শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঢাকাই ছবির সুদিন ফিরবে যেভাবে

ঢাকাই ছবির সুদিন ফিরবে যেভাবে

প্রযোজক সমিতি স্থবির, যৌথ প্রযোজনার ছবি নির্মাণ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ, কলকাতার ছবি আমদানি ও প্রদর্শনে জটিলতা, ছবির অভাবে সিনেমা হল বন্ধ, স্বল্প বাজেটের স্থানীয় ছবি দর্শক টানতে পারছে না, সিনেমা হলে সরকারি প্রজেক্টর স্থাপনের অগ্রগতি নেই। এমন অনেক কারণে ঢাকাই ছবি এখন চরম দৈন্যদশার কবলে। কীভাবে ঢাকাই ছবির এই দুরবস্থা কাটিয়ে সুদিন ফেরানো যায়? এ বিষয়ে কথা বলেছেন কয়েকজন চলচ্চিত্রকার ও চলচ্চিত্রবোদ্ধা।  তাদের মতামত তুলে ধরেছেন— আলাউদ্দীন মাজিদ

 

অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস

[গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়]

 

চলচ্চিত্র হচ্ছে একটি সৃষ্টিশীল মাধ্যম। সৃষ্টিশীল কর্মে পক্ষ-বিপক্ষ, দলাদলিসহ নানা নেতিবাচক কর্মকাণ্ড শিল্পটিকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। একটি দেশের প্রধান গণমাধ্যম চলচ্চিত্রশিল্পকে এভাবে বিতর্কিত ও অনিশ্চিত করা কারও কাম্য নয়। এর সুদিন ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা।

 

 

অনুপম হায়াৎ

[চলচ্চিত্র গবেষক, সাংবাদিক]

 

প্রযুক্তিগত, নির্মাণগত, প্রতিভাগত ও ঐক্যের সংকট শিল্পটিকে অস্তিত্ব সংকটের মুখে ঠেলে দিয়েছে। চলচ্চিত্র একটি যৌগিক শিল্প। এর পরিবেশও যৌগিক হতে হবে। অব্যবস্থাপনা ও অনৈক্য এই শিল্পের অধঃপতন ডেকে আনছে। এই আত্মঘাতী অবস্থার অবসান ঘটাতে পারলেই শিল্পটির সুদিন ফিরবে।

 

 

ইফতেখার নওশাদ

[চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির, সভাপতি]

 

সিনেমা হল টিকিয়ে রাখতে কনটেন্ট দরকার। যা নেই। বর্তমানে দেশে সিনেমা হলের যে সংখ্যা রয়েছে তাতে এক কোটি টাকা ব্যয় করে ছবি নির্মাণ করলেও লগ্নিকৃত অর্থ তুলে আনা অসম্ভব। মানসম্মত ছবি নির্মাণ করতে হবে। তাহলে  সিনেমা হলের পরিবেশ ফেরাতে এবং  স্থাপনে আগ্রহী হবে মালিকরা।

 

 

সুদীপ্ত কুমার দাস

[চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা]

 

স্থানীয়ভাবে ছবি নির্মাণ কমেছে। চলচ্চিত্র বিনিময়ের ক্ষেত্রে নানা শর্ত আরোপে স্বাভাবিক আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় কম বাজেটের মানহীন ছবি দর্শক  দেখে না। এটি চলচ্চিত্রশিল্পের জন্য নিঃসন্দেহে অশনিসংকেত। তাই বিদেশি ছবি আমদানি ও একসঙ্গে মুক্তির সুযোগ দিতে হবে সরকারকে।

 

 

মিয়া আলাউদ্দীন

[প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা]

 

আগে ছবির অভাব পূরণ করতে হবে। আর ছবি হতে হবে মানসম্মত। সহজ শর্তে বিদেশি ছবি আমদানি করতে দিতে হবে। সিনেমা হল সংস্কারে শর্তহীন ঋণ দিতে হবে। নতুন সিনেমা হল নির্মাণে সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে এবং সিনেমা হলের বিদ্যুৎ বিল বাণিজ্যিক নয়, শিল্পনীতির আওতায় নিতে হবে।

 

 

মুশফিকুর রহমান গুলজার

[চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি]

 

চলচ্চিত্রশিল্প নানা সমস্যায় জর্জরিত। তবে আমি হতাশ নই। সবাই যদি ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে চলচ্চিত্রশিল্পের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ ও আন্তরিকভাবে কাজ করে তাহলে আর কোনো সমস্যা থাকার কথা নয়। প্রযোজক সমিতি সক্রিয় হলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। চলচ্চিত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি আশাবাদী।

 

 

আবদুল আজিজ

[জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার, প্রযোজক]

 

দেশীয় চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে কাজ করছি। অথচ নানা ইস্যু তৈরি করে কাজের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে। এত বছরেও সিনেমা হলে কেউ ডিজিটাল প্রজেক্টর স্থাপন করেনি কেন? আমি আধুনিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করে কী অন্যায় করেছি। আমি যখন মেশিন বসিয়েছি তাহলে সেই খরচ বা ভাড়া আমাকে নিতেই হবে। এখানে মনোপলি ব্যবসার প্রশ্ন আসে কোথা থেকে। আর এখন আমদানিকৃত ছবির মুক্তিতেও বাধার মুখে পড়ে আর্থিক লোকসান গুনতে হচ্ছে। চলচ্চিত্রের উন্নয়নে মানসিকতার উন্নতি ঘটাতে হবে সবার আগে।

সর্বশেষ খবর