সোমবার, ৯ মে, ২০১৬ ০০:০০ টা

সিনেমা হলের সুদিন ফিরছে

আলাউদ্দিন মাজিদ

সিনেমা হলের সুদিন ফিরছে

দীর্ঘদিন ধরে সিনেমা হলে যাচ্ছে না দর্শক। কারণ পরিবেশ ও আধুনিক প্রযুক্তির অভাব। এতে চলচ্চিত্র ব্যবসা হুমকির মুখে পড়েছে। এই সমস্যা কাটাতে খুব একটা উদ্যোগ ছিল না কখনো। তবে চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জাজ মাল্টিমিডিয়া ২০১২ সালে বেশকিছু সিনেমা হলে ডিজিটাল প্রজেক্টর স্থাপন করে এবং ওই বছরই প্রতিষ্ঠানটি এদেশে প্রথম ডিজিটাল প্রযুক্তির ছবি ‘ভালোবাসার রঙ’ মুক্তি দেয়। যদিও জাজের ডিজিটাল প্রজেক্টর এবং এর ভাড়া নিয়ে অনেক সিনেমা হল মালিক এবং চলচ্চিত্র নির্মাতার মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ছিল। তারপরও দর্শক এবং চলচ্চিত্রকাররা একে জাজের অগ্রণী ভূমিকা বলে মত প্রকাশ করে। বর্তমানে জাজ মাল্টিমিডিয়া সিনেমা হল উন্নয়নে নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ও মানসম্মত করে গড়ে তুলবে ২৫০টি সিনেমা হল। নির্মাণ করবে দুটি সিনেপ্লেক্স। এছাড়াও জাজের রয়েছে আরও অনেক কর্মপরিকল্পনা।

জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ জানিয়েছেন ঈদের আগেই ২৫০টি সিনেমা হল ডিজিটাল করছে তার প্রতিষ্ঠান। বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলের মধ্যে ৫০টি ভাড়া নিয়ে চালু করা হবে। সিনেমা হলগুলোতে কেডিয়ামভিত্তিক এক্সিপ্টেড সার্ভার চালু হবে। এতে পাইরেসি  রোধ করা যাবে। চারটি সিনেপ্লেক্সও নির্মাণ করা হবে। পয়লা মে থেকে সিনেমা হলের প্রজেক্টর ভাড়াও কমানো হয়েছে। টিকিটপ্রতি ৩ টাকা করে মেশিন চার্জও প্রত্যাহার করা হয়েছে। সিনেমা হলকে এ, বি, সি, ডি এই চার ক্যাটাগরিতে ভাগ করে এর মেশিন ভাড়া পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। ‘এ’ ক্যাটাগরির ৪৫টি সিনেমা হলের মেশিন ভাড়া হবে ১০ হাজার, বি ক্যাটাগরির ২৫টি সিনেমা হলের ৮ হাজার, সি ক্যাটাগরির ৫৫টি সিনেমা হলের ৬ হাজার এবং ডি ক্যাটাগরির ১২৫টি সিনেমা হলের মেশিন ভাড়া হবে ৫ হাজার টাকা করে। দ্বিতীয় ও পরবর্তী সপ্তাহে এই ভাড়া হবে ‘এ’ ও ‘বি’ ৫ হাজার এবং ‘সি’ ও ‘ডি’ ক্যাটাগরির সিনেমা হলে ৩ হাজার টাকা করে। ডিজিটাল টিকিটিং সিস্টেমও চালু করবে জাজ। ঈদ থেকে এই ব্যবস্থাও চালু হবে। আবদুল আজিজ বলেন, চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী জাজ মাল্টিমিডিয়া সিনেমা হল প্রতি এনকোডিং চার্জ নির্ধারণ করে ১২ হাজার টাকা। কিন্তু প্রযোজক নামধারী কিছু লোক এর বিরোধিতা শুরু করে। এতে প্রযোজক সমিতির সাবেক নেতাদের নিয়ে এই চার্জ কমানোর জন্য বৈঠক করি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। কারণ তাদের বিরোধিতা হচ্ছে নোংরা পলিটিক্স মাত্র। এই নোংরা পলিটিক্স থেকে সাধারণ নির্মাতাদের রক্ষা ও চলচ্চিত্রের উন্নয়নে নতুন এসব উদ্যোগ

গ্রহণ করেছি। আগামীতে আরও নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগুব। এদিকে চলচ্চিত্রকার ও সিনেমা হল মালিকদের মধ্যে কেউ কেউ বলছেন সিনেমা প্রজেক্টরের পরিবর্তে ভিডিও প্রজেক্টর স্থাপন করেছে জাজ এবং অযৌক্তিক হারে ভাড়া আদায় করছে। এতে মন্দাবস্থা থেকে চলচ্চিত্র ব্যবসার উত্তরণ সম্ভব হচ্ছে না। আবার অনেকের কথায় জাজের বিরুদ্ধে এই বিরোধিতার কোনো অর্থ নেই। কারণ বিশ্বের সর্বত্র ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রদর্শন শুরু হলেও বাংলাদেশ এনালগ পদ্ধতি নিয়েই পড়েছিল। কেউ নতুন প্রযুক্তি নিয়ে তখন কিংবা এখনো এগিয়ে আসেনি। ২০১২ সালে জাজ মাল্টিমিডিয়া ডিজিটাল প্রযুক্তির চলচ্চিত্র নির্মাণ ও প্রদর্শন ব্যবস্থা নিয়ে এগিয়ে এলে ঢালিউডে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণ

শুরু হয়। চলচ্চিত্রকারদের কথায় জাজ মাল্টিমিডিয়া বর্তমানে যে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে তাতে একদিকে যেমন সিনেমা হলে দর্শক ফিরবে তেমনি চলচ্চিত্র ব্যবসায় প্রাণের সঞ্চার হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর