবং প্রায় অনাহারে থাকার কারণে শারীরিক ক্ষয় প্রভৃতি বিষয়েও জেনেছেন যতটা সম্ভব। এমন পরিস্থিতিতে মস্তিষ্কের কাজের ধরনের বিষয়টিও বাদ যায়নি তার চুলচেরা অনুসন্ধান থেকে। ছবির শুটিংয়ের কাজ শুরু করার আগে এক মাস বাইরের জগৎ থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রেখেছিলেন লারসন। নীরবতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য দিনে দুবার ধ্যান করতেন। সম্ভবত এতটা খাটাখাটনির স্বীকৃতি হিসেবেই তার ঝুলিতে সহজেই জমা পড়েছে হলিউডের সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার।

লারসনের জন্ম ১৯৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টোয়। আট বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে চলে যান লস অ্যাঞ্জেলেসে। বছর দু-এক পরে থারটিন গোয়িং অন থার্টি এবং স্লিপওভার নামে দুটি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। এরপর আরও কয়েকটি ছবিতে কাজ করেন। কিন্তু অভিনয়ের জন্য পুরস্কার পাওয়া শুরু ২০১৩ সালে শর্ট টার্ম টুয়েলভ ছবির মধ্য দিয়ে। ক্যামেরার পেছনেও কাজ করার অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন এ বয়সেই। ২০১১ সালে পরিচালনা করেন ওয়েটিং এবং পরের বছর দ্য আর্ম নামের দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের। এখন আরও সমৃদ্ধির পথে হাঁটছেন লারসন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর