দেশীয় চলচ্চিত্রের মন্দাবস্থার সুযোগে বাংলাদেশে কলকাতার ছবির একচেটিয়া বাজার তৈরির অপচেষ্টায় ক্ষোভ জানিয়েছেন অভিনেতা ফারুক। তার কথায় পার্শ্ববর্তী দেশের বিরুদ্ধে আমি নই। তারা স্বাধীনতা যুদ্ধসহ নানা সময়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তাই বলে অযৌক্তিক কোনো আবদার তো মেনে নেওয়া যায় না। নিয়মনীতিবিহীন যৌথ প্রযোজনা আর সম্প্রতি কলকাতার একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা সংস্থা এককভাবে বাংলাদেশে মুক্তির জন্য ছবি নির্মাণের যে উদ্যোগ নিয়েছে তাতে আমি উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমার প্রশ্ন হলো— কার স্বার্থে এই উদ্যোগ? পরাধীনতার মালা গলায় পরার জন্য তো আমরা দেশ স্বাধীন করিনি। ফারুকের কথায় সাফটা চুক্তির আওতায় সাফটাভুক্ত দেশের সঙ্গে যদি ছবি নির্মাণ বা বিনিময় করতে হয় তাহলে শুধু ভারত কেন? সাফটাভুক্ত অন্য দেশগুলোর সঙ্গেও তো চলচ্চিত্র নির্মাণ বা বিনিময় হতে পারে। আমি বলব বর্তমান সরকার চলচ্চিত্রবান্ধব। আমাদের প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক। বর্তমানে যৌথ প্রযোজনা, সাফটা চুক্তির অধীনে বিনিময় কিংবা নামেমাত্র আমাদের শিল্পী নিয়ে বাংলাদেশের জন্য ভারত চলচ্চিত্র নির্মাণ করছে বা করতে যাচ্ছে তা কতটা নিয়মনীতি বা আইন-কানুন মেনে হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা দরকার সরকারের।
আমাদের স্বপ্নের আর গর্বের চলচ্চিত্র শিল্পকে ধ্বংস করার অধিকার কারও নেই। আমি বলব কেউ যদি মনে করে আমিই শুধু দুষ্টুমি জানি তাহলে সেটি হবে বড় ভুল। দুষ্টুমি আমরাও জানি। আর আমরা যদি একবার দুষ্টুমি শুরু করি তাহলে কেউ আর রেহাই পাবে না।
আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, এদেশের চলচ্চিত্র শিল্প এদেশের জনগণের। এদেশের সংস্কৃতিকে কখনো বিকিয়ে দিতে দেব না। আসুন সবার স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে আমরা নিয়মনীতি মেনে কাজ করি। আমার কথা হলো আমাদের দুপারে নাচতে কোনো আপত্তি নেই। তবে তা হতে হবে যথাযথ নিয়মে। এক্ষেত্রে প্রখ্যাত শিল্পী ভূপেন হাজারিকার একটি গান দিয়ে শেষ করতে চাই- ‘এপার ওপার কোন পারে জানি না, ওহ আমি দুই নদীতে আছি। শঙ্খচিলের ভাসিয়ে ডানা ওহ আমি দুই নদীতে নাচি...।’