শনিবার, ১৪ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

তারকাদের পান্তা ইলিশ

তারকাদের পান্তা ইলিশ

বাংলা নববর্ষ মানেই পান্তা ইলিশ খাওয়ার দিন। সাধারণ মানুষ থেকে বড় পর্দার তারকারাও বাদ যান না এই আয়োজন থেকে। বাঙালি জীবনের সেরা দিন নববর্ষ আসবে আর পান্তা ইলিশ খাওয়া হবে না তা তো হয় না। শুধু পান্তা ইলিশ কেন? আরও নানা আয়োজনে মুখর থাকবে দিনটি। বড় পর্দার কয়েকজন তারকা কেমন কাটাবেন দিনটি, সে কথা তুলে ধরেছেন— আলাউদ্দীন মাজিদ

 

শাকিব খান

আমার দর্শক-ভক্তদের প্রতি নববর্ষের শুভেচ্ছা রইল। প্রায় উৎসবেই দর্শকদের জন্য নতুন ছবি নিয়ে হাজির হই। মানে দর্শকদের জন্য এটি আমার বৈশাখী ভালোবাসার উপহার। এবার তা হচ্ছে না বলে মনটা একটু খারাপ। গত বৈশাখে  দেশে থাকতে পারলেও এবার মনে হয় পয়লা  বৈশাখ দেশে পালন করতে পারছি না। ‘ভাইজান এলো রে’ ছবির শুটিং নিয়ে লন্ডনে রয়েছি। তবে এখানেও যতটা সম্ভব বৈশাখ উদযাপন করব। এখানে প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে দেশের সবাইকে খুব মিস করব। পয়লা বৈশাখ দেশে পালন করার মতো আনন্দ এখানে কখনই পাব না। বিদেশে থাকলেও আমার ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসার টান আমি কখনই ভুলব না।

 

অপু বিশ্বাস

পয়লা বৈশাখের আনন্দ মানেই মহাউৎসবে মেতে ওঠা। এখনকার চেয়ে ছোটবেলায় এই আনন্দ অনেক বেশি ছিল। সে সময়ের বৈশাখ মানে ঈদ আর দুর্গাপূজার মতোই আনন্দের ভেলায় ভেসে বেড়ানো। পয়লা বৈশাখেও তখন ধর্মীয় আনন্দ উৎসবের মতো উপহার পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতাম। ইলিশ মাছ খাওয়ার সংস্কৃতিটাও জমজমাট ছিল। গ্রামে বৈশাখ উপলক্ষে মেলা বসলেও আমার কখনো মেলায় যাওয়া হয়নি। ভিড় ঠেলে মেলায় যাওয়াটা একদমই পছন্দ করতাম না। মেলা থেকে যে মিষ্টিজাতীয় খাবারগুলো আনা হতো তা খাওয়া কখনই মিস করতাম না। এখন শহুরের যান্ত্রিক জীবনযাপন আর ব্যস্ততার আড়ালে গ্রাম্য পয়লা বৈশাখের সবকিছুই যেন হারিয়ে ফেলেছি। এখন বৈশাখ তো আমার জয়ের সঙ্গেই পালন করব।

 

বাপ্পি সাহা

বৈশাখ মানেই আমার নতুন পাঞ্জাবি চাই। এমন জিদ থাকত বাবার কাছে। এ দিন সকাল থেকেই বন্ধুদের সঙ্গে খেলতাম। বাইক নিয়ে শহরের অলিগলি ঘুরে বেড়াতাম। নায়ক হওয়ার আগে দিনটি বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দ-উল্লাস করে কাটাতাম। এখন আড্ডা হয়, ঘোরাঘুরি হয়। তবে আগের মতো সম্ভব হয় না। অনেক জায়গায় ইচ্ছা থাকলেও যেতে পারি না। যেখানে যাই ভক্তরা ভিড় করে। ভক্তদের প্রতি আমার ভালোবাসা অনেক। তাদের ভালোবাসা নিয়েই তো এগিয়ে যাই আমরা। এবারের বৈশাখে কয়েকটি টিভি  শোতে অংশ নেব। পাশাপাশি মায়ের হাতের মজার খাবার খাওয়া তো রয়েছেই। বিকালে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হব।

 

মাহিয়া মাহি

পয়লা বৈশাখের দিন শুটিং রয়েছে। শুটিং থাকলেও দিনটি শ্বশুরবাড়ি আর নিজের বাড়ির লোকজনের সঙ্গেই কাটানোর ইচ্ছা আছে।  ছোটবেলা থেকেই পান্তা-ইলিশ খাওয়ার মাধ্যমে নববর্ষ পালন করে আসছি। এ পান্তা ইলিশ খাওয়াকে বাঙালিয়ানা মনে করি না। এটি নববর্ষ পালনের একটি অংশ। বাঙালিয়ানা পান্তা ইলিশ নয়, মনে-প্রাণে বাংলা সংস্কৃতি ধারণ করার বিষয়। আর যারা বাংলা নববর্ষ আয়োজন নিয়ে সমালোচনা করেন তারা নিজেদের মতামত স্বাধীনভাবে দেওয়ার জন্য সেটা করতেই পারেন। কিন্তু জাতি হিসেবে আমরা বাঙালি। বিষয়টি আমাদের ভুলে গেলে হবে না। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি যদি আমরা পালন করি  সেটা দোষের বলে মনে করি না।

 

ববি

এবার পয়লা বৈশাখ আমার জীবনে বিশেষ একটি দিন। নববর্ষে আমার অভিনীত ও প্রথম প্রযোজিত ছবি ‘বিজলী’ মুক্তি পেয়েছে। একদিকে নববর্ষের আনন্দ অন্যদিকে নিজের ছবির সাফল্য নিয়ে টেনশন। মানে দিনটি কাটবে মিশ্র অনুভূতিতে। ছবিটি যদি দর্শক সাদরে গ্রহণ করে তাহলে এবারের নববর্ষের আনন্দ হবে আমার জীবনের সেরা আনন্দ ও মধুর স্মৃতি ঘেরা একটি দিন।  আমি বৈশাখের পান্তা ইলিশ আনন্দকে ‘বিজলী’র সফলতার মাধ্যমে পালন করতে চাই।

 

বুবলী

বছরের বিশেষ দিনগুলোতে বাসা থেকে খুব একটা বাইরে বের হই না। পরিবারের সবার সঙ্গে আনন্দ করেই কাটাই। বাসায় আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা আসে। তাদের সঙ্গে আড্ডা দিয়েই সময় কাটাই। পয়লা বৈশাখেও এমনটি হয়। বৈশাখী জামাকাপড় পরে ঘরেই বসে থাকি। চলচ্চিত্রে কাজ করার আগে থেকেই এমন অভ্যাস আমার। তবে বৈশাখসহ সব উৎসবই আনন্দের সঙ্গে পালন করি। 

 

পরীমণি

চলচ্চিত্রে আসার আগে সব উৎসবই  বেশ আয়োজন করে পালন করতাম। নায়িকা হওয়ার পর ব্যস্ততা বেড়েছে। ফলে আগের মতো সব উৎসব পালন করা হয় না। নববর্ষও আহামরি আয়োজনে পালন করতে পারি না। অনেক নববর্ষ তো শুটিং স্পটেই পালন করতে হয়েছে। এবারের নববর্ষে শুটিং নেই। তাই নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করব।  আমি মনে-প্রাণে প্রকৃত বাঙালি। বাঙালিয়ানা নিজের ভিতরে ধারণ করি। অনেকেই বলে থাকেন পান্তা ইলিশ না  খেলে নাকি বৈশাখ পালন হয় না। আমি এ ধারণার বিপক্ষে। বাঙালিয়ানা আমাদের ধারণ করার বিষয়। শুধু বৈশাখে নয়, প্রতিটি উৎসবই গরিব-দুঃখীদের নিয়ে পালনের  চেষ্টা করি।

 

জয়া আহসান

বাংলা নববর্ষ উদযাপনে জয়া আহসানের বাড়িতে থাকবে খাওয়া-দাওয়ার এলাহি আয়োজন। পান্তা ইলিশের পাশাপাশি নানা পদের রান্না হবে। জানালেন ঢাকা ও কলকাতার জনপ্রিয় এ নায়িকা।

ইলিশ প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘বাংলাদেশে এই সময় খুব চড়া দামে ইলিশ মাছ বিক্রি হয়। তবে বেশি দামেই আমরা সেটি কিনি। আর শুঁটকি মাছ অবশ্যই থাকবে।’

পান্তাভাত ছাড়া হবেই না জয়ার নববর্ষ। ‘সে দিন আমিই পান্তাভাত মাখি। আমার হাতের পান্তাভাত খেতে বাড়ির সবাই খুব পছন্দ করেন। এর সঙ্গে ডিম ভাজা, বেগুন ভর্তা, শুঁটকি ভর্তা থাকে। সাধারণত শুকনো লঙ্কা দিয়ে পদগুলো তৈরি হয়। আর থাকে বিভিন্ন রকম বাটা। সরিষা বাটা, পোস্ত বাটা, কালিজিরা বাটা, শাক বাটা,’ বললেন অভিনেত্রী।

খাবার পরিবেশনেও থাকে ব্যতিক্রমী আয়োজন। এ দিনের জন্য বরাদ্দ মাটির থালা-বাসন। জয়া বলেন, ‘ওই দিনের জন্যই সারা বছর আমরা মাটির নানা বাসন কিনি। এখানকার সব বাড়িতেই এই রীতি। আমাদের বাড়িতেও তা-ই।’

কিছুদিন আগে একটি নামি সংবাদমাধ্যমের বৈশাখে ফটোশুটে অংশ নেন জয়া। সেখানে তাকে পাওয়া যায় নতুন মেজাজে। এবারও জয়ার বাংলা নববর্ষ কাটবে বর্ণিল আনন্দে।

 

মেহজাবীন

বৈশাখ নিয়ে আমি কিছু কেনাকাটা করেছি।  ৈবৈশাখ উপলক্ষে আমি একটা শাড়ি আর কামিজ কিনেছি। একটা সকালে, আরেকটা বিকালে পরব। কিন্তু এখনো ঠিক করিনি কোনটা আগে পরব। তবে পান্তা ইলিশ ছাড়া আমার বৈশাখের মজা কখনই জমে না। ছোটবেলায় মেলায় ঘুরে বেড়াতাম। কত আনন্দ করতাম। এখন সেই বৈশাখী দিনগুলো খুব মিস করি। এখনকার বৈশাখী আনন্দ হয় অন্যরকম আনন্দের। তবে ছোটবেলার মতো নয়।

 

অপূর্ব

বৈশাখে আমি তেমন করে কেনাকাটা করি না। আমার স্ত্রীই করে। ও কিছু একটা করে বৈশাখের আগের দিন সারপ্রাইজ দেয়। আমি খুবই ভোজনরসিক। বৈশাখের দিন আমাদের বাসায় সব আত্মীয়স্বজন আসেন। এবারও আসবেন। আমি জানি সেদিন ভর্তা, ইলিশের ব্যাপক আয়োজন হবে। আমি অপেক্ষায় আছি। বাসায় সবাই এলে আমার দারুণ লাগে। আমি আসলে যৌথ পরিবারে বড় হয়েছি তো, তাই কোনো উপলক্ষ পেলে সবাই এখনো এক জায়গায় হই।’

 

নুসরাত ফারিয়া

চলচ্চিত্রে অভিষেকের পর এটিই আমার প্রথম বাংলা নববর্ষ। তাই আমার মধ্যে অন্যরকম একটি ভালো লাগা কাজ করছে। দিনটি বিশেষভাবে পালন করব। বৈশাখের প্রথম দিন পরিবারের সঙ্গেই পান্তা ইলিশ আর মণ্ডা মিঠাই খেয়ে মজা করে নববর্ষের আনন্দে ভাসব। চলচ্চিত্রের মানুষদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় চলবে। পরের দিন পারিবারিক বৈশাখী গেট টুগেদারের ব্যবস্থা থাকবে। এতে আত্মীয়স্বজনকে নিমন্ত্রণ জানাব। সবাই মিলে বেশ বৈশাখী মজা করব। এক কথায় চলচ্চিত্রে আসার পর প্রথম বৈশাখ হবে বড়ই আনন্দের।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর