শিরোনাম
রবিবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ

এই তো সেদিন আমার বয়স ছিল দশ

আলী আফতাব

এই তো সেদিন আমার বয়স ছিল দশ

সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত জীবন্ত কিংবদন্তি সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলম খানের জন্মদিন আজ। জন্মদিন নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও দিনটিতে ঘরোয়াভাবে ছোট্ট আয়োজনের মধ্য দিয়ে জন্মদিন উদযাপন করা হবে। নতুন পরিকল্পনা ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে আজ তার আলাপন—

 

কেমন আছেন?

এই বয়সে যতখানি ভালো থাকা যায়। আরও অনেকটা সময় ভালো থাকতে চাই।

 

৭৪-এ পা দিচ্ছেন, বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে আজ?

কীভাবে যে ৭৪ বছরে পা দিতে যাচ্ছি বুঝতেই পারছি না। বার বারই শুধু মনে হচ্ছে এই তো সেদিন আমার বয়স ছিল মাত্র দশ বছর। কিন্তু দেখতে দেখতে জীবনের এতটা সময় পেরিয়ে গেল ভাবলেই অবাক হই। জন্মদিনে সবার কাছে দোয়া চাই যেন সুস্থ থাকি, ভালো থাকি। কিছু নতুন কাজের পরিকল্পনা আছে, সেগুলো যেন শেষ করে যেতে পারি। কাল চ্যানেল আইয়ে ‘সেরা গান’ অনুষ্ঠানে আমি থাকছি।

 

আপনার সুর করা একটি গান এখনো অপ্রকাশিত রয়ে গেছে।

তখন আমার বয়স মাত্র দশ। সেই বয়সে আমার বন্ধু মাকসুদুর রহমানের লেখা ‘নিরিবিলি সন্ধ্যায় দেখা হলে দুজনায়’ গাটির সুর করি এবং নিজেরাই কণ্ঠ দিই। ওই একটি গান এখনো প্রচার হয়নি। মুুকুল চৌধুরীর লেখা ‘ও মাধবী গো থেকো মোর অন্তরে’ গানটি আমার সংগীতের প্রথম প্রচার হওয়া মৌলিক গান। এ ছাড়া আমি পূর্ণাঙ্গ সংগীত পরিচালক হিসেবে ১৯৭০ সালে আবদুল জব্বার খান পরিচালিত ‘কাঁচ কাটা হীরে’ চলচ্চিত্রের কাজ করি। এ ছাড়া আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘সারেং বউ’ চলচ্চিত্রে আবদুল জব্বারের কণ্ঠের ‘ওরে নীল দরিয়া’ গানটি সেই সময় বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

 

একটু আজম খান প্রসঙ্গে আসতে চাই। আজম খানের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক কেমন ছিল?

 আমরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। আমার সঙ্গে আজম অনেক খোলামেলা কথা বলত। আমরা একই বিছানায় ঘুমাতাম। আমার পোশাক আজম পরত আমি ওর পোশাক পরতাম। আমরা জানতাম না কোনটা কার পোশাক। আমাদের ঘনিষ্ঠতা এত বেশি ছিল। আমার সঙ্গে আজম সবকিছুই শেয়ার করত।

 

তবে কি ‘জ্বালা-জ্বালা’ গানটাও আজম খানের মনের অবস্থা বুঝেই লিখেছিলেন।

অনেকটা তাই। হঠাৎ করে একদিন খেয়াল করলাম আজমের মধ্যে এক ধরনের হতাশা কাজ করছে। ওর হতাশা দেখেই মূলত ‘জ্বালা-জ্বালা’ গানটি আমি করেছিলাম। তারপর টানা দুই-তিন বছর আজম কোনো কাজ করেনি। কিন্তু তার হতাশা কী নিয়ে ছিল আমি এটা ওকে কখনো জিজ্ঞেস করিনি।

 

আজম খান প্রথম কোথায় শো করেছিলেন? আপনার কি সেটা মনে আছে?

মধুমিতা হলে তারা প্রথম শো করেছিল। আমি ওই শোতে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়েছিলাম। শো চলাকালীন দেখলাম ওরা চারটি গানই পরপর গাইছে। মানুষের কোনো ক্লান্তি নেই। তারা একই গান বার বার শুনছে। রাত ৯টা বাজার পর আজম বলল, ‘আমাদের কাছে আর গান নেই।’ আমার এখনো মনে পড়ে সেই দিনের কথা।

 

আজম খানের গান আপনার কেমন লাগত?

একটা ঘটনা বলি, একদিন সন্ধ্যায় দেখি বাড়ির সামনে অনেক রিকশা। সেখানে মানুষজন দাঁড়িয়ে গান শুনছে। আজম তখন বাসায় গান রিহার্সেল করছিল। এরপর রাতে আমি আজমকে বলেছিলাম, ‘শুধু গানের সুর শুনেই এত মানুষ! আবার শো করলে তো আরও ভিড় হবে।’  আমি বাসায় গান-বাজনা করলে রাস্তার মানুষের কখনো এত ভিড় হতো না। যখন দেখলাম ওর গান মানুষ মনোযোগ দিয়ে শোনে তখনই বুঝেছিলাম আজম একদিন অনেক জনপ্রিয় হবে।

 

জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর আজম খানকে কেমন দেখেছিলেন?

আজম খুব সাধারণ ছিল। ওর মধ্যে কোনো চাহিদা ছিল না।

সর্বশেষ খবর