সৈয়দ আবদুল হাদী
আমার যতদূর মনে পড়ছে, আবদুল জব্বারের সঙ্গে আমার প্রথম দেখা হয় ষাটের দশকের প্রথমদিকে এফডিসিতে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বেতারে প্রায় প্রতিদিনই দেখা হতো তার সঙ্গে। গান আর আড্ডায় কাটিয়ে দিয়েছি অনেকটা সময়। ওই সময় আমি, আবদুল জব্বার, মাহমুদ উন নবী, বশির আহম্মেদ, খন্দকার ফারুক আহমেদ আমরাই বাংলা চলচ্চিত্রে বেশি গান করতাম। আজও আমার চোখে ভাসে সে দিনগুলো। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন কিংবদন্তি।
সৈয়দ হাসান ইমাম
’৬৯-এর গণ আন্দোলন, ’৭১-এর স্বাধীনতা সংগ্রামে আমরা একই সঙ্গে কাজ করেছি। ওই সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে একটি রুমের মধ্যে আমরা নাটকের রেকর্ডিং করতাম ও আবদুল জব্বাররা গানের রেকর্ডিং করতেন। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান বলে প্রকাশ করা যাবে না। ওই সময় বাংলা চলচ্চিত্রে অসংখ্য জনপ্রিয় গানের জন্ম দেয় আবদুল জব্বার। এই দেশের জন্য, আমাদের গানের জগতে তিনি যা রেখে গেছেন, তা অনস্বীকার্য।
খুরশিদ আলম
জব্বার ভাইয়ের সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি আছে। আমার গানের জগতে প্রবেশ তার হাত ধরেই। ১৯৬৫ সালের কথা। কামাল সাহেব বলে একজন ভদ্রলোক ছিলেন। তার বাসায় রাতে অনেক শিল্পীর আড্ডা হতো। আমার সেই সময়ে কোনো কাজ ছিল না। এক রাতে আমিও কামাল সাহেবের বাসায় গিয়েছিলাম। কিছু গান গাইলাম। জব্বার ভাইয়ের আমার গানগুলো ভালো লাগে। আমাকে টাঙ্গাইলে একটি শো করতে বলা হয়। সেই যে তার সঙ্গে পথচলা শুরু হলো। তিনি ব্যক্তি মানুষ হিসেবে অনেক ভালো ছিলেন। ছিলেন গানের কিংবদন্তি।
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী
আবদুল জব্বার ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রধান সৈনিক। ১৯৬৫ সালের ১১ জুন রেডিওতে আমার প্রথম গানের রেকর্ডিং ছিল। আমার গান গাওয়ার পর শুনতে পারলাম আবদুল জব্বার এসেছেন। ওই সময়ই তিনি অনেক জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ছিলেন। তিনি আমাকে যে স্নেহ করতেন তা বলে প্রকাশ করতে পারব না। জন্মিলে মরিতে হবে, এটাই সত্য। কিন্তু এমন একজন গুণী শিল্পীর চলে যাওয়া মেনে নিতে আসলে কষ্ট হচ্ছে। এ ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়।