শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

তারকাদের বদলে যাওয়ার যত ঘটনা

বলিউড দুনিয়া

তারকাদের বদলে যাওয়ার যত ঘটনা

কথা ছিল এমনটি হবে, শেষ পর্যন্ত হলো অন্যরকম। মানে বদলে গেল চিত্র। এতে ব্যর্থতার চেয়ে সফলতার পাল্লাই হলো ভারী। বলিউডের ছবির অন্তরালে ছড়িয়ে আছে এমন হরেক রকম মজার তথ্য। তারই কয়েকটি তুলে ধরা হলো। এসব সম্পর্কে কজনইবা খবর রাখেন? জানিয়ে দেওয়া যাক বলিউডের সেসব অদ্ভুত তথ্য। ছবির সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তারকাদেরও বদলে যাওয়ার গল্প তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

অমিতাভ ছিলেন শোলের গাব্বার সিং

রমেশ সিপ্পির বিখ্যাত ছবি ‘শোলে’। প্রথমে ছবির সেই দুর্ধর্ষ গাব্বার সিং চরিত্রে অভিনয় করার জন্য নির্মাতা নির্বাচিত করেছিলেন অমিতাভ বচ্চনকে। কিন্তু তিনি এ চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হলেন না। এ ছবির জয় চরিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল ধর্মেন্দ্রর। অমিতাভ আর ধর্মেন্দ্রর মধ্য ছিল চমৎকার সম্পর্ক। শেষ পর্যন্ত ধর্মেন্দ্রর অনুরোধে নির্মাতা সিপ্পি অমিতাভকে জয়, ধর্মেন্দ্রকে বীরু আর আমজাদ খানকে গাব্বার সিং চরিত্রে কাস্ট করলেন।

 

মুন্না ভাই চরিত্রে আমির খান

রাজকুমার হিরানি পরিচালিত সুপার হিট ‘মুন্না ভাই এমবিবিএস’ ছবিতে মুন্না ভাই চরিত্রে প্রথমে নির্মাতা কাস্ট করতে চেয়েছিলেন আমির খানকে। কিন্তু স্ক্রিপ্ট পড়ে আমির খানের চরিত্রটি মনে ধরল না। শেষ পর্যন্ত নির্মাতা অনেক ভেবেচিন্তে চরিত্রটির জন্য নির্বাচিত করলেন সঞ্জয় দত্তকে। চরিত্রটিতে অসাধারণ অভিনয় করে মুন্না ভাই খ্যাতি পেয়ে গেলেন সঞ্জয় দত্ত।

 

নার্গিসকে দেখে নার্ভাস সুনীল দত্ত

চলচ্চিত্রে আসার আগে সুনীল দত্ত ছিলেন রেডিও সিলোনের আর জে। একদিন তাঁর প্রিয় অভিনেত্রী নার্গিসের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে সেই আর জের কী হয়েছিল জানেন? নার্গিসের সামনে বসে একটি শব্দও উচ্চারণ করতে পারেননি। গোটা সাক্ষাৎকারই ভুল হয়ে যায়। পরবর্তীতে কিন্তু সুনীল আর নার্গিস ‘মাদার ইন্ডিয়া’ ছবিতে কাজ করতে গিয়ে ঘটনাচক্রে প্রেম আর সাতপাকে বাঁধা পড়েন।

 

টম ক্রুজের পরিবর্তে শাহরুখ

যশ চোপড়ার ইতিহাস গড়া সফল ছবি দিলওয়ালে ‘দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’র নায়ক হওয়ার কথা ছিল প্রথমে হলিউডের নায়ক টম ক্রুজের। নির্মাতা তেমনটিই ভেবেছিলেন। আর নায়িকা হিসেবে কাস্ট করতে চেয়েছিলেন কারিনা কাপুরকে। দুজনই ‘না’ করে দিলে পরে হতাশ নির্মাতা এই দুই চরিত্রে কাস্ট করলেন শাহরুখ খান আর কাজলকে। দুজনের মধুর জুটি ছবিটির সফলতার ইতিহাস গড়ে দিল।

 

অনিল কাপুর থাকতেন রাজ কাপুরের গ্যারেজে

অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মুম্বাই আসার পরে অনিল কাপুরকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। ছবির কাজ তো দূরে থাক কোনো কাজই পাচ্ছিলেন না। পরিবার নিয়ে প্রায় পথে বসেছিলেন। এক সময় প্রখ্যাত বলিউড অভিনেতা রাজ কাপুরের গ্যারেজে পরিবার নিয়ে থাকতেন তিনি। অনেক কষ্টের পর ১৯৮০ সালে রমেশ সিপ্পির ‘শক্তি’ ছবিতে মাত্র দুটি দৃশ্যে অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি। এরপরই ‘ওহ সাতদিন’ ছবিতে অসাধারণ অভিনয় করে বলিউডে স্থায়ী আসন গড়ে নেন তিনি।

 

এক ছবিতে দুই ইন্টারভেল

রাজ কাপুর পরিচালিত ‘মেরা নাম জোকার’-এর দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় পাঁচ ঘণ্টা। এটিই বলিউডের একমাত্র হিন্দি ছবি যেটিতে দুটি ইন্টারভেল ছিল। বিশাল বাজেটের এ ছবিটি বক্স অফিসে করুণভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে এবং রাজ কাপুর মারাত্মক অর্থকষ্টে পড়েন। অথচ রাজ কাপুরের কথায় এটিই তাঁর জীবনের সেরা ছবি।

 

জাভেদের অপছন্দ আমজাদ খান

গলার স্বর পছন্দ হয়নি বলে আমজাদ খানকে ‘শোলে’ ছবি থেকে প্রায় বাদ দিয়েছিলেন ছবির চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতার। জাভেদ আখতারের কথায় নির্মাতা সিপ্পি পরে খল অভিনেতা ডেনির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি রাজি না হওয়ায় আমজাদ খানকে নেন নির্মাতা। তাঁর এই নির্বাচন বিফলে যায়নি। ছবিতে আমজাদ খানের কণ্ঠের সংলাপ ‘কিতনে আদমি থে...’ এখনো সুপারহিট।

 

জিতেন্দ্র-জয়ার বদলে মিঠুন-পদ্মিনী

কে বাপ্পি নির্মিত সুপারহিট ‘পেয়ার ঝুকতা নেহি’ ছবিতে নির্মাতা কাস্ট করতে চেয়েছিলেন অভিনেতা জিতেন্দ্র ও জয়া প্রদাকে। কিন্তু তাঁরা এতে কাজ করতে রাজি না হওয়ায় মিঠুন চক্রবর্তী আর পদ্মিনী কোলাপুরিকে নেওয়া হয়। ছবিতে মিঠুনের অসাধারণ অভিনয় ছিল তাঁর চলচ্চিত্র জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।

 

অমিতাভ-শশী, কে বড়?

যশ চোপড়ার একমাত্র ‘সিলসিলা’ ছবিতেই শশী কাপুর অভিনয় করেছিলেন অমিতাভ বচ্চনের বড় ভাইয়ের চরিত্রে। এটিই হচ্ছে একমাত্র ছবি যেখানে বয়স-ভূমিকা সামঞ্জস্য রক্ষা করা হয়েছে। অমিতাভ বচ্চন-শশী কাপুরের কথা বলা হচ্ছে। শশী আসলেই বয়সে অমিতাভের বড়। কিন্তু ‘সিলসিলা’ ছাড়া অন্য সব ছবিতে অমিতাভ বড় ভাই আর শশী ছোট ভাইয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

 

ধর্মেন্দ্রর বদলে অমিতাভ

প্রকাশ মেহেরার সুপারহিট ছবি ‘জঞ্জির’-এ নির্মাতা নায়ক হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন ধর্মেন্দ্রকে। কিন্তু তিনি এ ছবিতে কাজ করতে রাজি না হওয়ায় তখনকার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া ভাদুরীর অনুরোধে ধর্মেন্দ্রর চরিত্রে অমিতাভ বচ্চনকে কাস্ট করেন নির্মাতা।

অমিতাভ তখন ফ্লপ অভিনেতা। এ ছবির মধ্য দিয়ে অমিতাভ বচ্চনের  ফিল্মি ক্যারিয়ার ঘুরে যায়। তিনি বনে যান মেগাস্টার।

সর্বশেষ খবর