শনিবার, ৩১ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬ লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট

উচ্ছ্বসিত ববিতা ফারুকের ক্ষোভ

উচ্ছ্বসিত ববিতা ফারুকের ক্ষোভ

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬-এর তালিকা চূড়ান্ত করেছে জুরি বোর্ড। এখন তা মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য যাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এরপর গেজেট আকারে প্রকাশ হবে। ইতিমধ্যে জানা গেছে, এবারের পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন ববিতা ও ফারুক। এই সম্মান প্রাপ্তিতে তাদের অনুভূতির কথা তুলে ধরেছেন—আলাউদ্দীন মাজিদ

   

আমি আনন্দিত : ববিতা

লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট মানে সারা জীবনের কাজের সম্মান আর স্বীকৃতি। এবার আমাকে এই সম্মাননা জানানো হচ্ছে বলে সত্যিই আমি আনন্দিত আর উচ্ছ্বসিত। মনে হচ্ছে সত্যি আমি এই শিল্পকে কম করে হলেও কিছু দিতে পেরেছি। তাই দর্শকের ভালোবাসার পাশাপাশি রাষ্ট্র আমাকে চলচ্চিত্রে অবদান রাখার সবচেয়ে বড় এই স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে। আমি আমার দর্শক আর সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। এর আগে অভিনেত্রী ও নির্মাতা হিসেবে একাধিকবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছি। সেই প্রাপ্তির চেয়েও আজীবন সম্মাননা অনেক বেশি সুখের। আমার মনে হচ্ছে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট পাওয়ার মধ্য দিয়ে আমি অভিনয় জীবনের পূর্ণতার সুখ পেতে যাচ্ছি। অনেকে মনে করেন, লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট মানে অভিনয় জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পুরস্কার। আমি তা মনে করি না। আমার মতে এটি হলো একটা সময়ে শিল্পীরা যখন ভাবে আমাদের কাজের সময় বুঝি শেষ হয়ে এসেছে তখন এই পুরস্কার মনে করিয়ে দেয় কাজ শেষ করার এখনো অনেক বাকি রয়ে গেছে। মানে এটি নতুন করে কাজের জন্য উৎসাহ আর প্রেরণা দেয়। মনে নতুন উদ্যমে পথ চলার অনুপ্রেরণা জোগায়। এখন আমি আরও উৎসাহিত হয়ে প্রায় নিষ্প্রাণ চলচ্চিত্রের প্রাণের সঞ্চার ঘটাতে নতুন উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যাব। আমাদের চলচ্চিত্রের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে চাই।

 

খুশি হতে পারিনি : ফারুক

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই। আমাকে লাইফটাইম পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে—এ নিয়ে আমার প্রচণ্ড ক্ষোভ রয়েছে। এই ক্ষোভের যৌক্তিক কারণ হলো এর আগে ১৯ বার আমাকে জাতীয় পুরস্কারে সেরা অভিনেতার পুরস্কার দিতে গিয়েও বাদ দেওয়া হয়েছে। আমার অপরাধ আমি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করি। বঙ্গবন্ধুর পরবর্তী সরকারগুলো আমাকে বারে বারে এ সম্মান দেওয়া থেকে বাদ দিয়ে অপমান করেছে। যে পুরস্কারের জন্য আমাকে আগে অপমাণিত হতে হয়েছে এখন তা নেব কিনা তা আমাকে ভেবে দেখতে হবে। আমাদের আর্ট কালচারে দুর্নীতি ঢুকে পড়েছে অনেক আগেই। তাই বারে বারে এ দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু-কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে আমি সালাম জানাই। শ্রদ্ধা করি। আমার মনে হয় এই সম্মাননা আমি ডিজার্ভ করি না। কোনো অযৌক্তিক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ না করে আমি মরতে পারি না। এই আজীবন সম্মাননা আমাকে উৎসাহিত নয়, কষ্টে মনটা ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। অনেকের মতে লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট হলো সারা জীবনের কাজের স্বীকৃতি প্রদান। সব দেশেই নিয়ম হলো এই স্বীকৃতি দেওয়া হয় একজনকে। যে এই অ্যাওয়ার্ড পাবে সে হবে সে দিনের জন্য মহারাজা বা রানী। একসঙ্গে দুজনকে দিলে প্রাপ্তির আনন্দটা ফিকে হয়ে যায়। এটি সম্মানের নামে অসম্মান করারই নামান্তর ও দুঃখজনক।

সর্বশেষ খবর