বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মুক্তিযুদ্ধের নাটক ও গান

আলী আফতাব

১৯৭১-এ যুদ্ধের মাঠে হয়তো সবাই যাননি, অনেকে অস্ত্র তুলে নেননি। কিন্তু প্রতিবাদ করেছিলেন সব মানুষ।  কেউ কণ্ঠে তুলে নিয়েছিলেন মুক্তির গান। আবার কেউ ধরেছিলেন কলম। সেই কলম থেকে বেরিয়ে এসেছে অসংখ্য মুক্তির নাটক

 

১৯৭১-এ যুদ্ধের মাঠে হয়তো সবাই যাননি। হয়তো সবাই হাতে অস্ত্র তুলে নেননি। কিন্তু প্রতিবাদ করেছিলেন সব মানুষ। প্রতিবাদের ধরন ছিল ভিন্ন। কেউ কণ্ঠে তুলে নিয়েছিলেন মুক্তির গান। আবার কেউ ধরেছিলেন কলম। সেই কলম থেকে বেরিয়ে এসেছে অসংখ্য মুক্তির নাটক। শহীদুল্লাহ কায়সার, জহির রায়হানের গল্প থেকে শুরু করে তরুণ নাট্যকার নির্দেশকরাও বাংলাদেশের টেলিভিশনে শতাধিক নাটক নির্মাণ করে আমাদের বাংলাদেশের নাট্যামোদী দর্শকদের প্রতিনিয়ত মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও বাংলাদেশকে উপস্থাপন করে আসছেন। নাট্যকার ও নির্মাতাদের তালিকায় জামিল চৌধুরী, কলিম শরাফি, মুস্তাফা মনোয়ার, মোহাম্মদ জাকারিয়া, গোলাম মুস্তাফা, আবদুল্লাহ আল মামুন, রামেন্দু মজুমদার, ফেরদৌসী মজুমদার, সেলিম আল দীন, নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, শিমুল ইউসুফ, মামুনুর রশীদ, আলী যাকের, সারা যাকের, আসাদুজ্জামান নূর, আতাউর রহমান, আবুল হায়াত, ম. হামিদ, তারিক আনাম খান, এনামুল হক, লাকী ইনাম, হুমায়ুন ফরীদি, রাইসুল ইসলাম আসাদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, আফজাল হোসেন, সুবর্ণা মুস্তাফা, লিয়াকত আলী লাকী, মান্নান হীরাসহ অনেকের নামই উল্লেখ করা যায়। আর হুমায়ূন আহমেদের বিখ্যাত ধারাবাহিক নাটক ‘তুই রাজাকার’ সংলাপটির মাধ্যমে নাটকটি যেভাবে ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল এটি একটি বিরল ঘটনা। মমতাজ উদ্দীন আহমদ, সৈয়দ শামসুল হক, রাহাত খান, রাবেয়া খাতুন, সেলিনা হোসেন,  ইমদাদুল হক মিলন, অরুণ চৌধুরী, ফেরদৌস হাসান, নাসরীন জাহান, নাসির আহমেদ, আনিসুল হক, রেজানুর রহমান, মাসুম রেজা, গাজী রাকায়াত, সালাউদ্দিন লাভলু, বৃন্দাবন দাশসহ অনেকেই বাংলাদেশ টেলিভিশনে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাভিত্তিক নাটক লিখে, অভিনয় করে ও নির্দেশনা দিয়ে টেলিভিশন দর্শকদের সমৃদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের নাটক নির্মাণে আতিকুল হক চৌধুরী, মোস্তফা কামাল সৈয়দ, নওয়াজীশ আলী খান, মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ বরকতউল্লাহ, আলী ইমাম, মুসা আহমেদ, খ ম হারুন, মেনোকা হাসান, লায়লা হক, মোহাম্মদ আবু তাহের, জিয়া আনসারী, মোহাম্মদ ফারুক ভূঁইয়াসহ অনেকেই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক টিভি নাটকের নির্মাতা হিসেবে কিংবদন্তি হয়ে আছেন।

মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী প্রজন্মের লেখক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকার, অভিনয়শিল্পীরা মঞ্চে, টিভিতে, চলচ্চিত্রে নানাভাবে সম্পৃক্ত থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও চলচ্চিত্রকে উজ্জীবিত করে রাখছে।

অন্যদিকে স্বাধীনতা আন্দোলনে সব ধরনের গান অনুপ্রেরণার কাজ করতে পারে না। এজন্য চাই বিশেষায়িত গান। আর সে গান হলো দেশাত্মবোধক গান, জাগরণী গান, উজ্জীবনের গান, গণসংগীত ইত্যাদি। যেমন ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে’, কথা : গোবিন্দ হালদার সুর : সমর দাস আরেকটি হলো, মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’ গানটি লিখেছেন গোবিন্দ হালদার এবং গেয়েছেন আপেল মাহমুদ।

এ ছাড়া ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দিব রে’, ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’, ‘মুক্তির মন্দির সোপানতলে কত প্রাণ হলো বলিদান, লেখা আছে  অশ্রুজলে’ গানটি লিখেছেন কৃষ্ণ চন্দ্র দে এবং সুর করেছেন সমর দাস। ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা, দিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখা, ইত্যাদি।

সর্বশেষ খবর