বিশ্বজুড়ে এখন চলছে করোনা মহামারীর তা-ব। গত বছরের মার্চ মাস থেকে বাংলাদেশেও শুরু হয় করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু। সাধারণ মানুষের মতো এই করোনা তা-বে সংক্রমিত হয়েছেন দেশীয় শোবিজ অঙ্গনের বহু তারকা ও মানুষ। অনেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও না-ফেরার দেশে চলে গেছেন বেশ কয়েকজন। যাদের আমরা করোনায় হারিয়েছি বেদনাবিধুর তাদের কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ
সারাহ বেগম কবরী
অভিনেত্রী
শোবিজ জগতে করোনার ভয়াবহ ধাক্কা আসে গত ১৭ এপ্রিল। ওই দিন করোনা মহামারী কেড়ে নেয় চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী মিষ্টি মেয়ে খ্যাত সারাহ বেগম কবরীকে। ৫ এপ্রিল তাঁর শরীরে করোনা ধরা পড়ে। ৭ এপ্রিল থেকে তিনি ছিলেন লাইফ সাপোর্টে। অবশেষে করোনার দাপটে শনিবার মৃত্যুর কাছে হার মানতে বাধ্য হন তিনি।
আলী যাকের
অভিনেতা
চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বছরের ২৭ নভেম্বর ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে মৃত্যু হয় আলী যাকেরের। এর আগে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। পরে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
কে এস ফিরোজ
অভিনেতা
গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান ছোট ও বড় পর্দার গুণী অভিনেতা কে এস ফিরোজ। এর আগে ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী
সংগীতশিল্পী
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক, লোক সংগীতশিল্পী ও গবেষক ইন্দ্রমোহন রাজবংশী গত ৭ এপ্রিল মারা যান। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি রেখে গেছেন অসংখ্য কালজয়ী গান।
মিতা হক
সংগীতশিল্পী
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১১ এপ্রিল মারা গেলেন রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী মিতা হক। তিনি জাতীয় রবীন্দ্র সম্মিলন, ছায়ানটসহ বেশ কিছু সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক পান এই সংগীতশিল্পী।
সাদেক বাচ্চু
অভিনেতা
গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান জনপ্রিয় অভিনেতা সাদেক বাচ্চু। এই অভিনেতা এর আগে হৃদরোগ ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। করোনায় আক্রান্ত হলে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এস এম মহসীন
অভিনেতা
প্রখ্যাত মঞ্চ ও টেলিভিশন অভিনেতা এস এম মহসীন করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৮ এপ্রিল বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্য বিভাগ অনুষদের সদস্য, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ছিলেন।
ফরিদ আহমেদ
সংগীত পরিচালক
করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১৩ এপ্রিল মারা গেছেন দেশের বরেণ্য সংগীত পরিচালক ফরিদ আহমেদ। অনেক কালজয়ী গানের সুরকার ফরিদ আহমেদ। ২০১৭ সালে সংগীত পরিচালক হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি।
শফিউজ্জামান লোদী
টিভি ব্যক্তিত্ব
বিশিষ্ট টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপক, চলচ্চিত্র সংসদকর্মী, সাংবাদিক, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সংগঠক শফিউজ্জামান খান লোদী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান গত ১৮ এপ্রিল।
সাজেদুল আওয়াল
চলচ্চিত্র পরিচালক
বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা, গবেষক, লেখক, শিক্ষক ও সমালোচক ড. সাজেদুল আওয়াল গত ১৫ এপ্রিল করোনা ও নানা জটিলতার কারণে মারা যান। চলতি বছরই তাঁর নির্মিত ‘ছিটকিনি’ ছবিটি মুক্তি পায়।
রানা হামিদ
চলচ্চিত্রকার
চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিচালক, অভিনেতা ও এফডিসির সাবেক কর্মকর্তা রানা হামিদ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান গত বছরের ১০ মে। এর আগে তিনি কিডনি, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে ভুগছিলেন।
অন্য যারা
স্বপন সিদ্দিকী
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় নাট্য নির্মাতা ও অভিনেতা স্বপন সিদ্দিকীর।
মিনু মমতাজ
২২ সেপ্টেম্বর মারা যান গুণী অভিনেত্রী মিনু মমতাজ।
আফতাব খান টুলু
চিত্রপরিচালক আফতাব খান টুলু মারা যান গত বছরের ২৮ জুলাই।
আমিনুল ইসলাম মিন্টু
৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রসম্পাদক আমিনুল ইসলাম মিন্টু মারা গেছেন গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে। তিনিও করোনায় আক্রান্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে তার পরিবার।