বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

টিভি নাটকে পালাবদল...

টিভি নাটকে পালাবদল...

টিভি নাটকের পালাবদল প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধরে। বিটিভিযুগীয় সময় থেকে এই সময়ে অনেক রঙিন মুখের আবির্ভাব ঘটেছে মিডিয়ায়। মিডিয়া জগতের এই দীর্ঘ পথপরিক্রমায় নতুন প্রজন্মের বেশ কিছু অভিনয়শিল্পী নিজস্ব অভিনয়শৈলী দিয়ে দর্শকের নজর কেড়েছেন। টিভি নাটকে প্রজন্মের সেই পালাবদলের গল্প তুলে ধরেছেন —পান্থ আফজাল

 

একসময় একটাই চ্যানেল ছিল—বাংলাদেশ টেলিভিশন। নাটক ছিল ভীষণ মানসম্মত। পারলে না রুমকী, সকালসন্ধ্যা, যোগাযোগ, সংশপ্তক এগুলো ছিল অমর সৃষ্টি। তখন দর্শকপ্রিয় এসব নাটকে অভিনয়ে ছিলেন জাঁদরেল সব অভিনেতা-অভিনেত্রী। তাদের অভিনীত একটার পর একটা মন ভোলানো নাটক আমরা দেখেছি। সেই আশির দশকে হুমায়ূন আহমেদ নাট্য জগতে এক বিপ্লব এনেছিলেন। হুমায়ূন কন্যা শিলা, আসাদুজ্জামান নূর, বিপাশা, মেহের আফরোজ শাওন, জহিরুদ্দিন পিয়ার, ত্রপা মজুমদার, তারানা হালিম, শমী কায়সার, নিমা রহমান, তারিক আনাম, হুমায়ুন ফরীদি, মিমি, জাহিদ হাসান, অপি করিম, আজিজুল হাকিম, সেলিম, তমালিকা, ঈশিতা, তারিন, টনি ডায়েস, মেঘনা, ইলোরা গহর আরও অনেকেই ছিলেন একসময় ছোটপর্দার উজ্জ্বল তারকা। আফজাল-সুবর্ণা জুটির ক্রেজ তখন তুঙ্গে। অভিনয় ছিল মানসম্মত। নাটক তৈরি হতো কম। কিন্তু নাটক হতো মনে রাখার মতো অভিনয় শৈলীসম্পন্ন। মনে হতো যেন নিজের জীবনে নিজেদের পরিবারে এই ঘটনাপ্রবাহ ঘটে চলেছে। ২৪ ইঞ্চি টিভির সামনে মন্ত্রমুগ্ধের মতো বসে থাকা হতো। পরবর্তী সময়ে কালে কালে অনেক অভিনয় শিল্পীই মিডিয়ায় এসেছেন। কাজ করেছেন বা করছেন নতুন নতুন শিল্পীরা। কিন্তু এসব প্রজন্মের শিল্পীকে নিয়ে আগ্রহ বা তাদের পরিচিতি নিয়ে দর্শকদের মাঝে আগ্রহ খুবই কম। এই হাল আমলে সিনিয়র অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নামের পর স্বাভাবিকভাবে কিছু তরুণ প্রজন্মের অভিনয় তারকারা দর্শক কাড়তে সক্ষম হচ্ছেন। বয়সে ছোট হলেও সিনিয়রদের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই কাজ করছেন তারা। জনপ্রিয়তার দিক থেকেও পিছিয়ে নেই অনেক সিনিয়রের থেকে। এসব শিল্পীর নামের তালিকায় আছেন মিশু সাব্বির, মৌসুমী হামিদ, ঊর্মিলা, মেহজাবিন, তৌসিফ, ফারিয়া, সিয়াম, জোভান, নাদিয়া খানম, টয়া, ইরফান সাজ্জাদ, সাফা, সাবিলা নূর, সুদীপ বিশ্বাস দীপ, অ্যালেন শুভ্র প্রমুখ।

এরা প্রত্যেকেই আলাদা করে দর্শক নজর কাড়ছেন। নতুন প্রজন্মের অসংখ্য যুবকের হৃদয় কাঁপানো তারকা মেহজাবিন চৌধুরী। সম্প্রতি ‘বড়ছেলে’ নাটকের রিয়া চরিত্র করে তিনি লাইমলাইটে। মুমতাহিনা টয়া তরুণ প্রজন্মের তারকা মডেল ও অভিনেত্রী। তিনি পুরোদস্তুর অভিনেত্রী ও মডেল। টয়া অভিনয় করেছেন বেশ কিছু স্বল্পদৈর্ঘ্য ও ওয়েব সিরিজ। সম্প্রতি সৈকত নাসিরের পরিচালনায় কাজী শুভ ও বেলাল-পূজার দুটি গানে কাজ করছেন। কমেডি, রোমান্টিক ও থ্রিলার সব ধরনের গল্পে কাজ করে নিজের জাত চিনিয়েছেন মিশু সাব্বির। টিনএজদের কাছেও বেশ কদর রয়েছে তার। ঈদে তাই মিশু সাব্বির হাজির হচ্ছেন ভিন্নভাবে। দেখতে মিষ্টি আর অভিনয়েও পারদর্শী ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর। যে কোনো বিষয় খুব সহজেই মানিয়ে নেন নিজেকে। তাই নির্মাতারাও ঊর্মিলাকে নিয়ে কাজ করেন আগ্রহের সঙ্গে। অন্যদিকে অনবদ্য অভিনয়ের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন তৌসিফ। সেই সঙ্গে আলাদা করে বাড়িয়ে নিচ্ছেন ভক্ত-অনুসারীর সংখ্যাও। এই তরুণ বয়সেই অসম বয়সী সোহানা সাবার সঙ্গে অভিনয় করেছেন। তরুণ ছেলেদের ক্রাশ শবনম ফারিয়া। ভালো করেন অভিনয়। চরিত্রের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে নিতে পারেন নিজেকে। তাই তো বিশেষ দিবসে নির্মাতাদের মধ্যেও ফারিয়ার আগ্রহ একটু বেশিই লক্ষ্য করা যায়। তরুণ প্রজন্মের অভিনেতাদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা আছে সিয়াম আহমেদের। এই ঈদে বেশ কিছু ভিন্ন কাজ করে ইতিমধ্যেই আলোচনায় এসেছেন সিয়াম। সম্প্রতি তিনি জাজের প্রযোজনায় রায়হান রাফির ‘পোড়ামন-টু’ ছবিতে পূজা চেরীর সঙ্গে জুটি বেঁধে কাজ করছেন। সম্প্রতি তরুণ প্রজন্মের কাছে আরেক পরিচিত নাম সুদীপ বিশ্বাস দীপ। বিকাশ নামক একটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ঈদে তার ‘আমরা ফিরব কবে’, ‘ক্যাফে ৯৯৯’ নাটক নতুন করে সবার মাঝে আলোচনায় এসেছে।

প্রজন্মের কাছে আলেন শুভ্র আরেকজন জনপ্রিয় তারকার নাম। তার অভিনয় দক্ষতায় মুগ্ধ তরুণ প্রজন্ম। তরুণ প্রজন্মের কাছে এইসময়ে জনপ্রিয়তার কাতারে রয়েছেন সালমান মুক্তাদীর, জোভান, স্পর্শিয়া, আইরিন আফরোজ, শামীম, নাদিয়া খানমের মতো প্রতিশ্রুতিশীল কিছু তারকা। তাদের অভিনয় এই সময়ে তরুণ নাট্যকার, নির্মাতা ও দর্শকদের কাছে দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। বিশেষ করে জোভান ও নাদিয়া খানমের জুটিতে কিছু নাটক ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র সবার মাঝে দারুণ প্রশংসিত হয়েছে।

‘ফেসবুক পারে না?’ বা ‘আমাদের তোতা পাখিটা কোথায় রে?’ প্রাণের বিজ্ঞাপনচিত্রের এই দুই সংলাপ দিয়ে সাফা কবির পেয়েছেন তারকা খ্যাতি। আদনান আল রাজীবের টেলিফিল্ম ‘১৮’ দিয়ে প্রথম ছোট পর্দায় যাত্রা শুরু সাফার। সাফা কবিরকে বলা যায় এই সময়ের সম্ভাবনাময় মডেল-অভিনেত্রী।

শখ টিনএজ চরিত্রগুলোতে বেশি মানানসই-এ ধারণা ভেঙে দিতে এর বাইরেও কয়েকটি নাটকের কাজ করেছেন শখ। বড়পর্দায় দুটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। নাবিলা মূলত মিডিয়াতে তার পরিচিতিটা উপস্থাপিকা হিসেবেই। অমিতাভ রেজার আয়নাবাজি ছবি করে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর