ঢাকাই চলচ্চিত্রের সুদর্শন নায়ক জিয়াউল রোশান। ২০১৬ সালে ‘রক্ত’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে অভিষেক হয় রোশানের। ক্যারিয়ারের ছয় বছরের মাথায় এসে বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে তাঁর। একের পর এক করছেন চলচ্চিত্র ও ওয়েবফিল্ম। সম্প্রতি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রিশান চরিত্রে অভিনয় করা রোশানের ‘অপারেশন সুন্দরবন’। তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
নতুন সিনেমার প্রচারণায় নাকি অন্য ব্যস্ততায় রয়েছেন আজ?
ডাবিং ছিল, দিইনি। কারণ শরীর ভালো নেই। তবে দীপনদা বেশ কয়েকবার ফোন দিয়েছেন। কারণ, মিরপুরের সনি স্কয়ারে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ দেখার প্ল্যান করেছেন সবাই। সেখানে যেতে পারি। ‘অপারেশন সুন্দরবন’ সিনেমার প্রচারণা কিন্তু থেমে নেই। চলছেই। সিনেমাটি মুক্তির আগে যেভাবে প্রচারণায় ছিলাম, মুক্তির পর কিন্তু আরও জোরেশোরে প্রচারণা করছি আমরা সবাই। বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়া, অনলাইন, ভিজ্যুয়াল মিডিয়াসহ হলে হলে গিয়ে প্রচারণা করছি। কিছু ব্যতিক্রমী ইভেন্টেও অংশ নিচ্ছি আমিসহ টিমের সবাই।
বাঘসহ সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জনমনে সচেতনতা তৈরিতে বিশেষ প্রচারণায়ও সম্প্রতি অংশ নিয়েছেন দেখলাম...
হুমম... শিশুদের সঙ্গে ভালো একটি সময় কাটিয়েছি। সুন্দরবনের বাঘ এলো সিনেমা ভ্রমণে-এমন সুন্দর উদ্যোগে কিছু শিশু, নির্মাতা দীপনদা, সিয়াম, মনোজ, সামিনা, দীপুদাসহ পুরো টিম আমার সঙ্গে ছিল। শুটিংয়ের সময় কিন্তু আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক ছিলাম, যাতে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি না হয়। প্রাণীর প্রতি আমার অসামান্য ভালোবাসা আছে। এই ভালোবাসা যেন সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে, সেটাই কাম্য।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রিশান চরিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
নৌবাহিনী থেকে আসা একজন অফিসার রিশান। তিনি স্পেশাল নিয়োগ পেয়ে র্যাবে আসেন। এরপর সুন্দরবনের জলদস্যু মুক্ত করতে অপারেশনে অংশ নেন। চরিত্রটি নিয়ে আমার অনেক ভালোবাসা রয়েছে। আমাদের কমান্ডার রিয়াজ ভাই। আমরা তাঁর নেতৃত্বে বিভিন্ন অভিযানে অংশগ্রহণ করি। জলদস্যু নির্মূল করতে সহযোদ্ধা সিয়ামের সঙ্গে আমি অভিযান চালাই। এই চরিত্রে কিছু দিক রয়েছে। একদিকে যেমন দায়িত্ববোধ, অন্যদিকে ব্যক্তিগত জীবন। ড. অদিতির সঙ্গে সম্পর্ক, ভালোবাসা থাকলেও রিশানকে নিজস্ব দায়িত্ব সম্পর্কে সদা ব্যস্ত থাকতে হয়। অনেকেই মনে করেছিলেন এটি র্যাবের ডকুমেন্টারি। আমি বলতে চাই, এটি সিনেমাটিক ফ্লেভারে ভরপুর। শতভাগ কমার্শিয়াল ফিল্ম। এরমধ্যে যেমন র্যাবের লাইফ, জলদস্যু নির্মূল অভিযান, অ্যাকশন, উত্থান-পতন রয়েছে তেমনি রয়েছে ব্যক্তিগত জীবন, প্রেম, ভালোবাসা, পরিবারসহ অনেক কিছু। সিনেমাটি বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে। অনেকে বিশ্বাসই করতে পারছেন না যে, এটি বাংলাদেশি সিনেমা। যাঁরা দেখেছেন তাঁরা জানেন। কিন্তু যাঁরা দেখেননি তাঁদের বলব, হলে এসে সিনেমাটি দেখবেন। আশা করছি, ১০০% ইনজয় করবেন।
সিনেমাটি দেখে অনেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। আমার নাম ধরে অনেকে চিৎকার করছেন। অ্যাকশন দৃশ্য দেখে হাততালি-বাহবা দিচ্ছেন। আমার ভয়েস ও চরিত্র, অভিনয় নিয়ে কথা বলছেন-এটা সত্যিই ভালোবাসার
রিশান চরিত্রটি নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। টের পেয়েছেন কি?
ভালোবাসার জায়গা থেকে যদি বলি, তিনটি শোর হল রিপোর্ট ও দর্শকদের অগণিত ভালোবাসায় এগিয়ে অপারেশন সুন্দরবন। আর আমার চরিত্র রিশান নিয়ে দর্শকদের মাঝে দারুণ সাড়া পাচ্ছি। বিভিন্ন গ্রুপে, ফেসবুকে, মেসেজ দিয়ে, ফোন করে ভালোবাসা জানাচ্ছে দর্শক। এটি বিশাল অর্জন আমার জন্য। হলে গিয়ে দেখেছি, সিনেমাটি দেখে অনেকে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। আমার নাম ধরে অনেকে চিৎকার করছেন। অ্যাকশন দৃশ্য দেখে হাততালি-বাহবা দিচ্ছেন। আমার ভয়েজ ও চরিত্র, অভিনয় নিয়ে কথা বলছেন- এটা সত্যিই ভালোবাসার।
অনেক সিনেমাই করেছেন। সেগুলোর আপডেট কী?
সৈকত নাসিরের ‘পাপ’ শেষ হয়েছে। আরও শেষ হয়েছে ‘করেপারেট’, ‘রিভেঞ্জ’, ‘প্রেম পুরাণ’, ‘বিট্রে’র অল্প কিছু কাজ বাকি। জামদানি শেষের পথে। নতুন সিনেমা সৈকত নাসিরের ‘লন্ডন লাভ’ করেছি। বরাবরই আমার অ্যাকশন দৃশ্য খুবই পছন্দের। আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। এই সিনেমাটি করে তাই অনেক আরাম পেয়েছি।
নতুন সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন?
তিনটি সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হব পরের মাসেই। তবে যেহেতু সাইনিং করিনি এখনো, তাই বলতে চাচ্ছি না। দেশের দুই-তিনটা সিনেমা আছে। এশিয়ান টিভির একটি প্রজেক্ট, জাকারিয়া মাসুদের নির্মাণে একটি ওয়েব সিরিজও করছি।
শুনেছি বড় একটা চমক দেখাবেন। সেটি কী?
কলকাতার বিগ বাজেটের একটি সিনেমা করছি। খুবই বড় পরিসরে। এখনো মুখ খুলতে পারছি না এ বিষয়ে। সাইনিং হলে জানাব নিজেই। আমি নাম ভূমিকায় অভিনয় করছি এটিতে। আপাতত এটি নিয়ে চমকই থাকুক, কি বলেন?
প্রেমিকার সঙ্গে বাগদান হয়েছে। বিয়ে করবেন কবে?
আগে ওর পড়াশোনা শেষ হোক। এখন লাস্ট সেমিস্টারে। জব করতে চায়। আমার কাছে সময় চেয়েছে বছরখানেক। এরপর না হয় দুই পরিবার বসে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করব।
বিয়ে করলে কি জনপ্রিয়তা কমে যায়?
সেটা কখনই মনে করি না। ভক্তদের যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা তো আসলে মন থেকেই ভালোবাসেন। তারকার কাজ ও ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হন ভক্তরা। যাঁরা বিয়ে করেন, তাঁরা দুজন মিলে আরও শক্তিশালী হন। এমনকি স্ত্রীদের প্রতি যেসব তারকার রেসপেক্ট থাকে, স্বামীদের প্রতি যেসব তারকার রেসপেক্ট থাকে, তাঁদের ভক্তরা আরও বেশি খুশি হন।