মঙ্গলবার, ৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

চলচ্চিত্রের খরায়ও সফল যারা

আলাউদ্দীন মাজিদ

চলচ্চিত্রের খরায়ও সফল যারা

দীর্ঘদিন ধরে চলচ্চিত্রে চলতে থাকা চরম খরার মধ্যেও বেশ কজন নতুন মুখ স্বস্তির বৃষ্টি বয়ে এনেছেন। তাদের কাজ দর্শক সাদরে গ্রহণ করায় ছবিগুলো প্রাণ পেয়েছে। এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন সিয়াম-পূজা জুটি। গত ঈদে এই জুটি অভিনীত জাজ মাল্টিমিডিয়ার ছবি ‘পোড়ামন টু’ ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। দর্শকদের মতে সিয়াম-পূজার সাবলীল এবং অনবদ্য অভিনয় ছবিটিকে সফলতার আসনে বসিয়ে দিয়েছে। এই ছবিটি এখন সব শ্রেণি আর বয়সের দর্শকের কাছে রীতিমতো ক্রেজে পরিণত হয়েছে। ছবিটি পরিচালনা করেছেন নতুন নির্মাতা রায়হান রাফি। এর আগে গত বছর দীপংকর দীপেন পরিচালিত ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবিতে রীতিমতো ঝলসে ওঠেন খলচরিত্রে অভিনয় করা নতুন মুখ তাসকিন। দর্শকের কথায় ছবির প্রাণ হলো তাসকিনের অনবদ্য অভিনয়। এই ছবিতে কারিশমা দেখিয়ে তাসকিন এখন শুধু এপার বাংলায় নয়, ওপার বাংলায়ও উন্মাদনা তৈরি করেছেন। সেখানকার ছবিতেও অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন। এর আগে জাজের আরেক আবিষ্কার রোশান ‘রক্ত’ ছবিতে অভিষেক ঘটিয়েই দর্শক মহলে হৈচৈ ফেলে দেন। রোশানের প্রথম ছবির সাফল্যে টালিগঞ্জের অভিনেতা দেব তার যৌথ প্রযোজিত ছবি ‘ককপিট’-এ সহনায়ক হিসেবে রোশানকে কাস্ট করেন। এখন রোশান জাজের ‘বেপরোয়া’ ছবিতে কাজ করছেন। ছোট পর্দার অসম্ভব জনপ্রিয় নায়ক ডি এ তায়েব গত বছরের ঈদে ‘সোনাবন্ধু’ ছবির মাধ্যম প্রথম বড় পর্দায় অভিষেক ঘটান। তিনি বড় পর্দায় সফলতার আলোয় জ্বলে উঠেন। তার দক্ষ এবং উন্²ত মাত্রার অভিনয় সোনাবন্ধুকে সাফল্যের তক্তে বসিয়ে দেয়। দর্শক এবং চলচ্চিত্রকারদের কথায় এই নায়কের অসাধারণ অভিনয় ডিজিটাল যুগেও সোনাবন্ধুর মতো একটি ফোকধর্মী ছবিকে ব্যাপক সফলতা এনে দিয়েছে। এই অভিনেতার কারণে ছবিটি এতটাই দর্শকনন্দিত হয়েছে যে, এবারের ঈদে এটিএন বাংলা টিভি চ্যানেল ছবিটি প্রচার করে এবং দর্শক আগের মতো সমান মুগ্ধতা নিয়ে ছবিটি দেখেন। বড় পর্দায় ডি এ তায়েবের এই অভিনয় কারিশমার কারণে বর্তমানে তিনি বদিউল আলম খোকনের ‘অন্ধকার জগত’ ছবিতে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করছেন। বড় পর্দায় সাড়া জাগানো আরেক নায়ক হলেন শিপন। তিনিও জাজ মাল্টিমিডিয়ার আবিষ্কার। তার অভিনীত প্রথম ছবি ‘দেশা দ্য লিডার’। এই ছবিতে উন্²ত উপস্থাপনা দিয়ে সহজেই তিনি দর্শক চলচ্চিত্রকারদের দৃষ্টি কাড়েন। পরবর্তীতে ‘বিগ ব্রাদার’ শিরোনামের আরেকটি ছবিতে অভিনয় করে ফের প্রশংসা কুড়ান। জাজের আরেক সফল আবিষ্কার হলেন জলি। এই নায়িকার প্রথম ছবি হলো যৌথ প্রযোজনার ‘অঙ্গার’। এই ছবিতে তার অভিনয় দুই বাংলায়ই প্রশংসিত হয়। তার দ্বিতীয় ছবি হলো প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’। এই ছবিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করা তার চরিত্রটি প্রশংসিত হয়। চলচ্চিত্রের প্রচণ্ড খরার মাঝে সফল হওয়া আরেক নায়িকা হলেন নীলাঞ্জনা নীলা। বদরুল আনাম সৌদ নির্মিত চলচ্চিত্র ‘গহীন বালুচর’-এ তার অভিনয়ে মুনশিয়ানার ছাপ দেখেছে দর্শক। চলচ্চিত্রকাররাও নীলার দক্ষ অভিনয়ের প্রশংসা করেন। নতুন মুখ হিসেবে সাড়া জাগানো আরেক অভিনেতা হলেন ইয়াস রোহান। প্রথম ছবি গিয়াসউদ্দীন সেলিমের ‘স্বপ²জাল’-এ তিনি দক্ষ অভিনয়ের চমক দেখিয়ে আলোচনায় আসেন। তাকে নিয়ে নির্মাতাদের মধ্যে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে। দর্শক মনকাড়া আরেক নায়িকা হলেন তানহা তাসনিয়া। এই নায়িকা প্রথমে শাকিব খানের সঙ্গে ‘ধূমকেতু’, এরপর আরিফিন শুভর সঙ্গে ‘ভালো থেকো’ ছবি দুটি করে ব্যাপকভাবে দর্শকনন্দিত হন। তার সুঅভিনয় নির্মাতাদের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এ ছাড়া খলনায়ক হিসেবে শিমুল খান এবং টাইগার রবি বেশ দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করে দর্শক-নির্মাতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।

সর্বশেষ খবর