বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বছরের শেষ দুই মাসে জমজমাট ছবির বাজার

আলাউদ্দীন মাজিদ

বছরের শেষ দুই মাসে জমজমাট ছবির বাজার

নভেম্বরের ৩ তারিখ ‘কপালের লিখন’,  ‘গেম রিটার্নস’ ও ১০ তারিখ ‘খাস জমিন’। ডিসেম্বরের ১ তারিখ ‘আসবোনা ফিরে’ ও ‘অবাস্তব ভালোবাসা’, ৮ তারিখ ‘মিনির কাবুলীওয়ালা’ ও ‘জল শ্যাওলা’, ১৫ তারিখ ‘অন্তরজ্বালা’ ও ‘পরানের পাখী’, ২২ তারিখ ‘হৃদয় ছোঁয়া কথা’ ও ‘ইনোসেন্ট লাভ’, ২৯ তারিখ ‘গহীন বালুচর’

 

ঢাকাই ছবির বাজার কী আবার প্রাণ ফিরে পাচ্ছে? এমন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে চলতি বছরের বেশ কিছু আলোচিত ও ব্যবসাসফল ছবি। শুধু দেশে নয়, বিদেশের মাটিতেও সাড়া জাগিয়েছে চলতি বছরে মুক্তি পাওয়া কয়েকটি ছবি। সত্তা, নবাব, ঢাকা অ্যাটাক, রাজনীতি, ডুব, দুলাভাই জিন্দাবাদ ছবিগুলো দর্শকের মধ্যে বেশ সাড়া জাগায়। নবাব আর ঢাকা অ্যাটাক এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দর্শকের মন কাড়ে। অক্টোবর মাসেই তিনটি ছবি ছিল আলোচনা আর সাফল্যের কেন্দ্রবিন্দুতে। এগুলো হলো- ঢাকা অ্যাটাক, দুলাভাই জিন্দাবাদ ও ডুব। প্রথম ছবিটি ইতিমধ্যে বিদেশেও সফল হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বছরের শেষ দুই মাস মানে নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মুক্তি পাচ্ছে আলোচিত বেশ কিছু ছবি। আর এসব ছবির মুক্তির মধ্য দিয়ে আগামী ২ মাস জমজমাট থাকছে ঢাকাই ছবির বাজার। চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির গতকালের তালিকা অনুযায়ী নভেম্বরে মুক্তির তালিকায় রয়েছে ৩ তারিখ ‘কপালের লিখন’, ‘গেম রিটার্নস’ ও ১০ তারিখ ‘খাস জমিন’। ১৭ ও ২৪ নভেম্বর মুক্তির জন্য এখন পর্যন্ত সমিতিতে কোনো ছবির আবেদন জমা পড়েনি। প্রযোজক সমিতিতে ডিসেম্বর মাসে মুক্তির জন্য গতকাল পর্যন্ত এন্ট্রি হয়েছে ১ তারিখ ‘আসবোনা ফিরে’ ও ‘অবাস্তব ভালোবাসা’, ৮ তারিখ ‘মিনির কাবুলীওয়ালা’ ও ‘জল শ্যাওলা’, ১৫ তারিখ ‘অন্তরজ্বালা’ ও ‘পরানের পাখী’, ২২ ডিসেম্বর ‘হৃদয় ছোঁয়া কথা’ ও ‘ইনোসেন্ট লাভ’, ২৯ ডিসেম্বর ‘গহীন বালুচর’।

এদিকে প্রযোজক সমিতিতে গতকাল পর্যন্ত এন্ট্রি না হলেও সংশ্লিষ্ট নির্মাতারা জানান ১ ডিসেম্বর জাহিদ হোসেন অভি প্রযোজিত ও অভি কথাচিত্র পরিবেশিত এবং তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘হালদা’, ৮ তারিখ ‘চল পালাই’, ২২ ডিসেম্বর ‘ভালো থেকো’ মুক্তি পাবে। এসব ছবি ছাড়াও নভেম্বর ও ডিসেম্বরে মুক্তি পেতে পারে ‘জান্নাত’ এবং ‘আঁখি ও তার বন্ধুরা’।

উল্লিখিত ছবিগুলোর শিল্পী তালিকায় রয়েছেন আমজাদ হেসেন, কাজী হায়াৎ, তৌকীর আহমেদ, জাহিদ হাসান, মোশাররফ করিম, জায়েদ খান, পরীমণি, আরিফিন শুভ, সাইমন, তমা মির্জা, শিপন, তিশা, সুবর্ণা মোস্তাফা, মিশা সওদাগর, বিপাশা কবির, ফজলুর রহমান বাবু, মাহি, তানহা তাসনিয়া, রুনা খানসহ অনেকে। সব মিলে বছরের শেষ দুই মাসও থাকছে তারকাবহুল ও জমজমাট ঢাকাই ছবির বাজার। এদিকে ৬ অক্টোবর মুক্তি পাওয়া ঢাকা অ্যাটাক  মুক্তির প্রথম তিন দিনেই এই ছবির আয় ৪ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার দাবি ছবিটির নির্মাতা দীপংকর দীপনের। ছবিটি টানা চতুর্থ সপ্তাহের মতো দর্শকপ্রিয়তা অব্যাহত রেখে চলছে। টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে এখনো ফিরে যাচ্ছেন দর্শক। দর্শকের চাপে স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রথম দুদিনেই দুটির স্থলে চারটি হলে ছবিটি প্রদর্শন করতে বাধ্য হয় সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। শুধু দেশে নয়, বিদেশের মাটিতেও সমান জনপ্রিয়তায় চলছে ঢাকা অ্যাটাক।

বলিউড সুপারস্টার আমির খানের সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সিক্রেট সুপারস্টার’কে সরিয়ে নিউইয়র্কের একটি সিনেমা হলে প্রদর্শিত হচ্ছে এই ছবিটি। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকাই ছবির বিশ্ববাজার জয়ের এটিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় সাফল্য।

২০ অক্টোবর মুক্তি পায় নাদির খান প্রযোজিত মনতাজুর রহমান আকবর পরিচালিত ডিপজল, মৌসুমী, মিম, বাপ্পী অভিনীত ‘দুলাভাই জিন্দাবাদ’। মুক্তির আগেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে ছবিটি। এর কারণ ছিল দুটি। প্রথমত এদেশে ডিপজলের একটি বড় অংশের দর্শক রয়েছে। দ্বিতীয়ত এদেশের দর্শক বিশেষ করে মহিলারা যে ধরনের পারিবারিক সেন্টিমেন্টের ছবি দেখতে চায় তেমন গল্প নিয়েই ছবিটি নির্মিত হয়েছে। মুক্তির প্রথম তিন দিন প্রতিকূল আবহাওয়া আর নির্মাণে সময় উপযোগী উপাদান না থাকার অভিযোগ করেছেন অনেক দর্শক। তারপরও বেশ আলোচনা নিয়ে ছবিটি এগিয়েছে। ২৭ অক্টোবর মুক্তি পায় বহুল আলোচিত ছবি মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত ও জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত যৌথ আয়োজনের ছবি ‘ডুব’। ছবিটি নিয়ে দর্শকের আগ্রহ আর আলোচনা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে। বিশেষ করে ‘ডুব’ হলো প্রখ্যাত কলমের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদের বায়োপিক। এমন খবর মিডিয়ায় চাউর হওয়ার পর থেকে সবাই এই প্রিয় লেখকের জীবনী দেখতে ছবিঘরে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। ছবিটি নিয়ে দর্শকের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয়। অনেকের কথায় এটি একটি দুর্বল নির্মাণ। ফারুকী তার পুরনো নির্মাণ বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেননি। আগের ছবির মতোই নাটক জাতীয় একটি ছবি নির্মাণ করেছেন তিনি। অনেকে আবার ভিন্ন ধারার গল্প আর নির্মাণ এবং এতে শিল্পীদের আন্তরিক অভিনয়ের ছাপের কারণে ছবিটির প্রশংসাও করেছেন। আলোচনা-সমালোচনা যাই থাকুক এখনো আগ্রহ নিয়ে দর্শক ছবিটি দেখছেন, দেশীয় ছবির দুর্দিনে এটিই বড় প্রাপ্তি।

 

সর্বশেষ খবর