সোমবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ

জীবনের নিজস্ব একটি গতি আছে

জীবনের নিজস্ব একটি গতি আছে

অভিনেত্রী ফারজানা ছবি। মিডিয়ায় যাত্রা নাচ শেখার মধ্য দিয়ে। শুধু টেলিভিশনে অভিনয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি তিনি। একই সঙ্গে অভিনয় করেছেন চলচ্চিত্রেও। অভিনয়ের পাশাপাশি লেখালেখিও করছেন সমান তালে। সম্প্রতি বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করছেন এই গুণী অভিনেত্রী। অভিনয় ও সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে কথা ও ছবি তুলেছেন -রাফিয়া আহমেদ

 

বর্তমানে কি নিয়ে ব্যস্ত আছেন?

ধারাবাহিক নাটক করছি বেশ কিছু। কয়েকটা একক নাটকও করেছি। কায়সার আহমেদের পরিচালনায় ‘বকুল ফুল’ ও ফরিদুর হাসানের ‘লাকি থার্টিন’। সম্প্রতি একটা টেলিছবির কাজ করেছি। এই তো অভিনয় নিয়েই ব্যস্ততা। সেই সঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনের পথচলা তো আছেই।

 

একসঙ্গে অভিনয় এবং সংসার জীবন কীভাবে সামলে নিচ্ছেন?

বরাবরই ভারসাম্যর্পূণ জীবন আশা করেছি। আমি আমার জীবনের সবকটা অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে চলতে চাই। জীবনের নিজস্ব একটি গতি আছে আর সেই গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পথ চলতে হয়। জীবন কখনো আমার গতির সঙ্গে তাল মিলাবে না। যেমন তিন দিন একটা নাটকের চরিত্রে কাজ করব, সেই তিন দিন ওই চরিত্রের মধ্যেই ডুবে থাকি। সেই চরিত্র থেকে যখন বেরিয়ে আসি তখন সম্পূর্ণভাবে আমি আমার পরিবারকে সময় দিচ্ছি।

 

নাচ দিয়ে শুরু। কিন্তু নৃত্যশিল্পী না হয়ে অভিনয়শিল্পী কেন হলেন?

প্রতিটি শিল্পীর যাত্রা কোনো না কোনো মাধ্যম দিয়ে শুরু হয়। শুরুটা নাচ দিয়ে হলেও অভিনয়ের প্রতি সব সময় ভালো লাগা কাজ করত। নৃত্যের প্রতি ভালোবাসা আছে কিন্তু অভিনয়ের জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করতে পারছি এবং অভিনয় করতে এসে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন চরিত্র ধারণ করে যে শিক্ষাটি অর্জন করতে পারছি তাতে আমি মুগ্ধ। ব্যক্তি ছবি আজকে যতটা সমৃদ্ধ হয়েছে পুরোটাই অভিনেত্রী ছবির অবদান। 

 

বর্তমান সময়ের নাটক নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কেমন?

প্রশ্নটা মজার। নব্বই দশকের শেষদিকে যখন অভিনয় শুরু করেছিলাম তখনকার সময় নাটকের ভাবনায় ছিল জীবনের ছায়া। প্রতিটি নাটকই সুন্দর একটি বার্তা বহন করত। এক কথায় আমরা যে জীবন বা আদর্শকে দেখতে চাই সেটাই তাতে ফুটে উঠত। আর বর্তমানের নাটকেও যাপিত জীবনকে দেখছি। চারদিকে যা হয় তাই যেন ফুটে উঠছে, তবে সঠিকভাবে সেই গল্পটা তুলে ধরা হচ্ছে না। আমরা অনেক নেতিবাচক দিকও বর্তমান নাটকে দেখছি। এটা একদিক দিয়ে ভালো আবার অন্যদিক দিয়ে মন্দ।

 

এই যে, আপনি বললেন বর্তমান নাটকের গল্পটা সঠিকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে না, এই দুর্বলতাটা কী কারণে বলে মনে করেন?

আসলে এখন সামঞ্জস্যতা কমে গেছে। যে জীবনকে দেখছি এবং যে জীবনকে দেখতে চাই তার মধ্যে পার্থক্য থাকে অনেক। এখনকার নাটকে রিহার্সেল আগের মতো হয় না। বর্তমান অভিনয়শিল্পীদের মাঝে অস্থিরতা কাজ করে। আমাদের সময় আমরা দেখেছি ম্যাকাপ রুমের ভিতরে বসেও সিনিয়র শিল্পী পাণ্ডুলিপি পড়ছেন আর দাগাচ্ছেন। তাছাড়া একটা নাটকের কাজ শুরু করার আগে পাণ্ডুলিপি শিল্পীর হাতে পৌঁছত। সেটা নিয়ে পরিচালক এবং শিল্পীর মাঝে আলোচনা হতো। এখন এই বিষয়গুলো নেই বললেই চলে।

 

শিল্পী হয়ে উঠা কতটা কঠিন?

শিল্পী জীবনটা কঠিন এই কারণে যে, একজন শিল্পীর জীবনে অন্যের প্রভাব বা নিয়ন্ত্রণ যেমন ঠিক নয়, তেমনি শিল্পীরাও অন্য কারও জীবনের নিয়ন্ত্রক হতে পারে না। শিল্পীকে তার নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রক নিজেকেই হতে হয়।

 

আপনার লেখালেখি নিয়ে যদি কিছু বলতেন?

আমার লেখা কিছু ধারাবাহিক নাটক টেলিভিশনে প্রচার হচ্ছে। নতুন কিছু ধারাবাহিকের কাজ করতে যাচ্ছি।

 

শিল্পী হতে রিয়েলিটি শো কতটা জরুরি?

মাত্র কয়েকদিন বা মাসে রিয়েলিটি শো করে সেরা অভিনয়শিল্পী হিসেবে তুলে ধরলেই যে একজন সঠিক শিল্পী বের হয়ে এলো তা কিন্তু নয়। এটা হলো শুরু। আজকে ১৯ বছর পর অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি। শুরুর দিকে নাটক নিয়ে প্রশ্ন করলে কিছুই বলতে পারতাম না।

 

 

সর্বশেষ খবর