সোমবার, ৬ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : পাপিয়া সারোয়ার

তিনি সত্তার সঙ্গে মিশে আছেন

তিনি সত্তার সঙ্গে মিশে আছেন

রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। সংগীত সাধনাই তার জীবনের ব্রত। রবীন্দ্রসংগীত সাধনার পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থীর মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তার সংগীতলব্ধ জ্ঞান। আজ ২২ শ্রাবণ। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

আজ কবিগুরুর মহাপ্রয়াণ দিবস। দিবসে আপনার ব্যস্ততা?

ব্যস্ততা মূলত কিছু অনুষ্ঠান নিয়ে। আর দিবসটি এলেই তো আমাদের মতো সংগীতশিল্পীদের স্মরণ করে বিভিন্ন চ্যানেল থেকে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে বিটিভিতে একটি গানের অনুষ্ঠান করেছি, সামনেও আরেকটি করব। এছাড়াও আগামী বৃহস্পতিবার মাইটিভিতে শম্পা রেজার উপস্থাপনায় সাপ্তাহিক গানের অনুষ্ঠান ‘আমার গান’-এ কিছু গান গাইব।

 

আপনার সংগঠন ‘গীত সুধা’র কোনো কার্যক্রম আছে?

গীত সুধার উদ্যোগে একটি ঘরোয়া আয়োজন হবে। তবে আজ নয়, আগামীকাল। ওইদিন তার স্মরণে আমার গান গাইব, তাকে শ্রদ্ধা জানাব।

 

আপনার মতো অনেক শিল্পীরই অভিযোগ, দিবস এলেই তাদের স্মরণ করা হয়...

সত্যিই তো তাই! এই যে ২২ শ্রাবণ, ২৫ বৈশাখসহ কিছু দিবস এলেই কেন শিল্পীদের স্মরণ করা হয়? আমার কাছে এটা অসম্মানজনক, অশোভন বলে মনে হয়! জানি আপনারা সিডিউল মেইনটেইন করেন, কিন্তু এক সপ্তাহ আগে থেকেই এসব নিয়ে ভাবলেই তো হয়। আর এখন টিভি চ্যানেল, পত্রিকায় সব চেনামুখ, পরিচিত কিছু চেহারাই প্রাধান্য পায়। সংগীত জীবনের এই ৫০ বছরে আমি কখনোই ভাবিনি, আমার গাইতেই হবে, আমাকে নিতে হবে। এসব থেকে উত্তরণের চেষ্টা আপনাদেরই করতে হবে।

 

জীবনে অনেক স্বীকৃতি, সম্মাননা পেয়েছেন। এই স্বীকৃতি বিষয়টা আপনার কাছে কেমন?

স্বীকৃতি, সম্মাননা অবশ্যই আনন্দের। কোনো সম্মাননা পাওয়ার জন্য তো শিল্পচর্চা নয়। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে গানের জগতে আছি, কখনো মনে করিনি আমাকে সম্মাননা পেতে হবে।

তবে এখন তো এই স্বীকৃতির পেছনেও অনেক কাহিনী থাকে! মানুষের কাছ থেকেই শুনি, মূল্যায়ন এভাবে হয় না। তবে আমি গানের মানুষ, আজীবন গানের মধ্যেই থাকতে চাই।

 

বাংলাদেশের প্রথম ছাত্রী হিসেবে কবিগুরুর নির্মিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শান্তি নিকেতনে পড়াশোনা করেছেন...

তখন আবদুল আহাদ ভাইয়ের সঙ্গে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পড়তেন। তখন এটি আশ্রম ছিল, পরে এটি ইউনিভার্সিটি হয়।

 

নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা কেমন গাইছে?

ভালো-খারাপ তো থাকবেই। তবে, ভালো গাইছে। অনেকেই খুব ট্যালেন্ট এবং তারা মূলধারার গানই করছেন। তবে খুব কমসংখ্যক আছেন যারা এই ধারা থেকে সরে যাচ্ছেন। আর এখন তো শেখানোর অনেকেই আছে।

 

বর্তমানে রবীন্দ্রনাথ কতটা প্রাসঙ্গিক?

এ সময় রবীন্দ্রনাথ একদমই প্রাসঙ্গিক। সব অবস্থায়ই রবীন্দ্রনাথের প্রয়োজন রয়েছে। যেমন ধরা যায় রবীন্দ্রনাথের ‘দিকে দিকে নাগিনীরা ফেলিতেছে বিষাক্ত নিঃশ্বাস, শান্তির ললিত বাণী শোনাইবে ব্যর্থ পরিহাস’ বর্তমান সময় এটা বেশি প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া ‘বরিষ ধরা মাঝে শান্তির বারি’ গানটির মূল তাৎপর্য হলো হে প্রভু তুমি আমাকে শান্ত করে দাও। রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টিকর্ম দুরবস্থা থেকে পরিত্রাণের পথকে আরও সুগম করে তোলে।

 

আপনার কাছে রবীন্দ্রনাথ আসলে কেমন?

তিনি প্রাণের সঙ্গে, সত্তার সঙ্গে মিছে আছেন। তিনি কবিতায়-গানে, গল্প-উপন্যাস-নাটকে, বৈচিত্র্যময় সব রচনায় বাঙালির মেধা, মনন ও চেতনার দ্বারকে উন্মোচন করেছেন। তার রচনার মাধ্যমেই বাঙালি তার জাতিসত্তা সম্পর্কে সচেতন হয়েছে। মোটকথা রবীন্দ্রনাথ বাঙালির অস্তিত্বে বিরাজমান রয়েছেন। নতুন প্রজন্মকে তাকে জানার জন্য বেশি বেশি বই পড়তে হবে।

 

রবীন্দ্রসংগীতের কোনো অ্যালবাম বের করার পরিকল্পনা আছে কি?

এখন তো আর ক্যাসেট, সিডি বের হয় না। তাই কম অ্যালবাম করা হয়। একটা অ্যালবাম করব বলে ভাবছি। আগামীতে একক অ্যালবাম বের করব।

সর্বশেষ খবর