‘বাবা জানো, আমাদের সেই ময়না পাখিটা না আজ আমার নাম ধরে ডেকেছে’... একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির বিজ্ঞাপনের জনপ্রিয় সংলাপ এটি। আর এই সংলাপটি যার মুখে শোভা পেয়েছিল সে হলো অভিনয়শিল্পী সুব্রত-দোয়েল দম্পতির শিশুকন্যা দিঘী। পুরো নাম প্রার্থনা ফারদিন দিঘী। চলচ্চিত্র থেকে দূরে সরে এখন কেমন আছে দিঘী। সেই কথাই জানাচ্ছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ
কেমন আছ?
ভালো আছি। এখন পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত আছি। বলতে পারেন সব মিলিয়ে বেশ আছি।
এখন কী পড়ছ?
ইন্টারমিডিয়েট ফার্স্ট ইয়ারে পড়ছি।
সবশেষ কখন ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলে?
সবশেষ ২০১২ সালে পরিচালক মনতাজুর রহমান আকবর আঙ্কেলের ‘ছোট্ট সংসার’ চলচ্চিত্রে শিশু শিল্পী হিসেবে
অভিনয় করি।
প্রায় ৮ বছরের বিরতি, আর অভিনয়ে ফিরবে না?
হ্যাঁ, ফিরব, তবে এখনই নয়, পড়াশোনা শেষ করে তারপরই অভিনয়ে ফিরতে চাই।
তবে, এখন নিশ্চয়ই আর শিশুশিল্পী নয়?
হা... হা...হা... না আমি কি এখন আর সেই ছোট্ট দিঘী আছি, এবার নায়িকা হয়েই ফিরব। আর বাবা যেভাবে বলবেন ঠিক সেভাবেই ফিরব। নায়িকারূপে বড়পর্দায় হাজির হওয়ার আগে শিশুশিল্পীর ইমেজ ভাঙতেই বাবার পরামর্শে গত প্রায় আটটি বছর অভিনয় থেকে দূরে রয়েছি। বাবা বলেন, ছোটবেলায় যে ইমেজটা ছিল তা অ্যাভয়েড করার দরকার আছে- তা না হলে তো হয় না। স্ক্রিনে থাকলে তো শিশু ইমেজটা কাটবে না। শিশুশিল্পী হিসেবে পুরস্কারও পেয়েছি। তারপর একটা গ্যাপ না দিলে বড় হয়ে ফেরাটা সুখকর হবে না। নায়িকা হয়ে ফিরতে ভালো ছবি চাই। কারণ, শিশুশিল্পী হিসেবে তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছি। এই অর্জন ধরে রাখতে মানসম্মত ছবিতে অভিনয়ের বিকল্প নেই। অভিনয়ের সঙ্গে পড়াশোনাও এগিয়ে যেতে চাই সমানতালে।
তোমার মায়ের স্বপ্ন ছিল তুমি ডাক্তার হবে, সে স্বপ্নের কথা শুনতে চাই
হ্যাঁ, মায়ের স্বপ্ন ছিল আমি ডাক্তার হব। সেই স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার জন্য চলচ্চিত্রকে আপাতত বিদায় জানিয়েছি। মা-বাবা দুজনই যেহেতু শিল্পী, আমিও ছোটবেলায় অভিনয় করেছি তাই অভিনয় এবং মায়ের স্বপ্ন পূরণ মানে ডাক্তার হওয়া দুটোই করতে চাই। এ জন্য সবার দোয়াও চাই।
অভিনয়ে ফেরার বিষয়ে বাবার আগ্রহ কেমন?
বাবার কথায়, ‘আমি আর দিঘীর মা দুজনেই চলচ্চিত্রের মানুষ। দিঘীর মা গত হয়েছেন ৭ বছরেরও বেশি। আর দিঘী তো শিশুশিল্পী হিসেবে অনেক ছবিতেই অভিনয় করেছে। আমি জানি ওর ভিতরে অভিনয়ের তেজটা কত। ও সেটা ভিতরে লালন করে। আমি মনে করি সে নিজেকে আরও প্রস্তুত করুক তারপর না হয় একটা কিছু করুক। গ্ল্যামার জগৎটা মানুষকে খুব আকৃষ্ট করে।’
বাবার কথার সঙ্গে তুমি একমত?
হ্যাঁ, বাবা বলেন, নায়িকা মানেই তো গ্ল্যামার। একটা সময় যখন ভিতরে স্টার ভাবটা চলে আসে তখন কিন্তু সাধারণ হতে অনেক কষ্ট হয়। আমি এমন একটা জায়গায় ছিলাম অভিনয় দিয়ে, ছোট্ট বয়সে সেটা সত্যিই অনেক গর্বের। বাবার কথা হলো এখন তো তাকে সবাই চেনেন দিঘীর বাবা হিসেবে। আর যে জায়গাটায় আমি অভিনয় শেষ করেছিলাম তা যেন আরও অতিক্রম করতে পারি, সেজন্য নিজেকে তৈরি করতে হবে।
লেখাপড়াটা ঠিকমতো শেষ করতে পারলে নিজেকে ঠিকমতো তৈরি করতে পারব।
বাবা বলেন, আমি শুধু দেখিয়ে দিতে পারব এটা ভালো রাস্তা, এটা খারাপ রাস্তা। সে নিজে যখন জানতে পারবে ভালো রাস্তা দিয়ে যাওয়া ভালো, খারাপ রাস্তা দিয়ে যাওয়া ভালো না তখন তা নির্ধারণ করে নেবে সে কোন পথে যাবে, আমার বলতে হবে না। এ জন্য তার কাজ করা বন্ধ করে রেখেছি। আগে সে বুঝুক নিজের জন্য কোনটা ভালো কোনটা মন্দ। তারপর সে নিজেই নিজের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’ বাবার কথাগুলো মেনেই আমি এগোচ্ছি।