শনিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

শুভর এখন শুভদিন...

আলাউদ্দীন মাজিদ

শুভর এখন শুভদিন...

‘ঢাকা অ্যাটাক’ সাফল্যের শিখর ছুঁয়েছে। এই সফলতা এখন আমাকে আরও ভালো কিছু করার তাগিদ আর আনন্দে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। আমি আসলে কখনো নায়ক হতে চাইনি। নির্মাতাদের মন রক্ষার জন্যই এতদিন নায়ক হয়েছিলাম। আমি নায়ক শব্দটি কখনো পছন্দ করি না। আমার লক্ষ্য হলো চরিত্রের ভিতর প্রবেশ করে নিজের মধ্যে চরিত্রটি পারফেক্টভাবে ধারণ করা এবং সেই চরিত্রে মিলে মিশে একাকার হয়ে যাওয়া। আর এই কাজটিই শতভাগ করতে পেরেছি ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবিতে। এখানে নির্মাতার দেওয়া পূর্ণ স্বাধীনতায় ভেসে ভেসে পৌঁছেছি চরিত্রের গভীরে। তখন আমি আর আমি ছিলাম না। আমি হয়ে গেছি ছবির মূল চরিত্র পুলিশ অফিসার শুভ। এখানেই আমার অভিনয়ের সার্থকতা। যার প্রমাণ দর্শক ইতিমধ্যে পেয়ে গেছেন। আর তাই ছবিটি দেখতে বার বার প্রেক্ষাগৃহের কড়া নাড়ছেন তারা।’ এমন আনন্দমাখা গর্বের দাবিদার এখন অভিনেতা আরিফিন শুভ। তার ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবিটি দর্শকের হৃদয় ছুঁয়েছে। ছবিটি দেখতে এখন প্রেক্ষাগৃহে দর্শকের হুড়োহুড়ি চলছে। মানে শুভর শুভদিন এসে গেছে। এমন শুভদিনের অনিন্দ্য সীমানায় ডানা মেলে শুভ উড়ে যেতে চান আরও বড় মাপের সাফল্যের শৃঙ্গে। তার কথায়-পরিশ্রমের সঠিক মূল্যায়ন সব কষ্ট দূর করে দেয়। খুশিতে মন ভরে যায়। এমন একটি ক্ষণের জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকেন শিল্পীরা। ‘ঢাকা অ্যাটাক’ আমাকে সেই সফলতা এনে দিয়েছে। চারদিকে এখন শুধু ‘ঢাকা অ্যাটাক’ নিয়ে মুখরতা। ফেসবুক খুললে দর্শক-ভক্তের শুভেচ্ছার শেষ নেই। আমি সত্যিই এখন স্বপ্ন আর স্বর্গরাজ্যে বাস করছি।’ গত শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে আরিফিন শুভ অভিনীত চলচ্চিত্র ‘ঢাকা অ্যাটাক’। একটি ভালো ছবির প্রায় সব উপাদান থাকায় দর্শকদের মনে ধরেছে ছবিটি। হলগুলোর টিকিট কাউন্টারে দর্শকদের লম্বা লাইনই এর প্রমাণ দেয়। হল মালিকরাও বলছেন, উৎসব ছাড়া এমন চিত্র খুব একটা দেখা যায় না। দর্শকদের চাপ সামলাতে অনেক প্রেক্ষাগৃহে অতিরিক্ত চেয়ারও বসানো হয়েছে। সব মিলিয়ে চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নির্মাতা দীপংকর দীপন তার প্রথম ছবি দিয়েই বক্স অফিসে সাফল্যের ঝাঁকুনি দিতে পেরেছেন। দেশীয় ছবির দুর্দিনে তিনি জাদুকরি নির্মাণ দিয়ে নিজেকে সাফল্যের তখতে বসিয়েছেন। চলচ্চিত্রশিল্পে আশা জাগানিয়া সুবাতাস বইয়ে দিয়েছেন। ‘ঢাকা অ্যাটাক’ চলচ্চিত্রে পুলিশ অফিসার শুভর বিপরীতে সাংবাদিক চৈতী চরিত্রে অভিনয় করেছেন মাহিয়া মাহি।

জয়ের আনন্দে উদ্বেলিত অভিনেতা  শুভ বলেন, ‘ঢাকা অ্যাটাক’ নিয়ে শুরু থেকে আশাবাদী ছিলাম। ছবির গল্প, চরিত্র, নির্মাণ ও স্থান ছিল বৈচিত্র্যে ভরা। বোম নিষ্ক্রিয় ইউনিটের সদস্য, পুলিশ কমিশনার, সোয়াত ও গোয়েন্দা কর্মকর্তা, সাংবাদিক— সব ধরনের চরিত্রই আছে ছবিতে। এর সঙ্গে যুক্ত থাকা প্রতিটি মানুষ প্রচুর শ্রম দিয়েছেন। সবার কঠোর পরিশ্রমে একটি ভালো ছবি নির্মিত হয়েছে।’ ছবিটির সফলতার পেছনে ছিল এর নির্মাতা দীপেন, অভিনয় শিল্পী আর কলাকুশলীদের হাড় ভাঙা পরিশ্রম। চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত করতে দিন রাত ঘাম ঝরিয়েছেন শুভ। ডামি ছাড়াই উঠেছেন পাহাড়ের চূড়ায়। কাঁধে ছিল ভারী সব অস্ত্রশস্ত্র। ছবির অ্যাকশন দৃশ্যগুলোতে ব্যবহার করা হয়েছে পুলিশের ব্যবহৃত ৪৫ পাউন্ড ওজনের বোমা স্কোয়াডের বিশেষ পোশাক, পাঁচ কিলোগ্রাম ওজনের হেলমেট। শুভর কথায় ‘যারা ছবিটি দেখেছেন, তার ভালো বলতে পারবেন আমার কাজগুলো কতটুকু কষ্টের ছিল। ছবির একটি দৃশ্য এমন পাহাড়ের চূড়ায় একটি জঙ্গি আস্তানায় পুলিশি অভিযান চালিয়ে তা গুঁড়িয়ে দেবে। আর এ দৃশ্যটি বান্দরবানের গহিন জঙ্গলে ধারণ করা হয়েছে। এতটাই জঙ্গলের ভিতর, যেখানে মানুষ খুব একটা যায় না। যারা বান্দরবান ভ্রমণে আসেন, তারা মূলত নীলগিরি পর্যন্তই আসেন। কিন্তু আমরা সেখান থেকেও কয়েক ঘণ্টা হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে শুটিং স্পটে পৌঁছেছি। শুটিং স্পটে যাওয়ার রাস্তাও ছিল না। পথে বিষাক্ত সাপ, জোঁকসহ হিংস্র প্রাণীর ভয় ছিল। কিন্তু আমরা কেউ পিছপা হইনি। সেখানে আমরা টানা ছয় দিন শুটিং করেছি। ছবির শুটিং করতে গিয়ে এমন আরও অসংখ্য ঘটনার মুখোমুখি হয়েছি। অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে।’ এদিকে  ২০ অক্টোবর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘ঢাকা অ্যাটাক’ মুক্তি পাবে। শুভ দিনকে সঙ্গী করে বাংলাদেশের পর এবার বিশ্ব কাঁপাবেন আরিফিন,  ছবিটির মাহেন্দ্রক্ষণে এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়। আরিফিন শুভর এমন শুভদিনে তার চির সঙ্গী হয়ে থাকবেন চলচ্চিত্র দুনিয়া আর তার প্রিয় দর্শক-ভক্তরা। জয়তু শুভ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর