আজাদ আবুল কালাম একাধারে একজন অভিনেতা, নাট্যকার এবং নির্মাতা। তবে মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবেই তিনি বেশি পরিচিত। অভিনয়ের বাইরে যেটুকু সময় পান সে সময় নাটক লেখেন কিংবা নির্মাণকাজে ব্যস্ত থাকেন। এই গুণী অভিনেতার সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় ও ব্যস্ততা নিয়ে আজকের আলাপন-
ব্যস্ত মনে হচ্ছে ... কোনো নাটকের শুটিংয়ে যাচ্ছেন?
নাটকের শুটিংয়ে নয়, তবে একটি সিরিয়াল বিষয়ে অতিথি হিসেবে কথা বলতে চ্যানেল আইয়ের অনুষ্ঠান ‘তারকা কথনে’ যাচ্ছি। রাজিবুল ইসলামের ‘হিং টিং ছট’ নামের একটি নতুন সিরিয়াল শিগগিরই শুরু হতে যাচ্ছে। এই সিরিয়াল বিষয় নিয়ে আড্ডায় আমিসহ অন্য কুশীলবরাও থাকবেন।
সাম্প্রতিক অভিনীত নাটকগুলো সম্পর্কে জানতে চাই...
ঈদে অনেক নাটকই করেছি। সব নাম এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না। তবে অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বলতে গেলে মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের ‘দাস কেবিন’, ময়ূখ বারীর ‘উচ্চতর হিসাব বিজ্ঞান’, মোস্তফা কামাল রাজের ‘ত্রিকোণমিতি’, সুমন আনোয়ারের ‘নায়িকা’, নিয়াজ মাহবুবের পরিচালনায় টেলিফিল্ম ‘গল্পের ইলিশ’। এছাড়াও এসএটিভিতে আরিফ খানের পরিচালনায় ‘টেক এ ব্রেক’ নামের একটি সিরিয়াল করেছি।
‘উচ্চতর হিসাব বিজ্ঞান’ ও ‘দাস কেবিন’ নিয়ে কিন্তু অনেকেই প্রশংসা করেছেন...
এবার যতগুলো কাজ করেছি তার মধ্যে ‘উচ্চতর হিসাব বিজ্ঞান’ এবং ‘দাস কেবিন’ আমার কাছেও ভালো লেগেছে। তবে একেকটা কাজ একেক রকম। ‘উচ্চতর হিসাব বিজ্ঞান’ নাটকে দুইটি কেন্দ্রীয় চরিত্র রয়েছে। এই নাটকে দেখা যায়, কে ঘুষ খাবে কি খাবে না- এই নিয়ে চুক্তি। যেখানে একজন আরেকজনকে বোঝানোর চেষ্টা করেন সততার আপেক্ষিক ব্যাখ্যা। একজন পরাজিত হচ্ছে আর অন্যজন দিতে চাচ্ছে, যদিও সে অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম নয়। অন্যদিকে মানুষের অস্থিমজ্জায় সাম্রাজ্যবাদ ঢুকে যাওয়ার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে ‘দাস কেবিন’ নাটকটিতে। কেউ কেউ আছে এখনো সাম্যবাদের স্বপ্ন বুকে লালন করে, এখনো বিশ্বাস করে বিপ্লব আসবে। সমাজের ভিতরকার শ্রেণি বিভাজন এবং মানুষের সঙ্গে মানুষের শ্রেণিগত পার্থক্যের পটভূমিতে এর কাহিনী গড়ে উঠেছে।
শুনেছি বিটিভিতে এবং মাছরাঙায় আপনার লেখা দুটি ধারাবাহিক প্রচার হচ্ছে ...
হুমম ... বিটিভিতে ‘সফদার ডাক্তার লেন’ এবং ‘মহল্লাবিডি ডটকম’ নামে দুটি ধারাবাহিক প্রচার হচ্ছে। আমি অভিনয়ও করেছি। দুটো নাটকই পলিটিক্যাল স্যাটার আর হাসি কমেডির প্রেক্ষাপটে লেখা।
সাম্প্রতিক সময়ে মঞ্চনাটক ‘রিজওয়ান’ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে ... এটি নিয়ে আপনার কি অভিমত?
আসলে ‘রিজওয়ান’ একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এটি একটি সাময়িক আলোচনার বিষয়। কেউ বলছে দেখতেই হবে, না দেখলে কেমন দেখায়! সেই প্রেক্ষিতে অনেকে দেখছে। ‘রিজওয়ান’ নিয়ে সবাই নিজের ইচ্ছমতো আলোচনা করছে। আসলে বাংলাদেশে মঞ্চনাটক কেমন হচ্ছে সেটা তো অনেকেই জানে না। আমি মনে করি, এক একটা নাটকের ৭ দিন বা ১০ দিন কিংবা মাসের ৩০ দিন ধরেই শো চলা উচিত। একটা নাটক তৈরি করার পেছনে কিন্তু অনেক কষ্ট, শ্রম আর অর্থ খরচ হয়। তাই মাসব্যাপী একটা মঞ্চনাটকের শো হলে সেই দল কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে।
সামনে কোনো নতুন পরিকল্পনা আছে কি?
আমি নাটক বানাই, লিখি আর অভিনয় করি। তবে নতুন একটি মঞ্চনাটক নামানোর চেষ্টা করছি। লেখালেখির কাজ চলছে। নাটকে বা ফিল্মে অভিনয় করছি, পরিচালনা করার চেষ্টা করছি আর কি! এভাবে সামনেও করে যাব।