সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ

হুমায়ূন স্যার ছিলেন একজন রহস্যমানব

আজ কলম-জাদুকর এবং ভিন্নমাত্রার সফল চলচ্চিত্র নির্মাতা প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন। এই ক্ষণজন্মা জীবন কারিগরের বেশ কিছু নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ। হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে তাকে ঘিরে আজ রিয়াজের আলাপন তুলে ধরেছেন—আলাউদ্দীন মাজিদ

হুমায়ূন স্যার ছিলেন একজন রহস্যমানব

কাজের মাধ্যমে মহান এই ব্যক্তিত্বের সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল আপনার। তার জন্মদিনে আপনার অনুভূতি কী?

শুধু জন্ম বা প্রয়াণ দিবস নয়, স্যারকে প্রতিটি দিন প্রতিটি মুহূর্তে ভীষণভাবে মিস করি। তার কাজ, উপদেশ আর সঙ্গের তীব্র অভাববোধ করি। জীবন জটিলতার যে কোনো বিষয় স্যারের সঙ্গে শেয়ার করতাম। তিনি জাদুকরী সমাধান দিতেন। আজ তার শূন্যতা আমাকে বড় ভোগায়।

 

হুমায়ূন আহমেদের কর্মযজ্ঞ শিল্প-সাহিত্যকে কতটা পূর্ণতা দিয়ে গেছে বলে আপনার ধারণা?

একজন হুমায়ূন আহমেদ মানেই শিল্প আর সাহিত্যের পূর্ণতার ভাণ্ডার। তিনি দেশীয় সাংস্কৃতিকে অতি অল্প সময়ে যে পূর্ণতা দিয়ে গেছেন তা সত্যিই অকল্পনীয়। আমাদের সাহিত্য-সংস্কৃতি আর চলচ্চিত্রের মহাউত্তরণের জন্য তার আরও অনেক দিন বেঁচে থাকার দরকার ছিল।

 

দুই দুয়ারীর মাধ্যমে হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয় আপনার। তার ছবিতে কাজের অনুভূতি কেমন ছিল?

স্যার ছিলেন আমার প্রিয় লেখকদের একজন। একদিন স্যার আমাকে নূহাশপল্লীতে ডেকে পাঠান। স্যারের ডাকটাই আমার কাছে ছিল অনেক বড় পুরস্কার। নূহাশপল্লীতে তার সঙ্গে যেদিন দেখা করতে যাই, সে দিনেই তিনি আমাকে ‘দুই দুয়ারী’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন। তার সঙ্গে প্রথম দেখা করাটাই ছিল সৌভাগ্যের, তার ওপর চলচ্চিত্রের প্রস্তাব ছিল আমার জন্য বিশাল প্রাপ্তি। ‘দুই দুয়ারী’তে রহস্যমানব চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক সাড়া পাই। এই ছবিতে অভিনয় করে জাতীয় পুরস্কারও পেয়েছিলাম। প্রিয় লেখকের সঙ্গে প্রথম কাজ করেই পুরস্কার পাওয়াটা ছিল আমার জন্য অনেক আনন্দের ও গৌরবের। আজ আমি রিয়াজ হওয়ার পেছনে হুমায়ূন স্যারের সবচেয়ে বড় ভূমিকা রয়েছে। তার লেখা আরেকটি গল্প ‘দারুচিনি দ্বীপ’। যার চলচ্চিত্র নির্দেশনা দিয়েছিলেন তৌকীর আহমেদ। সেই ছবিতে কাজ করেও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করি। স্যারের প্রচুর নাটকে কাজ করে প্রশংসিত হয়েছি। মানে স্যার আমার কর্ম জীবনকে পূর্ণতা দিয়ে গেছেন।

 

আপনার দৃষ্টিতে হুমায়ূন আহমেদ কেমন ছিলেন?

হুমায়ূন আহমেদ স্যার নিজেই ছিলেন একজন রহস্যমানব। কখনো তাকে আমার শিশুমনে হতো, আবার কখনো আধ্যাত্মিক একজন মানুষও মনে হয়েছে। আবার মাঝে-মধ্যে তার সঙ্গে কথা বলার সময় মনে হতো, একজন প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলছি। সব মিলিয়ে স্যারের তুলনা স্যার নিজেই।

 

হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর তার গল্পে কাজ করেছেন, কেমন লেগেছে?

এখন তার গল্পে কাজ করতে গেলে বিশাল শূন্যতা ও হাহাকার কাজ করে আমার মধ্যে। শুটিং ইউনিটে কোনো প্রাণ খুঁজে পাই না। সব সময় তার ছায়া খোঁজার চেষ্টা করি। ভীষণভাবে স্যারকে অনুভব করি। স্যারের বিকল্প খুঁজে পাই না। তার মতো একজন মহীরুহের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না।

সর্বশেষ খবর